ঢাকায় আট ছাত্র সংগঠনের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

0

ঢাকা।। কুয়েট শিক্ষার্থী অন্তুরায় পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ফি বাতিল ও নামে বেনামে ফি বৃদ্ধি বন্ধ, ইউজিসির কৌশলপত্র বাতিলের দাবিতে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদসহ প্রগতিশীল আট ছাত্র সংগঠন। সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী ১৮ এপ্রিল ২০২২ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অপরাজেয় বাংলায় ছাত্র সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১২ এপ্রিল ২০২২) দুপর সাড়ে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মধুর ক্যান্টিনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এই কর্মসূচি ডাক দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যর পাঠ করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়া এসময় আট ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নাজির আমিন চৌধূরী জয়, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মইনদ্দিন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সোহেল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সভাপতি দীপা মল্লিক, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদে সাংগঠনিক সম্পাদক অমল ত্রিপুরা, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনে প্রচার সম্পাদক সোহবত শোভন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্য বলেন, কুয়েট শিক্ষার্থী অন্তু রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘উন্নয়ন ফি’ পরিশোধ করতে না পেরে কীভাবে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার পথ বেছে নিতে বাধ্য হল। যেকোনো দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তৈরিই করা হয় এতটুকু নিশ্চিত করতে যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার নির্বিশেষে পড়াশোনা সম্পন্ন করার সুযোগ পান। করোনা মহামারীর ফলে দেশে নতুন করে প্রায় দুই কোটি লোক গরিব হয়েছে, সে হিসেবে শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন অর্থনৈতিক কার্যক্রম করার সুযোগ আরও হ্রাস পেয়েছে, প্রাথমিক থেকে স্নাতক পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটা ক্ষেত্রে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, এই প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উচিত ছিল যথাসম্ভব ফি মওকুফ করে দেওয়া, রাষ্ট্রের কাজ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাড়তি প্রণোদনা দেওয়া। কিন্তু তা না করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্রেফ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মতো আচরণ করছে। এসব কারণে কুয়েটের উন্নয়ন ফি নিয়ে বহু প্রতিবেদন অন্তুর মৃত্যুর পর আমাদের সামনে আসছে।

তারা আরো উল্লেখ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় যেই বাড়তি ফি আদায় করে তা কোন কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজন হয়, তা আদৌ খরচ করা হয় কি না, এই বিষয়ে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা নিজেরাই ওয়াকিফহাল না। যখন শিক্ষার্থীরা এই কাঠামোর অন্যায়গুলো দেখে ক্ষুব্ধ হন, আন্দোলনে নামেন, তখনই রাষ্ট্রযন্ত্র তাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে, মিথ্যা তথ্য সামনে এনে, তাদের বিভাজিত করে আন্দোলনকে রোখার কাজ হাতে নেয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অপসারণের সংগ্রাম হোক বা হালের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন হোক, আমরা প্রতিটা ক্ষেত্রেই স্পষ্ট দেখেছি কীভাবে রাষ্ট্র ছাত্রদের বিরুদ্ধে গিয়ে অনাচারী ও লুটেরাদের পক্ষ অবলম্বন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্রেফ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার যেই নীল-নক্সা বহু দিন ধরেই ইউজিসি করে আসছে, আমরা এখন তার পরিণতি দেখতে শুরু করেছি। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তো বহু দিন ধরেই নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের আওতার বাইরে ছিল, এখন ক্রমাগত তথাকথিত পাবলিক প্রতিষ্ঠানগুলোও আর পাবলিকের আওতাভুক্ত থাকছে না। কুয়েটের এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটার পরই আমরা জানতে পারলাম যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন টানা তৃতীয় বছরের মতো ভর্তি ফর্মের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত যেই ফর্মের মূল্য ছিল ৩৫০ টাকা,সেই ফর্মের মূল্য এই বছর বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০০০ টাকা! তারা অবিলম্বে এসব ফি বাতিলের দাবি জানান।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More