ঢাকায়  ‘সাভার প্রবাসী শ্রমজীবী ফ্রন্ট’ নামে পাহাড়ি শ্রমিক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ         

0

IMG20170331104504

ঢাকা: ঢাকায় সাভারস্থ প্রবাসী গার্মেন্ট শ্রমজীবীদের এক সম্মেলনের মাধ্যমে ‘সাভার প্রবাসী শ্রমজীবী ফ্রন্ট‘ নামে পাহাড়িদের মধ্যেকার একটি শ্রমিক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে।

“ছুটি, ন্যায্য বেতন-ভাতা না দিয়ে রক্ত নিংড়ে মুনাফা লুটতে দেবনা” এই স্লোগানে এবং “দেশী-বিদেশী সকল কারখানা সংস্থায় ঐতিহ্যবাহী ‘বৈসাবি‘সহ উৎস ও পুজা উপলক্ষে ছুটি-ভাতা ও মাস শেষে বেতন নিশ্চিতকরণের দাবিতে” আজ শুক্রবার (৩১ মার্চ ২০১৭) রাজধানীর তোপখানাস্থ নির্মল সেন হল রুমে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সর্বসম্মতিক্রমে সুখীময় চাকমাকে আহবায়ক ও দীপন চাকমাকে সদস্য সচিব নির্বাচিত করে উক্ত সংগঠনটি গঠন করা হয়।

সুখীময় চাকমার সভাপতিত্বে ও কনক জ্যোতি চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের ঢাকা অঞ্চলের সংগঠক মিল্টন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিনয়ন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য রিপন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাংস্কৃতিক সম্পাদক কইঞ্জনা মারমা, সাভারের পাহাড়ি যুব সমাজের প্রতিনিধি সুনীল চাকমা, জগদীশ চাকমা ও ডেবিড চাকমা, কাঁচপুরের পাহাড়ি শ্রমিক প্রতিনিধি মিন্টু চাকমা এবং আদমজী প্রতিনিধি শান্তি চাকমা।

সম্মেলনে বক্তরা বলেন, নিজেদের ঐক্য এবং ন্যায্য অধিকার আদায়ে ভূমিকা রাখতে পারে একমাত্র সংগঠন। সংগঠন ছাড়া কোন সমাজ সঠিকভাবে চলতে পারে না। এই উপলব্দি থেকে এই সংগঠন গঠন করা হচ্ছে।

IMG20170331161052

বক্তারা বলেন, শ্রমিকদের যথাপোযুক্ত বেতন দেয়া হয় না। সরকার কর্তৃক ঘোষিত ৫,৩০০ টাকা নূন্যতম মজুরী অধিকাংশ কারখানায় বাস্তবায়ন হয়নি।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ৮ ঘন্টা কাজের বিধান থাকলেও মালিকরা জোরপূর্বক ১২-১৩ ঘন্টা ডিউটি করা হয়। কোন শ্রমিক অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে অপরগতা প্রকাশ করলে তাকে বরখাস্ত করা হয়। অমানুষিক পরিশ্রম করা সত্ত্বেও  শ্রমিকদের কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত গালিগালাজ শুনতে হয়, যা সভ্য সমাজের কল্পনার বাইরে। নারী শ্রমিকদেরও অকথ্য ভাষায় গালি দেয়া হয়, অশোভন আঁচরণ করা হয়। গভীর রাত পর্য্ন্ত নারী শ্রমিকদের কাজ করানো হয়ে থাকে, যা তাদের নিরাপত্তার জন্য বড়ই হুমকি।

বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের গুরত্বপূর্ণ সামাজিক ও ধর্মীয় দিবসে সরকারি ছুটি থাকলেও এখানকার গার্মেন্টে ছুটি দেয়া হয় না। এমনকি পাহাড়িদের সর্বজনীন সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ সামাজিক উৎসব বৈসাবিতেও ছুটি দেয়া হয় না।

সম্মেলনে বক্তারা পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী সার্বজনীন বৈসাবি উৎসবে ছুটি দেয়ার জন্য কারখানার মালিকদের কাছে জোর দাবি জানান। এছাড়া বক্তারা শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরী প্রদান, নারী শ্রমিকদের প্রতি অশোভন আঁচরণ, অতিরিক্ত খাটানো বন্ধের দাবি জানান।

সম্মেলন শেষ হওয়ার পর র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি তোপখানা রোড থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড় ঘুরে প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়।

নবগঠিত সাভার প্রবাসী শ্রমজীবী ফ্রন্ট-এর সদস্য সচিব দীপন চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
———————-

সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More