তাইন্দংয়ে সংঘটিত ঘটনা তদন্তে গণতদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে তাইন্দং পরিদর্শক দল
ঢাকা:খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নে কয়েকটিপাহাড়ি গ্রামে সংঘটিত হামলার ঘটনা তদন্তে সেপ্টেম্বরের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে গণতদন্ত কমিশন গঠন সহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছে তাইন্দং পরিদর্শক দল। আজ ২১ আগস্ট বুধবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জনগণের সকল অংশের সাথে কথা বলে পরিদর্শক দল নিশ্চিত হয়েছে যে, ৩ আগস্টের হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক। হামলাকারীরা ৩১ জুলাই হতে ৩ আগস্ট পর্যন্ত পাহাড়িদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ প্রচার করে হামলার ক্ষেত্র তৈরী করেছিল। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় বিজিবি কমান্ডার সকলেই এসব জানতেন। এই হামলার মূল্য উদ্দেশ্য হল সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চল হতে জাতিসত্তার জনগণকে উচ্ছেদ করে ভূমি দখল করা।
সংবাদ সম্মেলনে গত ৩ আগস্টের এই বর্বরোচিত ঘটনার আগে এই বছরের ফেব্রুয়ারি ও জুন মাসে গোমতি-তাইন্দং এলাকায় পাহাড়িদের গ্রামে সেটেলার বাঙালিরা হামলা চালালে পাহাড়ি জনগণের আতংক দূর করতে ও তাদের নিরাপত্তায় গত ৮ জুলাই পাহাড়ি বাঙালিদের ভেতর ৭ দফা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় বলেও উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, পার্বত্য অঞ্চলে জমির উপর পাহাড়িদের বংশপরম্পরা প্রথাগত অধিকার কেড়ে নিয়ে গত ৩৩ বছরে সেখানে সমতল থেকে লক্ষ লক্ষ বাঙালিদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে সরকারিভাবে নিয়ে গিয়ে যেভাবে পুনর্বাসন করা হয়েছে তা থেকে সেখানে এক কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠি গড়ে উঠেছে। শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামেই নয়, সারাদেশে জাতিসত্তার জনগণকে ভূমি থেকে উচ্ছেদে এই গোষ্ঠিটি শ্রেণীগতভাবে সংগঠিত।
সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে বলা হয়, প্রচলিত সরকারি নির্দেশের বেড়াজালে আটকে না থেকে সরকারের উচিত হবে ক্ষতিগ্রস্তদের সত্যিকারের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
এ ঘটনার পর ঢাকা থেকে সাংবাদিক-আইনজীবী-মানবাধিকার কর্মী-পেশাজীবী-রাজনীতিক সমন্বয়ে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিদর্শক দল গত ১৬ ও ১৭ আগস্ট দুইদিন তাইন্দং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। এই দলের সমন্বয়ক হিসেবে ছিলেন ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান। অন্যান্য সদস্যরা হলেন, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী সালীম সামাদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ডাঃ ফয়জুল হাকিম, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাইকেল চাকমা, দৈনিক স্বাধীনমতের সিটি এডিটর বেলায়েত হোসেন, দি নিউ নেশনের মোঃ জসীম, প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা,সংবাদ সংস্থা ইউএনবি’র স্টাফ করস্পন্ডেন্ট একেএম ফয়সল রহমান, ল্যাম্পপোষ্টের প্রিন্স আহাম্মাদ, হিল ওয়াচ হিউম্যান রাইটস ফোরামের অংগ্য মারমা প্রমুখ।