পাহাড়িদের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানিকছড়িতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
সিএইচটি নিউজ ডটকম
মানিকছড়ি : চোক্যাবিল গ্রামে পাহাড়িদের উপর হামলাকারী সেটলারদের গ্রেফতার, আটক দুই নিরীহ গ্রামবাসী রিপ্রুচাই মারমা ও উষামং মারমার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানিকছড়ি-রামগড় ভূমি রক্ষা ছাত্র-যুব-নারী কমিটির ব্যানারে মানিকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী। সেনাবাহিনী বাধা দেয়ার চেষ্টা করলেও বাধা উপেক্ষা করে এলাকাবাসী এই মিছিল-সমাবেশ করে।
আজ রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় মানিকছড়ি উপজেলার গবমারা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন সুইনুমং মাষ্টার, কলেজ ছাত্র উষাঅং মারমা ও স্কুল ছাত্রী উক্রাসিং মারমা প্রমুখ। সমাবেশে চার শতাধিক ছাত্র-যুবক-নারী ও এলাকার লোকজন অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে সেটলার বাঙালিরা সেনা সহযোগীতায় মনাদং পাড়া, বকরি পাড়া ও হাফছড়ি এলাকায় পাহাড়িদের জায়গা-জমি বেদখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণের প্রতিরোধের মুখে সেনা-সেটলারদের ষড়যন্ত্র, নীলনক্সা ভেস্তে গেলে তারা আবার নতুন চক্রান্ত নিয়ে মাঠে নেমেছে। তারই অংশ হিসাবে মানিকছড়ির লাপাইদং পাড়ায় গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে পরিকল্পিতভাবে আবদুল মতিন নামে এক বাঙালিকে হত্যা করে উল্টো পাহাড়িদের উপর দোষ চাপাচ্ছে। এর মাধ্যমে তারা সাম্প্রদায়িক হামলা চালিয়ে পাহাড়িদের নিজ বসতভিটা ও জায়গা-জমি থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করছে। আব্দুল মতিন হত্যার ঘটানা সেনা সেটলারদের সাজানো নাটক ছাড়া আর কিছু নয় বক্তারা উল্লেখ করেন।
বক্তারা অভিযোগ করে আরো বলেন, সেনা-সেটলাররা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আব্দুল মতিনের হত্যার ঘটনাকে পুঁজি করে নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর জিয়ানগর গুচ্ছগ্রামের মো: মোজাম্মেলের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জনের একদল সেটলার চোক্যাবিল গ্রামে পাহাড়িদের উপর হামলা চালিয়ে ৪ জনকে গুরুতর আহত করেছে। এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর লাপাইদং পাড়ার বাসিন্দা রিপ্রুচাই মারমা ও উষামং মারমাকে সেটলারদের লেলিয়ে দিয়ে মারধর ও পুলিশের মাধ্যমে আটক করে মিথ্যা হত্যা মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
বক্তারা চোক্যাবিল গ্রামে ঢুকে পাহাড়িদের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, সেনাবাহিনী ও প্রশাসন সবসময় সেটলারদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে তাদেরকে পাহাড়িদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিচ্ছে। যার কারণে সেটলাররা বার বার পাহাড়িদের জায়গা-জমি জোরপূর্বক বেখলের চেষ্টা করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। উপরন্তু পাহাড়িদেরকেই ধরপাকড়, হয়রানি, ঘরবাড়ি তল্লাশিসহ নানা নিপীড়ন-নির্যাতন করা হচ্ছে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে পাহাড়িদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলার সাথে জড়িত সেটলারদের গ্রেফতার, আটক নিরীহ গ্রামবাসী রিপ্রুচাই মারমা ও ঊষামং মারমাকে নিঃশর্ত মুক্তি, সেটলারদের দিয়ে পাহাড়িদের জায়গা-জমি বেদখল বন্ধ করা, নিরাপত্তার নাম দিয়ে এলাকায় নির্মিত সেনা ছাউনী প্রত্যাহার, আবদুল মতিন হত্যার মতো সাজানো নাটক বন্ধ করা এবং গ্রামে গ্রামে সেনা তল্লাশি, হয়রানি ও অন্যায় ধরপাকড় বন্ধের জোর দাবি জানান।
——————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।