আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে
ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি পিসিপি’র শ্রদ্ধা নিবেদন
ঢাকা: ‘জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি সংখ্যালঘু জাতিসমূহের ভাষা রক্ষা ও বিকাশের পূর্বশর্ত’ এই স্লোগানে একুশে প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে বৃহত্তর পার্বত্য পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটি।
পিসিপি‘র কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক রতন স্মৃতি চাকমা ও কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক সুনীল ত্রিপুরার নেতৃত্বে ২০-৩০ জনের একটি টিম পলাশি মোড় হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কারিগরী সমিতি এর কার্যালয় থেকে দীর্ঘ সারি অপেক্ষার পর ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টা ১৫মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে পৌঁছেন। এরপর একুশের প্রথম প্রহর রাত ১টা ৪৫ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পিসিপি’র নেতৃবৃন্দ।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর পিসিপি‘র কেন্দ্রীয় সদস্য রিয়েল ত্রিপুরা সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা জানেন আমরা ২০১০ সাল থেকে শহীদ মিনারে ফুল দেয়া থেকে বিরত ছিলাম। কারণ সরকার আমাদের জাতিসত্তাগুলোর নিজস্ব মাতৃভাষা দিয়ে ন্যুনতম শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করেনি। কিন্তু সরকার এই বছর ৫টি জাতিসত্তার মাতৃভাষায় প্রাক-প্রাথমিক লেভেল পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে। তাই সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে আমরা এই বছর থেকে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। যদিও কেবল ৫টি জাতিসত্তার মাতৃভাষায় প্রাক-প্রাথমিক লেভেল পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়।
তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সকল জাতিসত্তার নিজ নিজ মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা চালুসহ পিসিপি‘র শিক্ষা সংক্রান্ত ৫ দফা পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবি করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর ২০০০ সাল থেকে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ সকল জাতিসত্তার নিজস্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা চালুর দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু সরকার পিসিপি’র এসব দাবি বাস্তবায়ন না করায় ২০১০ সালে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শহীদ মিনারে ফুল দেয়া থেকে বিরত থাকার কর্মসূচি ঘোষণা করে। এ বছর (২০১৭ সাল) থেকে সরকার প্রাক-প্রাথমিক লেভেল পর্যন্ত ৫টি জাতিসত্তার মাতৃভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করায় পিসিপি শহীদ মিনারে ফুল দেয়া থেকে বিরত থাকার পূর্বে ঘোষিত কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয় এবং এ বছর থেকে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের সম্মান জানানোর ঘোষণা দেয়।
——————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।