দীঘিনালায় বিভিন্ন সংগঠনের সাথে ২১ পরিবার ও ভূমি রক্ষা কমিটির আলোচনা সভা

0

দীঘিনালা প্রতিনিধি : দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটি ও বিজিবি কর্তৃক  উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারের উদ্যোগে আজ শনিবার (৯ এপ্রিল) পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম(ডিওয়াইএফ), হিল উইমেন্স ফেডারেশন(এইচডব্লিউএফ), ইউপিডিএফ ও জেএসএস(এমএন লারমার)-এর দীঘিনালা উপজেলা নেতৃবৃন্দের সাথে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। তবে জেএসএস(এমএন লারমা)-এর কোন প্রতিনিধি আলোচনায় উপস্থিত থাকেনি।

Alochona-sovaদীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্য নতুন চন্দ্র কার্বারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, পিসিপি দীঘিনালা উপজেলা শাখার সভাপতি জহেল চাকমা, ডিওয়াইএফ সভাপতি মঞ্জু চাকমা, এইচডব্লিউএফ সভাপতি এন্টি চাকমা ও ইউপিডিএফ সংগঠক চন্দন চাকমা।

আলোচনা সভায় পিসিপি সভাপতি জহেল চাকমা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ২১ পরিবার ও স্থানীয় জনগণের দাবি সমর্থন করে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে ২১ পরিবারকে স্ব-স্ব বাস্তুভিটায় ক্ষতি পূরণসহ পুনর্বাসন করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার এখনো পর্যন্ত আমাদের কোনো দাবির কর্ণপাত করেনি। উল্টো গত বছর ১৫ই মার্চ দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির উদ্যোগে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় সেনা-পুলিশ বাধা দিয়েছে, হামলা করেছে। বর্তমানেও প্রশাসন আমাদের গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে সরকারের এমন আচরণ আমাদের কখনো কাম্য নয়। উচ্ছেদকৃত ২১ পরিবারের সমস্যা দ্রুত সমাধান করা না হলে পিসিপি আগামীতে আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারী উচ্চারন করেন।

ডিওয়াইএফ সভাপতি মঞ্জু চাকমা বলেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম দীঘিনালা উপজেলা শাখা ২১ পরিবারের দাবির প্রতি সমর্থন করে আসছে, আগামীতেও করে যাবে।

এইচডব্লিউএফ দীঘিনালা উপজেলা শাখার সভাপতি এন্টি চাকমা বলেন, বিজিবি কর্তৃক উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবার বর্তমানে খুব কষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদেরকে উচ্ছেদ করার পর সরকারের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত সহযোগিতা করা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। সরকার আজ ২১ পরিবারকে উচ্ছেদ করেছে, আমরা যদি এর কঠোর প্রতিবাদ না করি আগামীতে আরো কত ২১ পরিবারকে উচ্ছেদের শিকার হতে হবে তার কোন ইয়ত্তা থাকবেনা। তাই আগামীতে নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদেরকে কঠোর আন্দোলনে যেতে হবে।

ইউপিডিএফ এর সংগঠক চন্দন চাকমা বলেন, আমরা অধিকারহারা জনগণের জন্য কাজ করছি, তাই জনগণের দাবিকে আমরা সর্বাত্মক সমর্থন করি। দীঘিনালার স্থানীয় জনগণের প্রাণের দাবি বিজিবি কর্তৃক উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারকে স্ব-স্ব বাস্তুভিটায় ক্ষতি পূরণসহ পুনর্বাসন করা। ইউপিডিএফ এই দাবিকে সমর্থন জানিয়ে স্থানীয় জনগণের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সহযোগিতা করে আসছে। ২১ পরিবার ও স্থানীয় জনগণের সাথে সৃষ্ট সমস্যা যদি অনতিবিলম্বে সমাধান করা না হয় তাহলে জনগণ কঠোর আন্দোলনে গেলে তখন সরকারই দায়ী থাকবে।

নতুন চন্দ্র কার্বারী বলেন, বিজিবি কর্তৃক আমরা ২১ পরিবার উচ্ছেদের শিকার হওয়ার পর থেকে জনগণের পাশাপাশি আপনারা আমাদেরকে বহু সাহায্য সহযোগিতা ও প্রেরণা যুগিয়েছেন। আগামীতেও আপনারা জনগণকে সাথে নিয়ে আমাদের পাশে থাকবেন এই কামনা করছি এবং আজকের এই আলোচনা সভায় অংশ গ্রহণ করার জন্যও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আজকের এই আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করার জন্য আমরা জেএসএস (এমএন লারমা) এর প্রতিনিধিদের আহ্বান জানালেও তারা আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভায় আসেন নি । একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের উচিত ছিলো আজকের এই আলোচনা সভায় উপস্থিত থেকে আমাদেরকে সাহস দেওয়া।

তিনি ন্যায্য দাবি পূরণের জন্য রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও দেশের প্রগতিশীল সব সংগঠনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
—————

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More