বিনয়ন ও অনিল-এর মুক্তি লাভে পিসিপি’র সন্তোষ প্রকাশ
নব্য রাজাকারদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান
ঢাকা: গতকাল ২১ নভেম্বর সোমবার বিকাল ৪টায় সংগঠনের সহ:সভাপতি বিনয়ন চাকমা ও সাংগঠনিক সম্পাদক অনিল চাকমা জামিনে মুক্তি লাভ করায় পিসিপি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিপুল চাকমা এক বিবৃতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে সদ্য জামিনে মুক্ত বিনয়ন চাকমা ও অনিল চাকমাকে স্বাগত জানিয়েছেন। ২০ নভেম্বর মুক্তিপ্রাপ্ত পানছড়ির পিসিপি নেতা-কর্মীদেরও সম্ভাষণ জানিয়েছেন। কারাগারে অন্তরীণ অন্য নেতা-কর্মীদের বেশি দিন অন্যায়ভাবে আটক রাখা যাবে না বলেও তিনি বিবৃতিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ক্যান্টনমেন্টে আটকাবস্থায় বিনয়ন ও অনিল’কে অমানুষিকভাবে মারধরের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পিসিপি নেতা আরো বলেন,‘আমরা জেল-জুলুম মামলা-হুলিয়ার ভয়ে ভীত নই।’ বিবৃতিতে তিনি আরো স্মরণ করিয়ে দেন,‘ পিসিপি আশি দশকের শেষার্ধে ফৌজী শাসনের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে গঠিত হয়েছিল। উদ্যত রাইফেল বা রক্ত চক্ষু তোয়াক্কা না করে নিপীড়ন নির্যাতন হত্যাকা-ের প্রতিবাদ জানিয়েছিল। আমরা পিসিপি’র সেই গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামী ধারার উত্তরসূরী। আমাদের গ্রেফতার করে জেলে পুড়ে নির্যাতন চালিয়ে লড়াই সংগ্রাম থেকে সরানো যাবে না।’
বিবৃতিতে পিসিপি নেতা সাংগঠনিক সম্পাদক অনিল চাকমাকে খাগড়াছড়ি সেনা জোন অধিনায়ক কর্তৃক ১লক্ষ টাকা প্রলোভন দেখিয়ে ইউপিডিএফ নেতা ধরিয়ে দেয়ার প্রস্তাবকে ‘বড় বাণিজ্য’ মন্তব্য করেন এবং প্রশ্ন রেখে বলেন,‘যিনি ১লক্ষ টাকা দেয়ার প্রস্তাব দেন, এ বাণিজ্যে তার ভাগে কত পড়তে পারে–তা স্বাভাবিকভাবে যে কারোর মনে উদয় হতে বাধ্য। সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামে গোপন বাজেট বরাদ্দ রয়েছে এটা তারই প্রমাণ, যার কোন হিসেব নেই। গরীব জনগণের কষ্টার্জিত টাকা এভাবে শ্রাদ্ধ হচ্ছে। অপারেশন উত্তরণ-এর গোপন বাজেট আর কারোর না হোক, কায়েমী স্বার্থবাদী সেনা কর্মকর্তাদের ভাগ্য খুলে দিচ্ছে’!
পিসিপি নেতা বিবৃতিতে স্মরণ করিয়ে দেন, ‘সেনা-পুলিশের মতো আটক বাণিজ্য বা ধরিয়ে দেয়ার ঘৃণ্য কারবারের ঘোরতর বিরোধী পিসিপি এবং এসব কাজের ধিক্কার জানায়। কেবল দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে নয়, সমস্ত রকম জালিয়াতি চোরাকারবারি ব্যবসা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে পিসিপি সোচ্চার।’
সেনা জোন অধিনায়ক পিসিপি নেতা’কে ১লক্ষ টাকার প্রলোভন দিয়ে প্রকারান্তরে সরকারের নীল নক্সা ফাঁস করে ফেলেছেন মন্তব্য করে পিসিপি নেতা আরো বলেন, ‘বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে ৭১-এর দৃশ্যের পুনঃপ্রচার চলছে! পাক হানাদার বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে যেমন মুক্তিযোদ্ধাদের ঘায়েল করতে রাজাকার আল বদর সৃষ্টি করে বাঙালি জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে হত্যা-ধর্ষণ-ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল, পার্বত্য চট্টগ্রামেও পাক হানাদার বাহিনীর মদদপুষ্ট একশ্রেণীর সেনা কর্মকর্তা নব্য রাজাকার আল বদর সৃষ্টি করে পাহাড়ি জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে একই কা- শুরু করেছে। তার আলামত বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে।’ পিসিপি নেতা পাক হানাদার বাহিনীর মদদপুষ্ট সেনা কর্মকর্তাদের সুগভীর ষড়যন্ত্র সম্পর্কে ছাত্রসমাজকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী বেঈমান বিশ্বাসঘাতক দালালদের চিহ্নিত করে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের লড়াই জোরদার করতে উদাত্ত আহ্বান জানান।
_______
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।