জেএসএস(এমএন লারমা) কর্তৃক নেতা-কর্মী অপহরণ ও সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়ার প্রতিবাদে

পানছড়ি উপজেলাসহ পানছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ পালিত

0

পানছড়ি : গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি উপজেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক বুদ্ধিরাম ত্রিপুরাসহ ৪জনকে জেএসএস (এমএনলারমা)-এর একাংশের কতিপয় বিপদগামী নেতাকর্মী কর্তৃক অপহরণ ও অমানুষিক শারীরিক নির্যাতনের পর সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিয়ে সাজানো মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে ও তাদের মুক্তির দাবিতে আজ ২৩ অক্টোবর ২০১৭, সোমবার পানছড়ি উপজেলাসহ পানছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ পালন করেছে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম(ডিওয়াইএফ) পানছড়ি উপজেলা শাখা।

সকাল ৬টা থেকে অবরোধ শুরু হলে পিকেটাররা পানছড়ি উপজেলাসহ পানছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করে। কলেজ গেট এলাকায় পিকেটিং করার সময় জেএসএস (এমএনলারমা)-এর চিহ্নিত বিপদগামী অংশের কপিতয় দুর্বৃত্ত সেনা-প্রশাসনের যোগসাজশে পিকেটারদের বাধা প্রদান করলে তাদের সাথে পিকেটারদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে জনতার তাড়া খেয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

অবরোধের কারণে পুজগাং ও তালতলায় কঠিনচীবর দান ও বিভিন্ন জরুরী প্রয়োজনে গাড়ি চলাচল ছাড়া তেমন কোন গাড়ি পানছড়ি উপজেলাসহ পানছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কে চলাচল করেনি।

বিকাল ৪টার দিকে পানছড়ি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে মঞ্জুআদামে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কর্মীরা মিছিল ও সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের উপজেলা শাখার সভাপতি কৃপায়ন চাকমা।

তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জেএসএস(এমএনলারমা)-এর একটি চিহ্নিত বিপদগামী অংশ ’৭১-এর আল-বদর বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। সেনাবাহিনীর প্রমোশন বাণিজ্যের গুঁটি হিসেবে এ নব্য আল-বদর বাহিনীর সদস্যরা প্রকৃত আন্দোলনকারী দলের নেতা-কর্মীদেরকে অপহরণ করে অমানুষিক নির্যাতনের পর সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আজকের ইত্তেফাক পত্রিকায় ২য় ও শেষ পৃষ্টায় ‘‘পার্বত্য চট্টগ্রামে অবাধে বেপরোয়া চাঁদাবাজি চলছে’’ শিরোনামে সাংবাদিক আবুল খায়ের-এর একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এতে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফকে নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক তথ্য প্রকাশ করা হয়, যা সেনাবাহিনীর শেখানো লিখিত কথাবার্তা ছাড়া আর কোন কিছুই নয়।

তিনি ইত্তেফাক পত্রিকার সমালোচনা করে আরো বলেন, ইত্তেফাক পত্রিকার অনেক ইতিহাস ঐতিহ্য রয়েছে, অথচ মিথ্যা  বানোয়াট উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন ও দমন-পীড়ন এবং জেএসএস(এমএনলারমা)-এর চিহ্নিত বিপথগামী অংশের ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য সহযোগী হিসাবে কাজ করছে। তাঁর বক্তব্য চলাকালীন উক্ত প্রতিবেদনের প্রতিবাদে রাস্তায় প্রকাশ্যে ইত্তেফাক পত্রিকার কপি পোড়ানো হয়।

# মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ পরিবেশনের প্রতিবাদে ইত্তেফাক পত্রিকার কপি পোড়াচ্ছে ডিওয়াইএফ’র নেতা-কর্মীরা

এছাড়া বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে অবরোধের সংবাদ সংগ্রহকালে পানছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কের স্বনির্ভর এলাকায় পুলিশ পোষ্টের সামনে পুলিশ কর্তৃক ২ জন সাংবাদিকে লাঞ্ছনার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

সমাবেশে ডিওয়াইএফ নেতা শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ সফল করার জন্য সকল যান-বাহন মালিক সমিতিসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

তিনি জেএসএস(এমএনলারমা)-এর চিহ্নিত বিপদগামী অংশের সকল অপকর্মসহ সেনা-প্রশাসনের অন্যায় দমন-পীড়নে রবিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, পানছড়ি উপজেলার শান্তিপুর অরণ্য কুটিরে কঠিনচীবর দান অনুষ্ঠানে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পক্ষ থেকে প্রতিবছরের ন্যায়এবারো স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে দায়িত্বে পালন করার জন্য প্রস্তুতি নিতে গত ২০ অক্টোবর ২০১৭ গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম’র পানছড়ি শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক বুদ্ধিরাম ত্রিপুরা মোটর সাইকেল যোগে পানছড়ি সদরের মিজ্জেটিলা থেকে শান্তিপুর অরণ্য কুটির যাওয়ার পথে কলেজ গেইট এলাকা থেকে জেএসএস(এমএনলারমা)-এর বিপদগামী অংশের কতিপয় দুর্বৃত্ত কর্তৃক অপহরণের শিকার হন। এরপর একই কায়দায় দুর্বৃত্তরা উপজেলার পাগুজ্জেছড়ি এলাকা থেকে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য রূপায়ন চাকমাসহ আরও তিনজনকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে। এর মধ্যে রূপায়ন চাকমা কোন রকমে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও দুর্বৃত্তরা বুদ্ধিরাম ত্রিপুরাসহ ৪জনকে অমানুষিক নির্যাতনের পর সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। এরপর তাদরেকে থানায় নেওয়া হলে পুলিশ প্রশাসন চিহ্নিত অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে উল্টো অপহরণের শিকার হওয়া যুব ফোরামের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ‘অস্ত্র মামলা’ দায়ের করে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
————–
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More