পূর্ণস্বায়ত্তশাসন উত্থাপন দিবসে খাগড়াছড়িতে তিন সংগঠনের আলোচনা সভা

0

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ।। পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দাবি উত্থাপন দিবস উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে তিন সংগঠনের উদ্যোগে ‘প্রতারণা ও জালিয়াতির দলিল “পার্বত্য চুক্তি”: পূর্ণস্বায়ত্তশাসনই মুক্তির পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ ১০ মার্চ ২০২১, বুধবার, দুপুর ১:০০টায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম-এর খাগড়াছড়ি জেলা শাখাসমূহ যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের জেলা দপ্তর সম্পাদক লিটন চাকমা।

হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা শাখার আহ্বায়ক এন্টি চাকমার সঞ্চালনায় সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন ইউপিডিএফ’র খাগড়াছড়ি সদর ইউনিটের সংগঠক অংগ্য মারমা। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক সুনীল ত্রিপুরা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য দয়া সোনা চাকমা।

সভায় অংগ্য মারমা বলেন, পার্বত্য চুক্তির প্রায় দশ মাস আগে ‌‌’৯৭ সালের ১০ মার্চ পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের ডাক ছিল সময়ের দাবি। সে সময় জেএসএস এবং সরকারের মধ্যে চুক্তি হওয়ার যে আভাস পাওয়া যাচ্ছিল তাতে পাহাড়ি গণ পরিষদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ বুঝতে পেরেছিলেন যে, আসন্ন চুক্তিতে সরকার প্রতারণা করতে যাচ্ছে, এতে নিপীড়িত জনগণের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হবে না।

তিনি বলেন, জেএসএস আঞ্চলিক স্বায়ত্তশানের দাবিতে আন্দোলন করলেও শেষ পর্যন্ত তারা মূল দাবি থেকে সরে গিয়ে ’৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকারের সাথে আপোষের মাধ্যমে যে চুক্তি করেছে তাতে তিন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের আশঙ্কাই সত্যি হয়েছিল। সত্যিকার অর্থেই সরকার জেএসএস তথা পাহাড়ি জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে। এখন জেএসএস নিজেই এই প্রতারণা বুঝতে পারছে, তাদের কথাবার্তায় তা প্রতিফলিত হচ্ছে।

অংগ্য মারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নতুন করে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করতে হতো না, যদি পার্বত্য চুক্তির মধ্যে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতো।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা ও নিপীড়িত জনগণের মুক্তির জন্য পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের কোন বিকল্প নেই। জনগণের রাজনৈতিক মুক্তির সনদ হচ্ছে এই পূর্ণস্বায়ত্তশাসন। আর পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আন্দোলনের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে জনগণের অধিকার আদায়। তাই আমরা আপোষহীনভাবে এই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।

অংগ্য মারমা বলেন, শাসকগোষ্ঠী পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আদায়ের এই আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে বহু ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এই আন্দোলনে যুক্ত নেতা-কর্মী-সমর্থকদের বিনা কারণে গ্রেফতার, নির্যাতন, খুন, গুম অব্যাহত রেখেছে। তারপরও আমাদের আন্দোলন থেমে নেই। শত দমন-পীড়নেও এই আন্দোলন স্তব্ধ করা যাবে না বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

বক্তারা আরও বলেন শাসকশ্রেণীর নিপীড়ন-নির্যাতন থেকে মুক্তি ও জনগণের অধিকার আদায়ের আমাদের  লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। জনগণকে সাথে নিয়ে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন জোরদার করতে হবে।

তারা বলেন, একটি প্রতারণামূলক ও দুর্বল চুক্তির কারণেই পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি আজ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এই দানবীয় কবল থেকে মুক্তির একটি মাত্র পথ রয়েছে সেটি হলো সাংবিধানিক গ্যারান্টিসহ পূর্ণস্বায়ত্ত্বশাসন আদায় করা।

সভা থেকে বক্তারা পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আদায়ের এই আন্দোলনে সামিল হওয়ার জন্য জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More