দিঘীনালার মেরুং-এ সেটলার বাঙালি কর্তৃক পাহাড়িদের জায়গা বেদখল অব্যাহত

0

দিঘীনালা প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ি জেলার দিঘীনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের ২৯ নং ছোট মেরুং মৌজায় গত সেপ্টেম্বর ২০১০ থেকে সেটলার বাঙালি কর্তৃক পাহাড়িদের বন্দোবস্তিকৃত জায়গা বেদখল করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে প্রায় ১৮ একরের মতো পাহাড়িদের জায়গা সেটলার বাঙালিরা বেদখল করেছে বলে এলাকাবাসী পাহাড়িরা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বেদখলকৃত জায়গা মুক্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বরাবরে আবেদন জানানো হয়েছে। গত ৯ অক্টোবর ২০১০ প্রতিমন্ত্রীর বরাবরে পাঠানো উক্ত আবেদন পত্রে তারা বলেছেন, গত সেপ্টেম্বর ২০১০ সালের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রায় চল্লিশ বছর পূর্বে বন্দোবস্তীকৃত ও শতবর্ষ পূর্ব হতে ভোগ দখলীয় পাহাড় সেটলাররা জোরপূর্বক বেদখল করছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়নবোর্ড কর্তৃক সৃজিত রাবার বাগান, কলা বাগান সহ অন্যান্য ফলের গাছ কেটে সেটলার বাঙালিরা নতুনভাবে বিভিন্ন গাছের চারা রোপন করছে এবং নতুনভাবে বাড়ি নির্মাণ করছে।

এ বিষয়ে ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যান, চংড়াছড়ি জোন কমান্ডার, মেরুং-এর পুলিশের আইসি, ইউপি চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগের উপজেলা সভাপতি এবং জেলা প্রশাসকের বরাবরে লিখিত ও মৌখিক আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।ভূমি বেদখলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টি করা হলে ১৯৮৬ সালের গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটানো হবে বলে সেটলার বাঙালিদের হুমকির ফলে তারা জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে উক্ত আবেদনপত্রে উল্লেখ করেছেন।

ছোট মেরুং-এর পূর্ণচন্দ্র কার্বারী পাড়ার হেম বিকাশ চাকমার ৫ একর, জগতজ্যোতি চাকমার ৩ একর, বাজেন্দ্র চাকমার ২ একর, বিন্দু চাকমার ৪ একর, সুমতি রঞ্জন চাকমার ২ একর, ইনন্দ চাকমার ২ একর মোট ১৮ একর রেকর্ডীয় জায়গা ইতিমধ্যে সেটলাররা বেদখল করে ফেলেছে।

মো: ইউসুপ, পিতা-অজ্ঞাত, মো: আলী আহম্মদ, পিতা-কপিল উদ্দিন, মো: শফিকুল ইসলাম, পিতা-অজ্ঞাত, মো: রফিক, পিতা-মৃত. সুয়ামিয়া, মো: শফিকুল ইসলাম, পিতা-অজ্ঞাত, মো: মোশারফ, পিতা-অজ্ঞাত, মো: ইসমাইল হোসেন, পিতা-ঈশাক কাজী, মো: মুজিবর, পিতা-মহর আলী(মিস্ত্রী), মো: মুজিবর(২), পিতা-অজ্ঞাত, সর্বসাং- ছোট মেরুং বাজার কর্তৃক উপরোক্ত ১৮ একর জায়গা বেদখল করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ১৯৮৬ সালের দিকে মেরুং এলাকার অধিকাংশ চাষযোগ্য জমি সেটলার কর্তৃক বেদখল করা হয়েছিল। ফলে পাহাড়িরা শরণার্থী হয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চুক্তির পর পাহাড়িরা ভারত থেকে ফিরে আসলেও বেদখলকৃত জায়গা তারা এখনো ফিরে পায়নি। বর্তমানে আবারো একই প্রক্রিয়ায় পাহাড়িদের জায়গা-জমি বেদখল করায় পাহাড়িরা আবারো উচ্ছেদ আতঙ্কে রয়েছে।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More