জারগো পার্টিকে সহায়তা দিচ্ছে সেনাবাহিনী

0

নানিয়াচর॥ নানিয়াচর জোনের সেনারা নব্য মুখোশ বাহিনীর সন্ত্রাসী কাজে পূর্ণ সহায়তা দিচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে। তবে নব্য মুখোশরা এলাকায় সাধারণ জনগণের কাছে জারগো পার্টি ও দেরোতপুজ্যা নামে অধিক পরিচিত।

জানা যায়, গত ১৫ নভেম্বর রাতে সেনাবাহিনীর গাড়িতে করে নব্য মুখোশ বাহিনী বা জারগো পার্টির সর্দার তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মা ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের খাগড়াছড়ি থেকে নানিয়াচরে নিয়ে আসা হয়। সেদিনই তারা সেনা জোনের কাছাকাছি দক্ষিণ ফিরিঙ্গি পাড়ায় (ছ কুড়ি বিল) অবস্থান নেয়।

পরদিন এখান থেকে তারা সেনাবাহিনীর সহায়তায় নানিয়াচর সদরের টিএন্ডটি, পাতাছড়ি, গুল্যাছড়ি, কুগুরমারা, ভাঙ্গামুরো, বেতছড়িদোর ইত্যাদি এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাস চালাতে থাকে। তবে এলাকার জনগণের ব্যাপক প্রতিবাদের কারণে বর্তমানে তারা জেএসএস – এম. এন. লারমা গ্রুপের নেতা শক্তিমান চাকমাদের গ্রামের পাশে গুল্যাছড়িতে অবস্থান করছে।

এ গ্রামটি হলো চেঙ্গী নদীর পশ্চিম ধারে, সেটলার পাড়ার পাশে। ওপারে অর্থাৎ চেঙ্গী নদীর পূর্ব পাড়ে হলো নানিয়াচর জোন।

সেনাবাহিনীর দালাল হিসেবে পরিচিত শক্তিমান চাকমাকে জারগো পার্টির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক বলে মনে করা হয়। বিশ^স্ত সূত্রে জানা যায়, দেরোতপুজ্যাদের সর্দার বর্মার সাথে মোবাইলে তার নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। সে প্রায় প্রতিদিন দেরোতপুজ্যাদেরকে ছাগল ও শুকরের মাংস পাঠিয়ে থাকে।

নানিয়াচর জোনের সেনারা যে জারগো পার্টির সন্ত্রাসীদের সহায়তা দিচ্ছে তা তাদের আসার পরদিনই সবার কাছে স্পষ্ট হয়।

ঐ দিন সকাল ৯টার দিকে বর্মার নেতৃত্বে জারগোরা পাতাছড়িতে সশস্ত্র মহড়া দেয়ার পর তাদের আস্তানা ছ’কুড়ি বিলে ফেরার সময় পাকা রাস্তায় সেনাবাহিনীর একটি টহল দলের মুখোমুখি হয়। সেনারা ছিল একটি পিক আপে। তারা সন্ত্রাসীদের ওপর আক্রমন করা দূরে থাক, তারা তাদের গাড়িকে দাঁড়িয়ে রেখে সন্ত্রাসী জারগোদেরকে নিরাপদে রাস্তা পার হতে দেয়। এ সময় টিএ্যান্ডটি বাজারে আসা লোকজন সবিষ্ময়ে এ ‘অলৌকিক’ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে।

এরপর বর্মা ছ’কুড়ি বিলে টিএন্ডটি বাজারের দোকানদারদের ডেকে অস্ত্র প্রদর্শন করে বিভিন্ন হুমকি দেয়। এ সময় সেনারা সেখান থেকে মাত্র ৫০-৬০ গজ দূরে রাস্তায় টহল দিয়ে তাদেরকে প্রটেকশনের ব্যবস্থা করে।

জারগো পার্টির সন্ত্রাসীরা অর্থাৎ দেরোতপুজ্যারা বিভিন্ন গ্রামে হানা দেয়ার সময়ও নানিয়াচর জোনের সেনারা তাদের নিজেরা টহল দিয়ে তাদের নিরাপত্তা দিয়ে থাকে।

গত ১৮ নভেম্বর জারগোরা গুল্যাছড়ি গ্রামে হানা দেয়ার সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিরাপত্তার জন্য কয়েকটি টিমে ভাগ হয়ে টিএন্ডটি, পাতাছড়ি ও বড়পুল পাড়ায় সারা দিন টহল দেয়।

২৫ নভেম্বর দেরোতপুজ্যাদের সর্দার বর্মা তার দলবল নিয়ে নান্যচর বাজারের পশ্চিমে কুকুরমারায় হানা দেয়। সেখানে সে গ্রামের কয়েক জন মুরুব্বীকে নিয়ে মিটিঙের নামে তামাশা করে। এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা কয়েক ভাগে ভাগ হয়ে পাতাছড়ি, কাট্টলতুলী ও বড়পুল পাড়ায় টহল দেয়।

২৬ নভেম্বরও জারগোরা কুকুরমারায় অবস্থান করে। সেনা সদস্যরাও তাদের পালিত মুখোশ বাহিনীর সাথে বুঝাপড়ার ভিত্তিতে একই স্পটে টহল দেয়।

২৯ নভেম্বর রোজ বুধবার ভোর ৬.১৫ ঘটিকার সময়ে জারগোদের একটি দল নান্যাচর টিএ্যান্ডটি এলাকায় ১ নং সাবেক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মি. সুপণ চাকমার (সুশীল জীবন) বাড়ি ঘেরাও করে এবং তার স্ত্রীর কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। জারগোরা এরপর বর্মার নেতৃত্বে দুুপুরের খাবার পর সেনাবাহিনীর প্রহরায় দক্ষিণ ফিরিঙ্গী পাড়া থেকে বড়পুল পাড়ায় যায়। সেখানে তারা রাত পর্যন্ত অবস্থান করে। সেনা সদস্যরা এ সময় বড়পুল পাড়া, পাতাছড়ি ও শনখোলা পাড়ায় টহল জোরদার করে।
——————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More