পার্বত্য চট্টগ্রামের গ্যাস ব্লক বিদেশী কোম্পানির হাতে তুলে দেয়ার তৎপরতা!
সিএইচটিনিউজ.কম
সৌজন্যে: কল্লোল মোস্তফা ফেসবুক স্ট্যাটাস
গ্যাস প্রাপ্তি মোটামুটি নিশ্চিত এমন ৪টি ক্ষেত্র জয়েন্ট ভেঞ্চারের নামে বিদেশী কোম্পানির হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। গত ২০ এপ্রিল স্থলভাগের ২২ নং গ্যাস ব্লকের অন্তর্ভুক্ত চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পটিয়া, জলদী, কাসালং ও সীতাপাহাড় এ তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে আগ্রহপত্র (এক্সপ্রেশান অব ইন্টারেস্ট বা ইওআই) আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ২৮ মে এই ইওআই দাখিলের শেষ দিন।
বাপেক্সের ওয়েবাসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে-
“পটিয়া ক্ষেত্রটিতে ৫০ এর দশকে ড্রিল করা হয়, জলদী ৬০ এর দশকের মাঝামাঝি এবং সীতাপাহাড় ৮০ এর দশকের শেষের দিকে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই উৎসাহজনক গ্যাস প্রাপ্তি রেকর্ড করা হয় এবং কাসালং ক্ষেত্রটি ড্রিল করার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছিল একটি আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি।”
http://www.bapex.com.bd/tender/EOI_BAPEX_20-04-2015.pdf
এর আগে ২০১২ সালে যখন চীনা কোম্পানি সিনোপ্যাক এর সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চার চুক্তির খসড়া করা হয়েছিলো, যা সেসময় আমাদের প্রতিবাদের মুখে বাতিল হয়েছিল, সেখানেও বলা হয়েছিল- “আর কোন সার্ভে ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজনীয় নেই,সরাসরি কুপ খনন শুরু করলেই হবে।” http://www.somewhereinblog.net/mobi…/…/dinmojurblog/29563500
কাজেই ঐ চারটি ক্ষেত্রে যে গ্যাস পাওয়া যাবে তা মোটামুটি নিশ্চিত। তাহলে বাপেক্সকে দিয়ে উত্তোলন না করিয়ে বিদেশী কোম্পানিকে দেয়া হচ্ছে কেন?
স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলণে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের দক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। জাতীয় কমিটির আন্দোলন ও জনদাবীর মুখে সরকার এক পরযায়ে স্থলভাগের কোন গ্যাস ব্লক আর বিদেশী কোম্পানির কাছে ইজারা দেয়া হবে না- এরকম অঙ্গীকারও করে।
http://www.theindependentbd.com/index.php…
তাহলে এখন কি ঘটলো যে গত ১০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ”বাপেক্সের এলাকা বাদ দিয়ে স্থলভাগের অন্য এলাকায় আইওসির মাধ্যমে তেল-গ্যাস উত্তোলন অনুসন্ধানের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন।”
http://www.dailyjanakantha.com/print/print_details.php…
কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চার করে নাইকোর অবহেলায় টেংরাটিলা গ্যাস ক্ষেত্রটি ধ্বংস হওয়ার পরও শাসক গোষ্ঠীর শিক্ষা হয় নি। বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগ আদালতে নাইকোর মামলার ঘানি টানা চলতে চলতেই আবার আরেকটা বিপর্যয় ও লুটপাটের আয়োজন করা হচ্ছে। নাইকোর সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চারে নাইকোর অংশীদ্বারিত্ব ৮০% এবং বাপেক্সর ২০% ছিল। ২০১২ সালে সিনোপ্যাকের সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চারের খসড়ার বেলায় বাপেক্সের অংশীদ্বারিত্ব নির্ধারিত হয় ৩০% এবং সাইনোপেকের ৭০% । বুঝতে অসুবিধা হয়না নাইকোর চুক্তি কিংবা সিনোপ্যাকের খসড়ার আদালেই পার্বত্যচট্টগ্রামের এই গ্যাস ক্ষেত্রটি বিদেশী কোম্পানির হাতে তুলে দেয়ার চক্রান্ত চলছে। এমনকি ৫০:৫০ জয়েন্ট ভেঞ্চারেরও কোন যুক্তি নেই কেননা বাপেক্স স্থলভাগের যে কোন স্থানে গ্যাস উত্তোলেণে সক্ষম,পার্বত্য এলাকায়ও যে সক্ষম সেটা সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের সেমুতাং গ্যাস ক্ষেত্র থেকে সফল ভাবে গ্যাস উত্তোলণের ঘটনা থেকেই প্রমাণিত।
পার্বত্য চট্টগ্রামের পটিয়া, জলদী, কাসালং, সীতাপাহাড়- এই চারটি ভীষণ সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র বিদেশী কোম্পানির হাতে তুলে দেয়ার তৎপরতার বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানাই।
——————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।