ত্রিপুরার গণ্ডাছড়ায় জুম্ম পরিবারের ‘আশ্রয় গ্রহণ’
সিএইচটিনিউজ.কম
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গণ্ডাছড়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের নাড়েইছড়ি থেকে ২৯ পরিবার জুম্ম আশ্রয় নিয়েছে বলে অল ইন্ডিয়া রেডিও বেলোনিয়ার খবরে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার সকালে প্রচারিত খবরে এ কথা জানানো হয়। তবে কী কারণে জুম্ম পরিবারগুলো সেখানে আশ্রয় নিয়েছে উক্ত খবরে তা বলা হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২১ এপ্রিল নাড়েইছড়ি হাতছাড়া হওয়ার পর জনসংহতি সমিতির সন্তু গ্রুপ নাড়েইছড়ির কয়েকটি গ্রামের লোকজনকে তাদের সাথে ত্রিপুরা সীমান্তের দিকে নিয়ে যায়।
সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার সময় এলাকাবাসীদেরকে গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার ও দোকানপাট বন্ধ রাখার লিখিত নির্দেশ দেয়। নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে বলে হুমকী দেয়া হয়।
২৪ এপ্রিল বিভিন্ন জনকে লেখা চিঠিতে সন্তু গ্র“পের জনৈক কমান্ডার এই বলে নির্দেশ দেয় যে, “জরুরী ভিত্তিতে অত্র নাড়াইছড়ি বাজার[এর] দোকানদার ও বাজার সংলগ্ন গ্রামবাসী[দেরকে] অতিসত্ত্বর অন্য কোথাও চলে যাওয়ার নির্দেশ করা হচ্ছে। এবং দোকানপা[ট] সম্পূর্ণ বন্ধ করে বাজার ছেড়ে চলে যাওয়ার জরুরী নির্দেশ করা হলো।”
একই চিঠিতে হুমকী দিয়ে বলা হয়, “যদি কোন কারণে বাজার বন্ধ করে বাজার ছেড়ে না যান তাহলে পরবর্তীতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
এছাড়া ইউপিডিএফের ডাকা মিটিঙে উপস্থিত না থাকার নির্দেশও চিঠিতে দেয়া হয়। এতে বলা হয়, “উল্লেখ থাকে যে, ইউপিডিএফরা ‘মেটিং’ আমন্ত্রণ করেছে। কোন ব্যক্তি সেই ‘মেটিং’ এ অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এবং সম্পূর্ণ নিষেধ করা গেল।’
সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ২১ এপ্রিল নাড়েইছড়ি থেকে চলে যাওয়ার সময় দেওয়ান পাড়া, থুলিছড়া, দজর-হোগেয়্যাতলি ও চোদ্দেংছড়া গ্রামের বেশ কয়েক পরিবারকে জোর করে তাদের সাথে নিয়ে যায়।
এরপর যে সব পরিবার অবশিষ্ট ছিল তাদেরকেও গত ২৬ মে জোর করে ত্রিপুরা সীমান্তের দিকে নিয়ে যায়। এ সময় তারা কয়েক রাউণ্ড ফাঁকা আওয়াজ করে গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
উচ্ছেদ হওয়া এই পরিবারগুলোকেই সন্তু গ্রুপ ত্রিপুরার গণ্ডাছড়ায় নিয়ে গেছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাড়েইছড়ির এক দোকানদার সিএইচটিনিউজ.কমকে জানিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীরা ৩ মে নাড়েইছড়ি বাজার পুড়িয়ে দেয় ও বাজার বন্ধ করে দেয়।
নাড়েইছড়ি বাজারের দোকানদাররা মালিক সবাই পাহাড়ি। বাজার পুড়ে দেয়ায় ও বাজার বন্ধ থাকায় তারা ব্যাপক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন বলে তিনি জানান।
বাজার বন্ধ থাকায় নাড়েইছড়ির সাধারণ লোকজনও চরম খাদ্য সংকটে ভুগছেন।
——————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।