দীঘিনালায় সেনাবাহিনীর গোলাগুলির নাটক নিয়ে স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য

0

দীঘিনালা প্রতিনিধি : গত ১০ জুলাই রবিবার বিকাল আনুমানিক ৪টা। দীঘিনালা জোন থেকে তিনটি জীপগাড়ি যোগে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাবুছড়ার দিকে যায়। তারা সাধনা টিলা বনবিহারের পাশ্ববর্তী কমলা বাগান কমিউনিটি সেন্টার এলাকায় গিয়ে বেশ কয়েক রাউণ্ড ফাকা গুলিবর্ষণ করে। এরপর সেনাবাহিনীর সদস্যরা “সন্ত্রাসীদের” সাথে গোলাগুলির নাটক সাজিয়ে অবিনাশ চাকমা নামে এক ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে এসে একটি এলজি ও টাকাসহ পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।

Dighinala2কিন্তু স্থানীয় কয়েকজনের ভাষ্য অনুযায়ী সেদিন কারোর সাথে কোন গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি। সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিজেরাই ফাঁকা গুলিবর্ষণ করেছে।

সাধনাটিলা কমলাবাগান এলাকার এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএইচটি নিউজ ডটকমকে বলেন, সেদিন আমি বাবুছড়া বাজার থেকে ফিরছিলাম। সাধনাটিলা কমলাবাগান কমিউনিটি সেন্টারের কাছাকাছি পৌঁছলে একজন সেনা সদস্য আমাকে কমিউনিটি সেন্টারের রাস্তা দিয়ে যেতে নিষেধ করে। আমার সাথে আরো ২/৩ জন ছিল। কিছুক্ষণ পর আমরা বন্দুকের আওয়াজ শুনতে পেলাম। প্রায় ১০/১২টা আওয়াজ আমরা শুনেতে পেয়েছি। তখন আনুমানিক বিকাল ৪টা কি সাড়ে ৪টা হবে। এর ১০-১৫ মিনিট পর তিন জীপ সেনাবাহিনী ও দুই সিএনজি পুলিশ সেখান থেকে চলে যায়।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় এর আগে এখানে একটি আর্মি ক্যাম্প স্থাপন করার কথা ছিল। কিন্তু জনগণের আপত্তির কারণে স্থাপন করতে পারেনি। ক্যাম্প স্থাপনের ষড়যন্ত্র হিসেবে সেনাবাহিনী এ ধরনের নাটক করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

একই এলাকার অপর এক ব্যক্তি বলেন, আমি আর আমার স্ত্রী দু’জনে কমলা বাগান পরিস্কার করছিলাম। বিকাল ৪টার দিকে তিন জীপ সেনাবাহিনী ও দু’টি সিএনজি কমলাবাগান কমিউনিটি সেন্টারে আসে। সেনাসদস্যরা কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে বেশ কয়েক রাউন্ড ফায়ার করে চলে যায়। তবে দু’পক্ষের মধ্যে কোন গোলাগুলি হয়েছে বলে মনে হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, আমি দোকানে বসেছিলাম। বিকাল আনুমানিক ৪টা দিকে তিন জীপ সেনাবাহিনী ও দুইটি সিএনজিতে করে পুলিশ কমলা বাগানের দিকে যেতে দেখি। এ সময় সিএনজি’র ভিতর মুখবাধা অবস্থায় একজনকে নিয়ে যেতে দেখেছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৬ জুলাই সকালে অবিনাশ চাকমা চিকিৎসা ও মোবাইল ফোনে পরিচয় হওয়া এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে দীঘিনালার আমতলির নিজ বাড়ি থেকে চট্টগ্রামে যান।  সেখানেই বন্ধু বেশে ফোন করা সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনই তাকে আটক করে।  এরপর তাকে নিজেদের হেফাজতে রেখে ১০ জুলাই বিকালে সেনাবাহিনী গোলাগুলির নাটক সাজিয়ে তাকে আটক দেখানো হয়।

এদিকে, এ ধরনের সাজানো ঘটনাকে পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য অশনি সংকেত বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করছেন।
—————

সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More