পার্বত্য ভূমি কমিশনের একতরফা শুনানী কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে খাগড়াছড়িতে নির্বাচিত জুম্ম জনপ্রতিনিধি সংসদের মানববন্ধন
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের একতরফা ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির শুনানী (বিচারিক) কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে নির্বাচিত জুম্ম জনপ্রতিনিধি সংসদ খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার খাগড়াছড়ি জেলা সদরের মহাজন পাড়ায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন নির্বাচিত জুম্ম জনপ্রতিনিধি সংসদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি ও মহালছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সোনারতন চাকমা। এতে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন জুম্ম শরণার্থী কল্যাণ সমিতির সহ সভাপতি অজিত বরণ চাকমা, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিরাপদ তালুকদার, উপজাতীয় ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি রবি শংকর তালুকদার, ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব চাকমা, নির্বাচিত জুম্ম জনপ্রতিনিধি সংসদের খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি পৌরসভার কাউন্সিলর মিলন দেওয়ান মনাঙ ও জেএসএস(এমএন লারমা) সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি রূপম চাকমা। মানববন্ধন শেষে মহাজন পাড়া থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল চেঙ্গী স্কোয়ার হয়ে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা মাঠে এসে শেষ হয়।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যান একতরফাভাবে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির শুনানীর কার্যক্রম শুরু করার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি সমস্যাকে আরো বাড়াতে চাচ্ছেন। ভূমি কমিশন চেয়ারম্যানের এ ধরনের অগণতান্ত্রিক কার্যক্রম কিছুতেই মেনে নেয়া হবে না। ইতিপূর্বেও এ ধরনের স্বেচ্ছাচারি কার্যক্রমের বিরোধিতা করে তার অপসারণ দাবি করা হয়েছে। পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক ভূমি কমিশন আইন সংশোধনপূর্বক পার্বত্য ভূমি সমস্যার সমাধান না করে যদি চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত সরকারিভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে আরো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির আগে পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি অধিকার নিশ্চিত নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে পাহাড়িদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে। কারণ পাহাড়িরা যুগ যুগ ধরে প্রথাগত পদ্ধতিতে নিজেদের ভূমি ভোগ-দখল করে আসছে।
বক্তারা বলেন, ভূমি কমিশনের অগণতান্ত্রিক ধারা সংশোধন না করে চেয়ারম্যান একক মতাবলে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি করতে চাচ্ছেন। এর মাধ্যমে তিনি কমিশনকে আরো বিতর্কিত করেছেন। এই বিতর্কিত ভূমি কমিশনের অধীনে কিছুতেই পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি হতে পারে না।
বক্তারা ভূমি কমিশনের অগণতান্ত্রিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা অবিলম্বে ভূমি কমিশন কর্তৃক জারিকৃত নোটিশ বাতিল করে শুনানী কার্যক্রম বন্ধ করা, কমিশনের অগণতান্ত্রিক ধারা সংশোধন ও ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যানকে অপসারণ, সেটলারদের দেয়া অবৈধ ভূমি বন্দোবস্তী বাতিল ও পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি আইনের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানান।