নান্যাচরে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছেলেকে সেনাবাহিনী দ্বারা অন্যায়ভাবে নির্যাতনের অভিযোগ পিতার
রাঙামাটি প্রতিনিধি।। জেলার নান্যাচরে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্র রমেল চাকমাকে সেনাবাহিনী দ্বারা অন্যায়ভাবে বিনা দোষে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করে এর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নিকট আবেদন করেছেন ওই ছাত্রের পিতা কান্তি চাকমা।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রাঙামাটি জেলা অফিসে গিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যানের বরাবরে তিনি এই আবেদন করেন।
এতে তিনি (কান্তি চাকমা) বলেন, “আমার পুত্র রমেল চাকমা চলতি শিক্ষা বর্ষের এইচএসসি পরীক্ষার্থী, তার পরীক্ষার রোল নং-৩২৬১৭৯। সে নানিয়াচর কলেজ থেকে এবারে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। গতকাল ০৫/০৪/২০১৭ খ্রিঃ বুধবার নানিয়াচর বাজারে হাটবার ছিল। ঐ দিন পরীক্ষা না থাকায় সে বাজারে বাজার করতে গিয়েছিল। তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে যে, সে নানিয়াচর উপজেলা কার্যালয়ের দিকে যাবার পথে পার্শ্বোক্ত সেনা ক্যাম্পের [নানিয়াচর জোন, ৭ ই. বেঙ্গল রেজিমেন্ট, রাঙামাটি) সদস্যগণ আনুমানিক সকাল ১০ ঘটিকায় তাকে ধরে ক্যাম্পে নিয়ে যান। সেখানে কোন প্রকার বাছ-বিচার না করে নির্বিচারে বেপরোয়াভাবে মারধর করেন। তাদের আঘাতে রমেল চাকমা অজ্ঞান হয়ে পড়লে নিকস্থ থানায় সৈন্যরা হস্তান্তর করার চেষ্টা করেন। কিন্তু রমেলের অবস্থা বেগতিক দেখে থানা হস্তান্তর গ্রহণে অস্বীকার জানান। পরে নিকটস্থ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার জন্য সৈন্যরা নিয়ে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে নাই।”
তিনি আরো বলেন, “আমার বাড়ি নানিয়াচর উপজেলা থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার ব্যবধান হওয়ায় এই দুঃসংবাদ আমার নিকট পৌঁছতে দেরী হয়ে যায়। বিলম্বে পাওয়া তথ্য মতে জানতে পারি যে, আমার পুত্র রমেল চাকমাকে বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেনাবাহিনীর দ্বারা [নজরদারিতে] চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। জানিনা এখন সে কি অবস্থায় আছে।”
তিনি বলেন, “বিনা দোষে একজন পরীক্ষার্থী ছাত্রকে বেপরোয়া শারীরিক নির্যাতনে আমি একজন অভিভাবক হিসেবে অসহায় ও বিপদগ্রস্ত। অমনিভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের আনাচে-কানাচে প্রায়ই সৈন্যরা ঘটনা ঘটাচ্ছেন বলে ধারণা করা যেতে পারে।”
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “পার্শ্বোক্ত সেনা ক্যাম্পের সৈন্যরা বিনা কারণে এমন অমানুষিক নির্যাতন করায় আমার পুত্রের অবস্থা সংকটাপন্ন হয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। তাছাড়া তার শিক্ষা জীবনে দীর্ঘ মেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অবশেষে তার অপূরণীয় ক্ষতি হলো।”
তিনি কমিশনের আইনানুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দোষী সৈন্যদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণসহ যাবতীয় ক্ষতিপূরণের নিমিত্তে ন্যায়তঃ প্রতিকার বিধানের দাবি জানিয়েছেন।
——————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।