পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে আওয়ামী লীগ সরকার উগ্রসাম্প্রদায়িক নীতি অনুসরণ করছে

0

সিএইচটি নিউজ ডটকম
Dhaka protest1ঢাকা: পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন গণতান্ত্রিক সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে শুক্রবার (৭ আগস্ট) সকালে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে আওয়ামী লীগ সরকার উগ্রসাম্প্রদায়িক নীতি অনুসরণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে সরকারের ১১ দফা অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিসহ রাষ্ট্রীয় বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় বিজিবি ক্যাম্প স্থাপনের নামে ও সেটলারদের লেলিয়ে দিয়ে জুম্ম জনগণের ভুমি জবরদখল, আন্দোলনকামী সংগঠন ইউপিডিএফ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার-নির্যাতন ও সরকারের জুম্ম জাতিসত্তাগত পরিচয় মুছে দেয়ার প্রতিবাদে তিন সংগঠন উক্ত সমাবেশ ও প্রতিবাদ বিক্ষোভের আয়োজন করে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক যুবফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাইকেল চাকমা। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) এর সংগঠক মিঠুন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় সভাপতি থুইক্যচিং মারমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রিনা চাকমা।

সমাবেশে বক্তারা বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে অনুসৃত নীতিকে চরম উগ্র জাতিবিদ্বেষী ও সাম্প্রদায়িক হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বক্তাগণ বলেন, আওয়ামীলীগ মুখে স্বাধীনতার স্বপক্ষের সরকার হিসেবে নিজেকে জাহির করলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতাকারী পাকিস্তানপন্থী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর উগ্রসাম্প্রদায়িক নীতি কৌশলই অবলম্বন করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের লড়াই সংগ্রামকে দমন করার জন্য সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে জামায়াতপন্থীদেরই পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে বলে সভায় নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন।Dhaka protest

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার সম্পূর্ণ গায়ের জোরে ও গণতান্ত্রিক রীতিনীতিকে তোয়াক্কা না করে গত ২২ জানুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে ১১ দফার একটি সরকারী নির্দেশনা জারি করেছে। এই সরকারী সিদ্ধান্তকে বক্তারা চরম ফ্যাসিবাদী সিদ্ধান্ত হিসেবে অভিহিত করেন। বক্তারা বলেন, এই ১১ দফা নির্দেশনা বা সরকারী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকার তিন পার্বত্য জেলায় ২৪ পদাতিক ডিভিশনকে ’সার্বিক আইন শৃংখলা’র দায়িত্ব প্রদান করে সেখানে কার্যত সামরিক বাহিনীর শাসন জারি করেছে। এই সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক হবার পরেও সরকার গায়ের জোরে ও জামায়াতপন্থীদের খুশী করার জন্যই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

উক্ত ১১ দফার মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলে নতুন করে সেনা চেকপোস্ট সক্রিয় করা, বিদেশীদের পার্বত্যাঞ্চলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, ’চুক্তি বিরোধীদের’ দমনের নামে ইউপিডিএফকে দমন করা ও  পুলিশবাহিনীতে নিযুক্ত প্রাক্তন শান্তিবাহিনী কর্মীদের পার্বত্য অঞ্চলে চাকুরী করতে না দেয়ার চরম বর্ণবিদ্বেষী সিদ্ধান্তসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনমতকে গুরুত্ব না দিয়ে ও সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

নেতৃবৃন্দ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে সরকারের ফ্যাসিবাদী ও বর্ণবাদী চরম উগ্র জাতিবিদ্বেষী নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য, প্রতিবাদ করার জন্য দেশের সচেতন জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

এছাড়া বক্তারা সমাবেশ থেকে সাম্প্রতিককালে আটককৃত পিসিপি-ডিওয়াইএফ-ইউপিডিএফএর সকল কর্মীর মুক্তি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ১১ দফা সিদ্ধান্ত বাতিল, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা-সরকারী সহায়তায় ভুমি বেদখল কার্যক্রম বন্ধ, বাবুছড়ায় বিজিবি সদর দপ্তর অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে উচ্ছেদের শিকার ২১ পরিবারকে নিজ বাস্তুভিটায় পুনর্বাসন, জুম্ম অধ্যুষিত এলাকায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পুলিশ ফাড়ি স্থাপন বন্ধ করাসহ বিভিন্ন দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরেন।

সমাবেশ শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করা হয়।
—————–

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More