পার্বত্য চট্টগ্রামে ৫ মাসে ২০ জন পাহাড়ি নারী যৌন নির্যাতনের শিকার
সিএইচটিনিউজ.কম
ডেস্ক রিপোর্ট : পার্বত্য চট্টগ্রামে গত ৫ মাসে (জানুয়ারি – মে ২০১৫) কমপক্ষে ২০ জন পাহাড়ি নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৯ জন এবং ধর্ষণ প্রচেষ্টার শিকার হয়েছেন ১১ জন।
যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীদের মধ্যে ১০ ও ১১ বছর বয়সী শিশু ২ জন, ১ জন বাক প্রতিবন্ধী এবং ১ জন গর্ভবতী নারী রয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য দ্বারা ধর্ষণ প্রচেষ্টার শিকার হয়েছেন একজন।
নিজস্ব সূত্রে ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১৪ জানুয়ারি রাঙামাটির কাউখালীতে ২য় শ্রেণীতে পড়ুয়া এক মারমা শিশু আইয়ুব আলী কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়। ২৭ জানুয়ারি খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ব্রিজ নির্মাণ শ্রমিক মো: হাবিব কর্তৃক ধর্ষণ প্রচেষ্টার শিকার হয় এক ত্রিপুরা কিশোরী। ২৮ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি শহরের পানখাইয়অ পাড়ায় দেববিকাশ বড়ুয়া কর্তৃক এক মারমা নারী ধর্ষিত হয়। একই দিন বান্দরবানের রুমায় সালাউদ্দিন ও বাদশা মিয়া কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয় এক বম কিশোরী।
১ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বর্মাছড়ি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ফটিকছড়ির কর্ণফুলি চা বাগান এলাকায় লাকড়ি আনতে গেলে মোঃ সাহাবুদ্দিন নামে এক বাঙালি কর্তৃক ধর্ষণ প্রচেষ্টার শিকার হয় এক চাকমা গৃহবধু। একই দিন লক্ষ্মীছড়ি ইউনিয়নের মোষকাবা নামক স্থানে ১৮ ও ২০ বছর বয়সী দুই চাকমা নারী মোঃ ইলিয়াস (১৮) ও মো: জিলহ্বাজ (২৩) কর্তৃক ধর্ষণ প্রচেষ্টার শিকার হয়। ২ ফেব্রুয়ারি দীঘিনালা উপজেলার মেরুংয়ে মো: বাশেদ মিয়া কর্তৃক ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক চাকমা কিশোরী ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়। ১০ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার বাটনাতলী ইউনিয়নের ছুদুরখীল গ্রামে বাক প্রতিবন্ধী ১৬ বছর বয়সী এক মারমা কিশোরীকে মো: শাহ আলম ধর্ষণ প্রচেষ্টা চালায়। ২৪ ফেব্রুয়ারি লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বর্মাছড়ি ইউনিয়নের বটতলীতে মো: সিরাজ কর্তৃক এক মারমা নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটে।
৫ মার্চ রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়ায় এক গর্ভবতী মারমা নারী মো: সাদ্দাম হোসেন ও তার সহযোগীদের কর্তৃক গণধর্ষণের শিকার হয়। ৯ মার্চ দীঘিনালায় ১০ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক চাকমা কিশোরীকে কবাখালী ইউপি’র ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ সোহেল ও তার ৪ সহযোগী গণধর্ষণ করে। ২০ মার্চ রাঙামাটির জুরাছড়িতে এসএসসি পরীক্ষার্থী এক পাহাড়ি কিশোরী ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণের শিকার হয়। ২২ মার্চ রাঙামাটির বাঙ্গালহালিয়ায় ১৪ বছরের এক মারমা মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়।
২৭ এপ্রিল খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার দুল্যাতলী ইউনিয়নের মঘাইছড়িতে ২০ বছর বয়সী এক চাকমা নারী সেটলার মো: সাইফুল ইসলাম (২৬) কর্তক ধর্ষণের শিকার হয়।
৩ মে খাগাড়ছড়ির গুইমারা থানার নাক্যাপাড়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মো: সুজন কর্তৃক ১৬ বছর বয়সী এক চাকমা কিশোরী ধর্ষণ প্রচেষ্টার শিকার হয়। একই দিন কাপ্তাইয়ে বাঙালি কর্তৃক ৩৫ বছর বয়সী এক পাহাড়ি নারীকে গণধর্ষণ করা হয়। ৭ মে রামগড়ের কালাপানি গ্রামে ব্রিজ নির্মাণ শ্রমিক মো: সবুজ ২৬ বছর বয়সী এক পাহাড়ি গৃহবধুকে ধর্ষণ প্রচেষ্টা চালায়। ১০ মে মাটিরাংগা উপজেলার বর্ণাল ইউনিয়নের থুইহ্লা পাড়ায় ১০ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক পাহাড়ি(মারমা) কিশোরী স্কুলে যাবার পথে জনৈক সেটলার কর্তৃক ধর্ষণ প্রচেষ্টার শিকার হয়।
এছাড়া ৩০ মার্চ রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজারে ৪৫ বছর বয়সী এক চাকমা নারী বাঙালি ব্যবসায়ী কর্তৃক শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন।
——————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।