পানছড়ির ধুদুকছড়ায় সন্তু গ্রুপ কর্তৃক ইউপিডিএফ কর্মী হত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি ও পানছড়িতে বিক্ষোভ
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
সিএইচটিনিউজ.কম
আজ ২৯ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল পৌনে ৮টার সময় খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ধুদুকছড়ায় জেএসএস সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র হামলায় ইউপিডিএফ কর্মী পীযুষ চাকমা (৩৫) ও একনিষ্ট সমর্থক সুনীতি চাকমা(৪৫) নিহত হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি সদর ও পানছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন।
আজ বিকাল সাড়ে ৩টার সময় খাগড়াছড়ি জেলা শহরের মহাজন পাড়ার সূর্যশিখা কাবের মাঠ থেকে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি চেঙ্গী স্কোয়ার ঘুরে, উপজেলা হয়ে স্বনির্ভর বাজারে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল পরবর্তী সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা সংগঠক চরণ সিং তঞ্চঙ্গ্যা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য জিকো ত্রিপুরা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রদেব চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি মাদ্রী চাকমা।
এছাড়া দুপুর ২:৩০টায় পানছড়ি উপজেলার কলেজ গেট থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে পানছড়ি বাজার সহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদণি করে জিয়া স্কোয়ারে এক প্রতিবাদ সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি বরুণ চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের পানছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি বিবর্তন চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক পরম বিকাশ ত্রিপুরা ও সুমেধ চাকমা প্রমুখ।
এসব সমাবেশ বক্তারা এ হামলার ঘটনাকে কাপুরুষোচিত উল্লেখ করে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে সন্তু লারমা একের পর এক হত্যাকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারে বসে সন্তু লারমা এসব হত্যাকান্ড চালালেও সরকার তার বিরুদ্ধে কোন পদপে গ্রহণ করছে না।
বক্তারা আরো বলেন, সরকার একদিকে চুক্তি বাস্তবায়নের কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে অন্যদিকে সন্তু লারমাকে দিয়ে ইউপিডিএফ ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে। এ ধরনের চক্রান্ত বন্ধ করার জন্য বক্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা বলেন সরকারের দালালি করেও ইউপিডিএফকে ধ্বংস করতে না পেরে সন্তু লারমা বর্তমানে চোরাগোপ্তা হামলার আশ্রয় নিয়েছেন। অচিরেই জনগণকে সাথে নিয়ে সন্তু গ্রুপের এসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলে বক্তারা হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
বক্তারা সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এলাকায় এলাকায় গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা অবিলম্বে দুই ইউপিডিএফ কর্মী ও সমর্থককে হত্যাকারী সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, সন্তু লারমাকে আঞ্চলিক পরিষদ থেকে অপসারণের দাবি জানান।
এছাড়া রাঙামাটির নান্যাচরেও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুর ১টায় নান্যাচর উপজেলার রেস্ট হাউজ মাঠ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে নান্যাচর বাজার প্রদক্ষিণ করে আবার রেস্ট হাউজ মাঠে এসে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নান্যাচর থানা শাখার সহসভাপতি ইটন চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশ থেকে তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে হামলাকারী সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও ইউপিডিএফ-এর দুশতাধিক নেতা-কর্মীকে হত্যার দায়ে সন্তু লারমার বিচার দাবি করেন।