দীঘিনালায় বিজিবি’র মামলায় তিন মৃত ব্যক্তিও আসামি!
সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ির দীঘিনালার বাবুছড়ার যত্নমোহন কার্বারী পাড়ায় গত ১০ জুন পাহাড়ি গ্রামবাসীদের ওপর বিজিবি-পুলিশের হামলার ঘটনার পর বিজিবি’র দায়ের করা মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে(এফআইআর) উল্লেখিত ১১১জন অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজন মৃত ব্যক্তির নামও রয়েছে। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন দীঘিনালা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান চন্দ্র রঞ্জন চাকমা ও সংশ্লিষ্ট গ্রামবাসীরা।
ঘটনার পরেরদিন ৫১বিজিবি’র সুবেদার মেজর মোঃ গোলাম রসুল ভূঁইয়ার দায়ের করা দীঘিনালা থানার ০২/১৬ নং মামলার এফআইআর-এ উল্লেখ করা ১১১জন অভিযুক্তদের মধ্যে ৬৪জন পুরুষ ও ৪৭জন নারী রয়েছে। তাদের মধ্যে ৯৪নং ক্রমিকে রয়েছে শান্তি রানী চাকমা, স্বামী- কালাধন চাকমা নামে এক মৃত নারী। যিনি গত বছর(২০১৩) মারা গেছেন বলে জানান কার্বারী সন্তোষ কুমার চাকমা। ৩০নং ক্রমিকে রয়েছে পিদিয়া চাকমা, পিতা- প্রিবেশ চাকমা। তিনি মারা গেছেন ১৯৬৮ সালে এবং ৩২নং ক্রমিকে দেখা যায় ললিত চাকমা পিতা-উত্তয়াকান্ত চাকমা নামে আরেক মৃত ব্যক্তির নাম। তিনি ভারতে শরণার্থী থাকাকালীন মারা গেছেন বলে জানান তাঁর জামাতা জুম্ম শরনার্থী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষিত চাকমা বকুল। অভিযুক্তদের মধ্যে অধিকাংশই নাবালক-নাবালিকা বলে অভিযোগ করেছেন মামলার অভিযুক্ত গোপা চাকমা ও মৃণাল কান্তি চাকমা।
মামলায় মৃত ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভূক্ত করার বিষয়ে জানতে চাইলে ৫১বিজিবি’র উপ-অধিনায়ক মেজর কামাল কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। কোন মন্তব্য না করে যাচাই করে দেখতে হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১০জুন বাবুছড়ার যত্নমোহন কার্বারী পাড়ায় গ্রামের পাহাড়ি নারীরা নিজ নিজ জায়গায় কলা গাছের চারা রোপন করতে গেলে বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা বাধা দেয়। এক পর্যায়ে কথা কাটাকাটি হলে বিজিবি’র সদস্যরা নারীদের উপর চড়াও হয়ে হামলা করে। এতে বিজিবি ও পুলিশ গ্রামবাসীর উপর ১০রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে ও লাঠিসোটা ও বন্দুকের বাট দিয়ে মারধর করে। এ ঘটনায় ৩জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ১৮নারী-পুরুষ আহত হয়, যাদের অধিকাংশই নারী।
এ ঘটনায় সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগ এনে বিজিবি উক্ত মামলাটি দায়ের করে। এতে আরো অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামী করা হয়। এ মামলায় বর্তমানে ৩ জন নারীসহ ৭ জন গ্রামবাসী জেলে আটক রয়েছেন।
———-
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।