নান্যাচরে ৪ গ্রামবাসীকে অপহরণের পর মুক্তি : সংস্কারবাদীরা টাকার জন্য মরিয়া

0

নান্যাচর॥  জেএসএস-এমএন লারমা নামধারী সংস্কারবাদী রাজাকাররা অর্থের জন্য এখন ভীষণ মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ জন্য তারা লোকজনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে। স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর নাকের ডগায় এসব ঘটলেও তারা দেখেও না দেখার ভাণ করছে।

এক হিসেবে নভেম্বর থেকে গত ১৫ আগষ্ট পর্যন্ত তারা মোট ৭৮ জনকে অপহরণ করেছে। সর্বশেষ গত ১২ সেপ্টেম্বর সংস্কারবাদী-নব্য মুখোশ বাহিনী দুর্বৃত্তরা নান্যাচরে আরও ৪ নিরীহ গ্রামবাসীকে অপহরণ করে।

জানা যায়, ঐদিন সকাল ১১টার দিকে নান্যাচর লঞ্চ ঘাট থেকে তাদেরকে বন্দুকের নলের মুখে অপহরণ করে বিহার পাড়ায় নেয়া হয়। এলাকাটি নান্যাচর সেনা জোন ও থানা থেকে মাত্র কয়েক শ’ গজ দূরে।

অপহরণের পর সংস্কারবাদী দুর্বৃত্তরা তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও ভয়ভীতি দেখায়। এরপর আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দুই লক্ষ দেয়ার কথা বলে তাদেরকে ঐদিন সন্ধ্যায় ছেড়ে দেয়।

ধার্যকৃত চাঁদা (তাদের ভাষায় গণবাজেট) দিতে অস্বীকার করায় বোধিল চাকমাসহ ৭ জন সংস্কারবাদী-নব্য মুখোশ বাহিনী দুর্বৃত্ত তাদেরকে অপহরণ করেছে বলে অপহৃতরা জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপহৃতদের একজন সিএইচটি নিউজ ডটকমকে বলেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে তথাকথিত গণবাজেট না দিলে আমাদের নাকি আরো বিপদ হবে, এই বিপদ থেকে আমরা কেউ বাঁচতে পারবো না বলে তারা আমাদের ভয় দেখায়।’

উক্ত বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে দুই লক্ষ টাকা না দিলে বা চাঁদা দিতে দেরী করা হলে এর দ্বিগুণ অর্থাৎ ৪ লক্ষ টাকা দিতে হবে বলে দুর্বৃত্তরা অপহৃতদের হুমকি দেয়।

‘তবে আমরা তাদের হুমকিতে মোটেই ঘাবড়ে যাই নি’ বলে অপহৃতরা জানিয়েছেন।

অপহৃতরা হলেন ১ নং সাবেক্ষ্যং ইউনিয়নের দক্ষিণ মরাচেঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা ১। দীপায়ন চাকমা (২০), পিং-উর্ধ্ব কুমার চাকমা, ২। সুমধুর চাকমা (১৮), পিং-মৃদুল কান্তি চাকমা, ৩। ধনমণি চাকমা (৪০), পিং-হরিচোগা চাকমা ও ৪। মিলন কান্তি চাকমা (৩৮), পিং-কমল চরণ চাকমা।

অপহরণকারীদের তিন জনের পরিচয় জানা গেছে: বোধিল কান্তি চাকমা (৩৫), পিং-হেমন্ত লাল চাকমা, সাং-মরাচেঙ্গী, সাবেক্ষ্যং ইউপি; মন মিলন চাকমা (৫০), পিং-হিরণ মোহন চাকমা, সাং-মরাচেঙ্গী দোর, সাবেক্ষ্যং ইউপি, এবং রূপম দেওয়ান (৩৫), পিং- মহানন্দ দেওয়ান, সাং-বটবিল, বুড়িঘাট ইউপি।

নান্যাচরে ইতিপূর্বেও আরও অনেক নিরীহ লোককে সেনাবাহিনীর লেলিয়ে দেয়া সংস্কারবাদী-নব্য মুখোশ বাহিনী দুর্বৃত্তরা অপহরণ করে মোটা অংকের টাকা আদায় করেছে। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে পুরো নান্যাচরে জনগণের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

তাদের হুমকিতে ঘরছাড়া একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘আমাদেরকেও খাগড়াছড়ির জনগণের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আর সহ্য করা যায় না।’

সংস্কারবাদীদের এক নম্বর জাতীয় শত্রু ও জুম্ম রাজাকার আখ্যায়িত করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি আরো বলেন, দুর্বৃত্তরা আসলে দুর্বল। জনগণ সংগঠিত নয় বলেই তারা এসব দুষ্কর্ম করতে সক্ষম হচ্ছে। প্রতিরোধ করা হলে তারা পালিয়ে যায়। এটা বার বার দেখা গেছে।

নান্যাচরকে জুম্ম রাজাকার-দুর্বৃত্ত মুক্ত করতে তিনি সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান।
——————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More