ঢাকায় যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

0

সিএইচটিনিউজ.কম

ঢাকায় যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংহতি সমাবশে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ
ঢাকায় যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংহতি সমাবশে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ

 ঢাকা: বর্ষবরণে সংঘটিত যৌন নিপীড়নের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার ও বিচার কর, ছাত্র ইউনিয়নের কর্মসূচীতে হামলাকারী পুলিশদের বিচারের দাবিতে গত ১৭ মে বিকাল সাড়ে ৫টায়  প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যে যৌথ উদ্যোগে ঢাকার জাতীয় জাদুঘরে সম্মুখে এক সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সামাবেশে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, লেখক, শিক্ষক, সাংবাদিক সহ সংহতি প্রকাশ করেন। এতে পাহাড়ের গণতান্ত্রিক সংগঠন ইউপিডিএফ এবং পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেতারা উপস্থিত থেকে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে ইউপিডিএফ ঢাকা অঞ্চলের সংগঠক ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি মাইকেল চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমা এবং পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দপ্তর সম্পাদক বিপুল চাকমা উপস্থিত থেকে সংহতি বক্তব্য রাখেন।

মাইকেল চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, সাধারণত নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার হয় দুর্বলরা, যারা সমাজের প্রান্তিক, হত দরিদ্র, অনগ্রসর সংখ্যালঘু জাতি তারাই এর শিকার হয়। নির্যাতনের ধরন নারীদের ওপর নির্যাতন যা ধর্ষণ সবচে’ নিকৃষ্ট ঘৃণ্য–পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরা ’৭১ সালে ঘটিয়েছিল। এবারের পহেলা বৈশাখের আগেও ঢাকায় নারীর সম্ভ্রমহানি হয়েছে। দূর অরণ্যে কোথাও নয়, খোদ রাজধানী ঢাকায় গুরুত্বপূর্ণ এলাকা স্বাধীনতা সংগ্রামের পাদপীঠ তথা প্রতিবাদ প্রতিরোধের কেন্দ্র টিএসসি’র সন্নিকটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের উপস্থিতিতে তা সংঘটিত হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিশেষ অঞ্চল, এটি প্রান্তিক। সবচে’ অবহেলিত। জাতিগত বৈষম্য নিপীড়নের শিকার। রাষ্ট্রীয় নীতিই হচ্ছে এখানকার জাতিসমূহকে উচ্ছেদ করে বিতাড়িত করা, যা ‘মানুষ নয়, মাটি চাই নীতি’ হিসেবে চিহ্নিত। এ নীতি কৌশলের পোশাকী নাম হচ্ছে ‘অপারেশন উত্তরণ’।

সেনাবাহিনী, রাষ্ট্রীয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীই এখানে যাবতীয় অপরাধ মানবতা বিরোধী অপতৎপরতার সাথে জড়িত। টাকার বিনিময়ে নারায়নগঞ্জের র‌্যাবের সাত খুনের ঘটনা আমরা জানি, কিন্তু সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে কী করছে, তা বেশীর ভাগ লোকের জানা নেই। আমাদের প্রতিনিয়তই অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হচ্ছে, যা প্রায় সময় সংবাদ মাধ্যমে খবরই হয় না। গেল ১২ এপ্রিল অর্থাৎ পহেলা বৈশাখের দু’দিন আগে আমাদের সবচে’ বড় সামাজিক উৎসব বৈসাবী’ র‌্যালিতে সেনাবাহিনী লাঠিপেটা করে, টিয়ারগ্যাস ছুঁড়ে র‌্যালি ভন্ডুল করে দেয়। ধরপাকড় করে, এখনও আটককৃত পিসিপি নেতাদের ছেড়ে দেয় নি, তা রমনা বটমূলে বোমা হামলার ঘটনা মনে করিয়ে দেয়। এখানে জঙ্গীদের দায়ী করা হচ্ছে, যারা এ দেশের সংস্কৃতি ঐতিহ্য স্বীকার করে না। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত সেনাবাহিনী ভিন্ন সংস্কৃতি সহ্য করতে পারছে না।

ঢাকায় যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংহতি সমাবশে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ
ঢাকায় যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংহতি সমাবশে বক্তব্য রাখছেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমা

গতকালও ক্রিকেট খেলা দেখতে যাওয়া স্কুল ছাত্রদের সেনাবাহিনী কোন কারণ ছাড়াই রাস্তায় লাঠিপেটা করে ধরে নিয়েছে।

জরুরি অবস্থার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেনাবাহিনীর সাথে ছাত্র-শিক্ষকের যে বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটেছিল, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকার কারণে প্রতিনিয়ত এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।

হিল উইমেন্স ফেডারনের সভাপতি নিরূপা চাকমা বলনে, জাহাঙ্গীরনগর ভার্সিটিতে ধর্ষকের সেন্সুরি উৎযাপন, ইডেন কলেজে ছাত্রীদের মন্ত্রীদের নিকট উপঢৌকন প্রদানসহ বিভিন্ন লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে, আরও অনেক ঘটনা আমরা জানি না। খোদ শিক্ষিকাও নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ নন, যা আগেও কল্পনাও করা যেত না। আর কোথায় নারীর নিরাপত্তা??? জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতার হাতে শিক্ষিকা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। বহুল আলোচিত কল্পনা চাকমা নিজ বাড়িতে চিহ্নিত সেনা লেফটেন্যান্ট ফেরদৌসের হাতে অপহৃত হন, তার কোন বিচার নেই।ক্ষমতাশালীরাই অপহরণ, ধর্ষণ, ডাকাতি ইত্যাদি অপরাধের সাথে জড়িত।

—————-
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More