প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে খাগড়াছড়ির বিশিষ্ট নাগরিকরা

0

সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ি: গত ১২ এপ্রিল বিনা কারণে জুম্ম জনগোষ্ঠীসমূহের ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠানে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে খাগড়াছড়ির বিশিষ্ট নাগরিকরা। আজ ২৭ এপ্রিল সোমবার সকালে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

২৩ জন বিশিষ্ট নাগরিকের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপির ২নং পয়েন্টের ক-তে বলা হয়, বৈসাবি হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল জুম্ম জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী সর্ববৃহৎ সামাজিক উৎসব, প্রাণের উৎসব। অদ্ভুত, অচিন্তনীয় ব্যাপার এই শুভ উৎসবকে অর্থাৎ জুম্মদের চিরন্তর আবেগ অনুভূতিকে এবার ক্ষমতার বুটের তলায় নিপিষ্ট করা হলো। এর চাইতে জঘন্য, নিন্দনীয় জুম্ম বিরোধী কর্মকান্ড, জুম্ম নিপীড়নের ঘটনার আর কি হতে পারে?

এই পয়েন্টের গ-তে বলা হয়, …খাগড়াছড়িতে এ উৎসবটি ভালভাবে উদযাপনের জন্য সর্বজনীন বৈসাবি উদযাপন কমিটি কিছু কর্মসূচী গ্রহণ পূর্বক বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করে এবং তার ইতিবাচক সম্মতি ও সদিচ্ছাপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে উক্ত কমিটি কর্মসূচী বাস্তবায়নে নেমে পড়ে। বৈসাবি উৎসবের প্রথম দিনে একটি সরকারী কর্তৃপক্ষ উক্ত কমিটি কর্তৃক আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রাটি নির্মমভাবে পণ্ড করে দিয়ে জঘন্য নজির সৃষ্টি করেছে বৈসাবি উৎসবের উপর এ ধরনের নগ্ন নিষ্ঠুর হামলা অতীতে আর কখনও কোথাও এভাবে ঘটেছে বলে আমাদের জানা নেই। সে দিক থেকে খাগড়াছড়ির এ ঘটনা এক নজির বিহীন ঘটনা, রেকর্ড সৃষ্টিকারী ঘটনা। পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম দমন পীড়নের ইতিহাসে এ ঘটনা এক বিশিষ্ট স্থান দখল করে নিল।

স্মারকলিপিতে বৈসাবি শোভাযাত্রা পণ্ড করে দেয়ার বিষয়ে সরকারী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বক্তব্যের যুক্তি খন্ডন করে  বিস্তারিত ব্যখ্যা দেওয়া হয়েছে।

স্মারকলিপিতে বৈসাবি উৎসব ভণ্ডুল করে দেয়ার ঘটনাটি জরুরি ভিত্তিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখা এবং প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, উৎসব ভণ্ডুলে সরকারের ভিতরে থাকা ছদ্মবেশধারী কুচক্রী মহলটির মুখোশ উন্মোচন করা, উৎসব ভণ্ডুলকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, গ্রেফতারকৃত কলেজ ছাত্র এলটন চাকমাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া সহ ৫ দফা দাবি জানানো হয়েছে।

স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন- বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অনন্ত বিহারী খীসা, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও বৌদ্ধ মৈত্রী কল্যাণ সংঘের সভাপতি বিনোদ বিহারী চাকমা, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুধীন কুমার চাকমা ও অবসরপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক মধু মঙ্গল চাকমা, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ব্রজনাথ রোয়াজা, আদিবাসী সম্প্রীতি মঞ্চের সম্পাদক রবি শংকর তালুকদার, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও বৃহত্তর খবংপুড়িয়ো সমাজ উন্নয়ন কমিটির সভাপতি পুরুষোত্তম চাকমা, পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি অগ্রজ্যোতি স্থবির, পার্বত্য চট্টগ্রাম জুম্ম শরণার্থী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষিত চাকমা, ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সদস্য সচিব দীপায়ন চাকমা, দেওয়ান বাজারের বাজার চৌধুরী যশোবন্ত দেওয়ান, পেরাছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিম্বিসার খীসা, সচেতন নাগরিক সমাজের সভাপতি কিরণ মারমা, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান চঞ্চুমনি চাকমা, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রণিক ত্রিপুরা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সরোজ কুমার চাকমা, খাগড়াছড়ি পৌর কাউন্সিলর মিলন দেওয়ান মনাঙ, পানছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সর্বোত্তম চাকমা, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সম্বোধি ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি প্রজ্ঞাবীর চাকমা, মিলনপুর বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক চম্পানন চাকমা, হুয়াঙ বোইও বা’র সভাপতি অনুপম চাকমা ও ম্রেংমাঅং ক্লাবের সভাপতি কংজ মারমা।

নীচে পুরো স্মারকলিপিটি দেয়া হলো-

Memo to PM1

Memo to PM2

Memo to PM3

Memo to PM4

Memo to PM5

Memo to PM6

—————————-

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More