পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপু মণি’র ইতিহাস বিকৃতমূলক বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে ইউপিডিএফ
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিএইচটিনিউজ.কম
পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলনরত পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপু মণি‘র দেয়াইতিহাস বিকৃতমূলক বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে। ইউপিডিএফ- এর সভাপতি প্রসিত খীসা আজ ২৭ জুলাই বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপু মণি কর্তৃক গতকাল কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক এবং টিভি চ্যানেলের নির্বাহী প্রধানগণের নিকট সংখ্যালঘু জাতিসমূহের জাতীয় পরিচিতি বিষয়ে প্রদত্ত বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ মাধ্যমে এক বিবৃতিতে দিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, সরকার হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার ল্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস বিকৃত করছে।
বিবৃতিতে ইউপিডিএফ নেতা পররাষ্ট্রমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ আখ্যায়িত করে শুধু অসম্মানই করেন নি, ইতিহাসেরও বিকৃতি ঘটিয়েছেন বলে মন্তব্য করে আরও বলেছেন, উয়ারী বটেশ্বরে আবিষকৃত চার হাজার বছরের প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শন বাংলার জনগণের গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষী বহন করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদি বাসিন্দা নিরূপণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপু মণি‘র উয়ারী বটেশ্বরের উদাহরণ প্রাসঙ্গিক নয়। কারণ পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ কখনই গোটা বঙ্গদেশকে নিজেদের আদিনিবাস বলে দাবি করে নি এবং করছে না। তাই ডা. দিপু মণি‘র ৯৮.৮ ভাগ বাঙালিই বাংলাদেশের আদিবাসী, এ প্রসঙ্গও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে উল্লেখের প্রয়োজন নেই। তার এও জানা উচিত ভারত পাকিস্তান বিভক্তির সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে দুই ভাগের কম অধিবাসী ছিলেন বাঙালি সম্প্রদায়ের, ৯৮ ভাগের অধিক অধিবাসী ছিলেন পাহাড়ি। পার্বত্য চট্টগ্রামে মাত্র কয়েক দশক আগের পাহাড়ি-বাঙালি জনসংখ্যার অনুপাতই বলে দেয় এ অঞ্চলের আদি বাসিন্দা কারা৷ মূলত চাকমা রাজা ধরম বক্স খাঁ‘র আমলেই হাল চাষের জন্য প্রথম সমতল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি চাষী নেয়া হয়েছিল।
ইউপিডিএফ নেতা বিবৃতিতে আরও বলেন, কূটনৈতিক মিশন প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমেরসম্পাদকদের নিকট ব্রিফিং দেয়ার সময় তিনি কেবল পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং পাহাড়ি জনগণের কথাই বলেছেন। সিলেট, ময়মনসিং, পটুয়াখালি, রাজশাহী অঞ্চলে বসবাসরত ভিন্ন ভাষা-ভাষী জাতিসমূহের অস্তিত্বের কথা তিনি বেমালুম চেপে গিয়ে প্রকারান্তরে তাদের অবজ্ঞা করেছেন।
বিবৃতিতেপ্রসিত খীসা“’৯৭ সালে সম্পাদিত পার্বত্য চুক্তিতে সই দিয়ে ‘উপজাতি‘ শব্দটির বৈধতা দেয়া হয়েছে”– পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্যেরতীব্রআপত্তি জানান এবং তাকে স্মরণ করে দিয়ে বলেন, ‘উপজাতি‘ শব্দসহ বহু অসঙ্গতির কারণে চুক্তির পরদিনই তিন গণতান্ত্রিক সংগঠন পাহাড়ি গণপরিষদ-পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন কতৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সড়কদ্বীপে চুক্তির কপি পোড়ানো হয়েছিল।