ঢাকায় তিন পাহাড়ি সংগঠনের বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা
পার্বত্য চট্টগ্রামে নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন ও লেখক-প্রকাশক-ব্লগার হত্যার দায়ভার সরকারের
সিএইচটি নিউজ ডটকম
ঢাকা: লেখক প্রকাশক ব্লগার খুন-হামলা-হত্যার হুমকি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারের জারিকৃত ১১ দফা নির্দেশনার মাধ্যমে সেনা দমন-পীড়ন-নির্যাতন-ধরপাকড়ের প্রতিবাদে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন গণতান্ত্রিক সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ আজ শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বিকালে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
“মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার স্বপক্ষে দাঁড়ান, আত্মরক্ষার্থে ছাত্র-যুব-নারীসমাজ সংগঠিত হোন” এই আহ্বানে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক যুবফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাইকেল চাকমা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) এর সংগঠক মিঠুন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সিমন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নিরূপা চাকমা, সংহতি বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লেখক শিবিরের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি এমএম পারভেজ লেনিন এবং ছড়াকার ও প্রগতিশীল বইয়ের প্রকাশক রবিন আহসান। সভা পরিচালনা করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিপুল চাকমা।
সমাবেশ শুরুর আগে ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে দোয়েল চত্বর ঘুরে শাহবাগ পর্যন্ত এক বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে দেশ পরিচালনার কারণেই দেশে লেখক-প্রকাশক-ব্লগার হত্যা ও মুক্তবুদ্ধি-মুক্তচিন্তা চর্চার ওপর আঘাত আসছে এবং তার দায়ভার বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকেই নিতে হবে। বক্তারা আরো বলেন, যারা দেশ পরিচালনা করছে তারা দেশের সার্বিক উন্নতি ও বিকাশের জন্য কাজ করে না, তারা যে কোনোভাবে ও একনায়কসুলভ শাসন কায়েম করে শুধুমাত্র দেশের ক্ষমতার মসনদ আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়।
সমাবেশে বক্তাগণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ১১ দফা নির্দেশনা জারির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাকর্তৃত্ব স্থাপন এবং গণতান্ত্রিকভাবে সভা-সমাবেশ ও বিদেশীদের যাতায়াতের উপর শর্তসহ নিষেধাজ্ঞা প্রদানকে অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক হিসেবে আখ্যায়িত করে অবিলম্বে উক্ত নির্দেশনা প্রত্যাহারের দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার মুখে শুধুমাত্র বলে থাকে যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে তারা শান্তি চায়; কিন্তু আদতে সেখানে তারা ফ্যাসিস্ট শাসন কায়েম করে জাতিসত্তাসমূহকে বিনাশ করারই পরিকল্পনা করে যাচ্ছে। বক্তাগণ বলেন, নামমাত্র ‘অধিকার’ প্রদান করে পার্বত্যবাসীকে ভোলানো যাবে না। বক্তারা পাহাড় ও সমতলে একসাথে লড়াই চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
সমাবেশে লেখক শিবিরের হাসিবুর রহমান বলেন তার সংগঠন জোরালোভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত জনতার সংগ্রামের সাথে থাকবে। এছাড়া তিনি বলেন, শুধুমাত্র ঢাকা শহরের গুটিকয়েক সমস্যা বা ঘটনা নিয়ে নয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা নিয়েও দেশের বিপ্লবী সংগঠনসমূহের সোচ্চার হওয়া দরকার।
ছড়াকার ও প্রকাশক রবিন আহসান বলেন, দীপন হত্যার পরে আজিজ মার্কেটের সিসিটিভি ফুটেজসমূহ আইনশৃংখলা বাহিনীকে দেয়া হয়েছে, কিন্তু হত্যার ১১ দিন পরেও ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। এর মাধ্যমে সরকারের হত্যাকারীদের ধরতে সদিচ্ছা নেই বলেই প্রতীয়মান হয়।
——————-
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।