পিসিপি’র খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ শাখার কাউন্সিল
খাগড়াছড়ি : “পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সংগঠিত হও ছাত্র সমাজ, সার্টিফিকেট ও চাকুরী অর্জনের শিক্ষা ব্যবস্থায় সীমাবদ্ধ না থেকে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনে সামিল হোন” শ্লোগানকে সামনে রেখে ২০ শে মার্চ ২০১৬, রবিবার সকাল ১০টায় খাগড়াছড়ি সদরে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ শাখার ৬ষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কাউন্সিলে দেবেশ চাকমার সভাপতিত্বে ও জুয়েল চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, পিসিপির জেলা কমিটি’র সাংগঠনিক সম্পাদক তপন চাকমা, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি সোনায়ন চাকমা, জেলা সদস্য জেসীম চাকমা প্রমূখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সদস্য প্রতিপন চাকমা।
প্রথম অধিবেশনের শুরুতে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পুরাতন কমিটির বিলুপ্তি ও নতুন কমিটি ঘোষণা করেন টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি দেবেশ চাকমা। শপথ বাক্য পাঠ করান তপন চাকমা। জুয়েল চাকমাকে সভাপতি, প্রতিপন চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক, ক্লিনটন চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে কার্যকরী ১৭সদস্যসহ ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
দ্বিতীয় অধিবেশনে নতুন কমিটির সভাপতি জুয়েল চাকমার সভাপতিত্বে পরিচালনা করেন প্রতিপন চাকমা। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি রতনস্মৃতি চাকমা ও বিদায়ী কমিটির সভাপতি দেবেশ চাকমা।
সোনায়ন চাকমা বলেন, সমাজ ও জাতি গঠনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা থাকতে হবে। কেবল পাঠ্যপুস্তকে সীমিত সিলেবাসে সীমাবদ্ধ না থেকে জুম্ম জাতির অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে যোগদান করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কতিপয় বাঙ্গালী শিক্ষকের উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজকেই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় স্কুল-কলেজে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানিসহ নানা হয়রানির ঘটনা ঘটছে। অথচ প্রশাসন ও নিরাপত্তাবাহিনী এই বিষয়গুলো বরাবরই এড়িয়ে চলেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে যথাযথ শিক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে সামিল হওয়ার জন্য ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান জানাই।
রতন স্মৃতি চাকমা বলেন, ছাত্রসমাজের মনে নতুন দিগন্তের আশার সঞ্চার করতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ সর্বাত্মকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ছাত্রসমাজ নিপীড়নের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠছে। কোন মানবতাবিরোধী শক্তি আমাদের অস্তিত্ব ধ্বংস করতে পারবে না। শাসকশ্রেণীর অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের অবশ্যই ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। শাসকশ্রেণী রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম কায়েম করেছে, আমাদের উপর বাঙালি জাতীয়তাবাদ চাপিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরূপ সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে উগ্রসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বৌদ্ধ বিহার, গীর্জা, মন্দিরসহ সংখ্যালঘু জাতিসত্তার স্থাপত্য ধ্বংস করেই চলেছে। তাই আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। তিনি ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, সভ্যতা, ইতিহাস রক্ষার জন্য ছাত্রসমাজের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
সভাপতি জুয়েল চাকমা সকল প্রগতিশীলদের কাছে সহযোগিতা কামনা করে ছাত্রসমাজের স্বার্থের সংরক্ষণ ও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
এছাড়া বক্তারা, জুম্ম জাতির প্রকৃত অধিকার ও আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।
—————-
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।