জেএসএস সংস্কারবাদীরা সেনাবাহিনীর কথাগুলোই বলে বেড়াচ্ছে : জনৈক শিক্ষক
দীঘিনালা॥ জেএসএস সংস্কারবাদীরা সেনাবাহিনীর পক্ষ হয়ে কাজ করছে এবং তাদের কথাগুলোই ফেরী করছে বলে মন্তব্য করেছেন বাবুছড়া হাইস্কুলের এক শিক্ষক।
গতকাল শুক্রবার দীঘিনালার কয়েকটি হাইস্কুলের শিক্ষকের সাথে মিটিঙে সংস্কারবাদীদের দেয়া বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি উক্ত মন্তব্য করেন।
জানা যায় গতকাল সংস্কারবাদীরা তাদের দীঘিনালা বটতলা অফিসে বিকেল দু’টায় উক্ত মিটিং ডাকে। তবে মিটিঙে কোন শিক্ষককে কোন কথা বলতে দেয়া হয়নি। কেবল সংস্কারবাদীদের পক্ষ থেকে যুগল ও নরেশ কথা বলেন।
শুরুতেই তারা জানিয়ে দেন, ‘কেবল আমরাই কথা বলবো, তোমাদেরকে কোন কথা বলতে দেয়া হবে না।’
উক্ত দুই সংস্কারবাদী ছাত্ররা যাতে মিটিং মিছিলে যোগ না দেয় সে ব্যাপারে শিক্ষকদের হুঁশিয়ার করে দেন। ইতিপূর্বে আর্মিরা বিভিন্ন সময় ছাত্রদেরকে ইউপিডিএফ আয়োজিত মিছিল সমাবেশে না যেতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিলেন।
সংস্কারবাদী যুগল ও নরেশ বলেন, ‘ইউপিডিএফ ছাত্রদেরকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, মিছিলে গিয়ে ছাত্রদের কী লাভ।’
দুই সংস্কারবাদী কেন তারা জেএসএস- সন্তু লারমার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা সংগঠন গঠন করেছেন তারও ব্যাখ্যা দেন এবং বলেন তারা আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি ও চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি থেকে এক চুলও সরে যাবেন না।
উক্ত মিটিঙে উপস্থিত এক শিক্ষক সিএইচটি নিউজ ডটকমের কাছে নিরাপত্তাজনিত কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কি আর করা, দিনকাল খারাপ। ইচ্ছা না থাকলেও বাধ্য হয়ে নিজের গাটের পয়সা খরচ করে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফেলে “সুন্দুরো-বুন্দুরো” (আবোল-তাবোল) কথা শুনে আসতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কি অবুঝ শিশু নাকি? কে কি করছে তা আমরা বুঝি। এমনকি অতি নিরীহ গোবেচারা জনগণও সব বুঝে।’
অন্য এক শিক্ষক সংস্কারবাদীদেরকে আর্মিদের সুয়ে দিয়্যা **র’ (লেলিয়ে দেয়া **র) বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘তারা তো আর্মিদের পক্ষ হয়েই কাজ করছে, আর্মিদের সব কাজগুলো তারা করে দিচ্ছে, আর্মিদের কথাগুলো বলে দিচ্ছে।’
মিটিঙে উপস্থিত অপর এক শিক্ষক বলেন, আসলে সংস্কারবাদীদেরকে রাজাকার আখ্যায়িত করা একেবারে যথার্থ হয়েছে। সত্যিই রাজাকাররা ৭১ সালে যা করেছিল, সংস্কারবাদীরাও তাই করছে।
তবে তারা (সংস্কারবাদীরা) আর্মিদের উপর নির্ভর করে বেশী দিন টিকতে পারবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তেঁতুলতলায় হুমকি
ইতিপূর্বে ২২ সেপ্টেম্বর সংস্কারবাদী তুজিম বাবুছড়া ইউনিয়নের মেম্বার ও চেয়ারম্যানদেরকে খাগড়াছড়ি শহরের তেঁতুলতলায় ডেকে হুমকি দেন।
তিনি বলেন, ‘ইউপিডিএফ সামনে নির্বাচন করবে, (সংসদীয় নির্বাচন) তখন তাদের সাথে ঘুরলে তোমাদেরকে গুলি করে মারা হবে।’
এ সময় দুইজন বন্দুকধারী সন্ত্রাসী মিটিঙ স্থলে ঘুরে ঘুরে পাহারা দেয় বলে মিটিঙে উপস্থিত এক মেম্বার জানান।
তিনি বলেন, আর্মিরা প্রতিদিন ‘সন্ত্রাসী’, ‘চাঁদাবাজ’, ‘অবৈধ অস্ত্র’ বলে মুখে ফেনা তোলে, কিন্তু তাদের নাকের ডগায় যে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে দিন দুপুরে ঘুরে বেড়ায় তারা কি দেখে না? ‘আসলে তারাই তো অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের পুষছে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি দীঘিনালায় অস্ত্রসহ সংস্কারবাদীদের ধরার পরও লোকজনের সামনে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া এবং ঈদের সময় সংস্কারবাদী সন্ত্রাসীদের সাথে একই গাড়িতে একসাথে ঘুরে বেড়ানোর ঘটনারও উল্লেখ করেন।
——————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।