দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে আদিবাসী কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার-৩
দিনাজপুর ।। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে এক আদিবাসী কিশোরীকে(১৭) সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত শনিবার (৩০ জানুয়ারি) উপজেলার পৌর শহরের বাউপুকুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে রবিবার রাতে পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তিন জনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- উপজেলার ঘুঘুরা (ভোতরা পাড়া) গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে নৈশ প্রহরী লাবু মিয়া (২৮), একই গ্রামের আহাম্মদ আলীর ছেলে রাজমিস্ত্রি আশরাফুল ইসলাম (৩৫) এবং ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার বাউপুকুর গ্রামের বেল্লাল হোসেনের ছেলে রাজমিস্ত্রি ওমর ফারুক (২১)।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঘোড়াঘাট উপজেলার পৌর শহরের বাউপুকুর গ্রামের এক আদিবাসী কিশোরীর (১৭) রাজু নামে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাঝে মাঝেই ফোনে যোগাযোগ হতো রাজুর সঙ্গে। কিন্তু কোনোভাবে তাদের প্রেমের সম্পর্কের কথা লাবু নামে এক যুবক জানতে পেরে কৌশলে কিশোরীর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে। পরে সে কিশোরীকে ফোন করে রাজু পরিচয় দিয়ে একাধিকবার কথা বলে। গত শনিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৩টার সময় কিশোরীকে বাড়ির পাশে আব্দুর রহমানের লিচু বাগানে তাকে দেখা করতে ডাকে। ছদ্মবেশী প্রেমিক লাবুর কথা অনুযায়ী বাগানে গিয়ে সে প্রেমিক রাজুর পরিবর্তে অন্য এক যুবককে দেখে চিৎকার করে এবং দৌঁড়ে বাড়িতে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় লাবুর সঙ্গে বাগানে অবস্থান নেওয়া দুই সহযোগী ওমর ফারুক এবং আশরাফুল তাকে আটকে মুখ চেপে ধরে। পরে লিচু বাগানে রাতভর পালাক্রমে ওই তিনজন কিশোরীকে ধর্ষণ করে বাগানে ফেলে রেখে চলে যায়।
কিশোরীর পরিবার জানায়, এই তিন ধর্ষণকারী তাদের বাড়ির পাশের লিচু বাগানে গাঁজা সেবন করতে আসত। রাতের আঁধারে তার মেয়েকে ধর্ষণ করে ওই তিন ধর্ষক। তারা বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করেছিল। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘরে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে মা চিন্তিত হয়ে পড়ে। অনেক খোঁজাখুজির একপর্যায়ে বাড়ির পাশের লিচুর বাগানে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে মেয়ের মুখে পুরো ঘটনা শুনে তিনি মেয়েকে নিয়ে থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেন।
ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিন বলেন, রবিবার সন্ধ্যায় ভিকটিমকে নিয়ে তার মা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর রাতে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে। এ ঘটনার বেশকিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
আসামিদের গতকাল দুপুরে দিনাজপুরের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।