দীঘিনালায় ২১ পরিবারের মতবিনিময় সভায় বক্তারা : আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করতে হবে
দীঘিনালা প্রতিনিধি : দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটি ও বিজিবি কর্তৃক উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারের উদ্যোগে গতকাল শুক্রবার (১ এপ্রিল) দীঘিনালা উপজেলার বিভিন্ন সমাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন, দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্য নতুন চন্দ্র কার্বারী। সভার শুরুতে উক্ত সমস্যার অতীত ও বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়। সভায় উপজেলার ১৫টি ক্লাব ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতি বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, দীঘিনালা উপজেলা চেয়ারম্যান নবকমল চাকমা ও স্থানীয় হেডম্যান বাবু প্রান্তর চাকমা সহ ৭(সাত) সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটির মাধ্যমে মাননীয় সংসদ সদস্য বাবু কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। মাননীয় সংসদ সদস্য তার নিকট আস্থা ও বিশ্বাস রাখার জন্য বারবার বলেন এবং সমাধানের আশ্বাস দেন। উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারকে কমিটির সদস্য বৃন্দ এমপি’র কথামত আশ্বাস দেন কিন্তু কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা পরিশেষে কোন কারণ কিংবা অজুহাত ছাড়া তার উদ্যোগ থেকে সরে পড়েন।
সর্বশেষ ২১ পরিবারের পক্ষ থেকে গত ২২ মার্চ জেলা প্রশাসকের নিকট একটি স্বারকলিপি প্রদান করা হয়। জেলা প্রশাসক আন্তরিকতার সাথে প্রতিনিধি দলের সাথে কথা বলেন এবং দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অতিদ্রুত রিপোর্ট প্রদানের জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু আজও কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। ১৪ মে ২০১৪ সালে ২১ পরিবারকে উচ্ছেদ করানোর পর থেকে দীঘিনালা এলাকার সর্বস্তরের জনগণ আমাদের সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করেছেন এবং এখনও করতেছেন। আপনাদের সাহায্য সহযোগিতায় আমরা বেঁচে আছি।
তাই, বর্তমান অবস্থা আপনাদেরকে জানানো আমাদের কর্তব্য মনে করে আজকের সভা আয়োজন করা হয়েছে। আজকের সভায় আসার জন্য ২১ পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাদেরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এবং অতীতের মত ভবিষ্যতেও সাহায্য সহযোগিতা কামনা করছি।
সভায় বিভিন্ন ক্লাব, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা বলেন, আন্দোলন ছাড়া কোন অধিকার পাওয়া যায় না। যুবসমাজ সহ বৃহত্তর জনগণকে আন্দোলনে সামিল হতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করতে হবে।
বক্তারা বলেন, আন্দোলন ব্যতীত কোন গতি নেই। প্রতিনিয়ত আমাদের জায়গা বেখল হয়ে যাচ্ছে। এই বেদখল যদি রোধ করতে না পারি তাহলে আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব একদিন বিলিন হয়ে যাবে। স্থানীয় রাজনৈতিক দলের সাথেও এই ধরনের মত বিনিময় সভা আয়োজন করলে ভালো হবে বলে আমি মনে করি।
বিজিবি কর্তৃক উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারের দাবীর প্রতি সমর্থন দেওয়ার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ২১ পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানান বক্তারা।
বক্তারা আরো বলেন, আমাদের ন্যায্য অধিকারের জন্য আন্দোলনের বিকল্প নেই। শুধু বাবু ছড়ার ২১ পরিবার নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে আরো হাজার হাজার পরিবার নিজ দেশে পরবাসি হয়ে আছে। তাই আমরা যদি একতা বন্ধ হতে না পারি ভবিষ্যতে আরো কত পরিবার উচ্ছেদের শিকার হবে তার কোন ইয়াত্তা থাকবে না। তাই আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, আমাদের ন্যায়সংঙ্গত দাবির জন্য আন্দোলন করে যেতে হবে।
————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।