ক্ষতিপূরণসহ স্ব-স্ব বাস্তুভিটায় পুনর্বাসনের দাবিতে

দীঘিনালায় ভূমি রক্ষা কমিটি ও ২১ পরিবারের উদ্যোগে মত বিনিময় সভা

0

Dighinala2দীঘিনালা প্রতিনিধি।। ক্ষতিপূরণসহ স্ব স্ব বাস্তুভিটায় পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে আজ মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) ৫১নং বিজিবি কর্তৃক উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবার ও দীঘিনালা ভূমিরক্ষা কমিটির উদ্যোগে দীঘিনালা উপজেলার কার্বারী ও মুরুব্বীদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত আলোচনা সভায় দীঘিনালার ৫৪টি গ্রামের মুরুব্বীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্য বাবু নতুন চন্দ্র কার্বারী।

সভায় নতুন চন্দ্র কার্বারী ২১ পরিবারের প্রতি দীঘিনালার সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বলেন, ১০ মার্চ ২০১৪ সালে রাতের অন্ধকারে বিজিবি’র সদস্যরা আমাদের জায়গায় টাবু টাঙ্গিয়ে বেদখল করে এবং ১০ জুন মারধর করে জায়গা থেকে উচ্ছেদ করে । ১১জুন দীঘিনালা থানায় ২১ পরিবার সহ আশেপাশের গ্রামের অনেকের নাম উল্লেখ করে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে। উচ্ছেদ হওয়ার পর থেকে আপনাদের সকলের সহযোগিতায় আমরা বিভিন্ন মিছিল-মিটিঙ, মানববন্ধন, অনশন ধর্মঘট পালন করেছি। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পার্বত্যমন্ত্রণালয় সহ অনেক জায়গায় স্বারক লিপি দিয়েছি। মানবতাবাদী সংগঠনের অনেকে ২১ পরিবারকে দেখে গেছেন এবং নানা সাহায্য সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু আমরা এখনো মানবেতর জীবন যাপন করতেছি। ১৫ই মার্চ ২০১৫ সালে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় সেনাবাহিনী বীনা উস্কানিতে হামলা করে অনেককে আহত করে। এবং মামলা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করে। ২১ পরিবারকে সহযোগিতার জন্য আবারও ধন্যবাদ দেন।

ভূমি রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেন, ২৯৮নংআসনের মাননীয় সংসদ সদস্য বাবু কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে দীঘিনালা উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় মৌজার হেডম্যানের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে সমাধানের চেষ্টা করেন এবং কর্মপরিকল্পনা ঠিক করার জন্য কমিটিকে নির্দেশ দেন। উক্ত কমিটি কর্মপরিকল্পনা মাননীয় অংসদ সদস্যর নিকট প্রদান করলে তিনি তার বিভিন্ন সময়ে দেওয়া আশ্বাসের উদ্যোগ থেকে সরে যান। দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জোন কমান্ডার সরেজমিনে জায়গা তদন্ত করার কথা থাকলেও তাদের কথা তারা রক্ষা করেননি। সর্বশেষ খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক দীঘিনালায় আসলে ২১ পরিবারের পক্ষ থেকে ২২ মার্চ ২০১৬ইং তারিখে একটি স্বারক লিপি দেওয়া হয়। এবং জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দ্রুত রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেন। সর্বশেষ ২৫ মার্চ ২০১৬ সালে দীঘিনালা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ২১ পরিবারের পক্ষ থেকে স্ব-স্ব বাস্তুভিটায় ক্ষতিপূরণ সহ পূণর্বাসনের দাবী করা হয়।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, আমরা সরকারের কাছে বিভিন্ন কর্মসূটি দিয়ে বাবুছড়ায় যত্নমোহন ও শশীমোহন কার্বারী পাড়ায়  বিজিবি ক্যাম্প স্থাপন না করে অন্য জায়গায় স্থাপন ও উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারকে স্ব-স্ব বাস্তুভিটায় পূণর্বাসন করার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এযাবৎকালে সমস্যা সমাধানের জন্য কোন প্রকার ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন আশ্বাস দেওয়া হলেও কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জোন কমান্ডার ২১ পরিবারের জন্য জায়গা দেখার কথা থাকলেও তারা জায়গা পরিদর্শন করতে যাননি।

আলোচনা সভায় বক্তারা আরো হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার যদি বিজিবি’র সাথে ২১ পরিবার ও দীঘিনালার স্থানীয় জনগণের সাথে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান না করেন তাহলে আমরা আরো একবার কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।

আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারী সকল মুরুব্বীরা ২১ পরিবারের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন।
—————-

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More