রাঙামাটির বগাছড়িতে সেটলার হামলার এক বছর

ঢাকায় তিন সংগঠনের প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবাদ

0

সিএইচটি নিউজ ডটকম
P1100065ঢাকা: কাল ১৬ ডিসেম্বর রাঙামাটির বগাছড়িতে সেটলার হামলার এক বছর পূর্ণ হবে। দিবসটি সামনে রেখে তিন গণতান্ত্রিক সংগঠন (পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম) ঢাকার শাহবাগে আজ ১৫ ডিসেম্বর বিকালে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত বগাছড়িবাসীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রদীপ প্রজ্জ¦লন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাইকেল চাকমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিপুল চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য ক্রইজনা মারমা। এছাড়াও সংপ্রকাশ জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন হাজং স্টুডেন্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক তমাল হাজং।

P1100093এতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিজয় দিবসের দিন ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাঙামাটির বুড়িঘাট ইউনিয়নের বগাছড়িতে সেনা সহায়তায় পাহাড়ি জনগণের ওপর সেটলারদের হামলা ছিলো পূর্ব পরিকল্পিত ও প্রতীকীভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। এ দিন স্থানীয় সেনা ক্যাম্পের জওয়ানরা গুলি ছুঁড়ে, যা ছিল সেটলারদের জন্য সংকেত বিশেষ। স্বাভাবিকভাবে গুলির শব্দে পাহাড়িরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়। সেনা জওয়ানরা এক পর্যায়ে নিজেরা পেট্রোল ঢেলে পাহাড়ি বসতিতে অগ্নিসংযোগ করে হামলার সূত্রপাত ঘটায়। তার পরে পরেই হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটলাররা। সুরিদাসপাড়া, বগাছড়ি ও নবীন তালুকদারপাড়ার ৫০টির অধিক বসত বাড়ি, ১টি ক্লাবঘর ও ৭টি দোকানঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় সেটলাররা। পরিকল্পনা মত সেটলাররা নিকটস্থ বৌদ্ধবিহারে হামলা চালিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুকে মারধর ও মূল্যবান দানীয় সামগ্রীসহ টাকা-পয়সা লুট করে নেয়। দুর্বৃত্তরা বিহারেও আগুন দেয়ার চেষ্টা করেছিল। ঘটনাস্থল থেকে দূরবর্তী গ্রামও হামলা থেকে বাদ যায় নি। সেনা সহায়তায় দুর্বৃত্তরা দূরের পাহাড়ি বসতিতেও হামলা চালায়। রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি সড়কে পথচারিদের ওপর চড়াও হয়ে কয়েকজনকে জখম করেছিল দুর্বৃত্তরা।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিজয় দিবসের মত রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনে পরিকল্পিতভাবে এই ধরণের ঘটনা ঘটিয়ে পাহাড়িদের সর্বস্বান্ত করে স্থানীয় সেনা কর্মকর্তারা কী ফায়দা হাসিল করতে চেয়েছিলো, তা উদঘাটন করা সচেতন দেশবাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সমাবেশে বক্তারা এও মন্তব্য করেন, বিজয় দিবসে কালিমা লেপনের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মধ্যকার পাকিস্তানপন্থী অংশটি নিজেদের চেহারা প্রকাশ করে ফেলেছিল। সরকার পাকিস্তানের দোসরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেও বিজয় দিবসে কালিমা লেপনকারীদের ব্যাপারে এখনও কোন পদক্ষেপও নেয় নি।

P11000799
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সরকার বগাছড়ি হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়াসহ ঘরবাড়ি তুলে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো তা কথার কথাই রয়ে গেছে। এভাবে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে পাহাড়ি জনগণকে ভুলিয়ে রাখার কোন মানে হয় না। এ সরকার সংখ্যালঘু বান্ধব নয়। পাহাড়ি জনগণের প্রতি অবহেলা ও বৈষম্য জারি রেখে দীর্ঘ দিন দমিয়ে রাখা যাবে না।
সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বগাছড়ি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানান এবং ভুমি বেদখল বন্ধসহ বেদখলকৃত ভুমি ফেরত দেয়ার দাবি জানান। এছাড়া বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা কর্তৃত্ব তুলে নেয়ার দাবি জানান এবং ১১ দফা সরকারী নির্দেশনা বাতিল করার দাবি জানান।
——————

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More