বর্মাছড়িতে পিসিপি-এইচডব্লিউএফ-এর সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে হামলা: আহত ৩০
লক্ষীছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলাধীন বর্মাছড়িতে জেএসসি ও প্রাইমারী স্কুল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী ও অনিল বাহিনীর সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে হামলা চালালে আনুমানিক ৩০ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন যৌথভাবে আজ ২৫ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার বর্মাছড়ি মাঠে এই সম্বর্ধনার আয়োজন করে।
সকাল সাড়ে এগারটায় অনুষ্ঠান শুরুর মুহুর্তে অনুক্ক চাকমা ও বিলাস চাকমা নামে দুই সন্ত্রাসী আয়োজকদেরকে অনুষ্ঠান না করার জন্য চাপ দেয়৷ পিসিপি ও এইচডব্লিউএফ কর্মিরা এতে প্রতিবাদ জানালে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হাত তোলে। এরপর অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকজন তাদের ওপর চড়াও হয় এবং গণধোলাই দেয়।
এক পর্যায়ে কিছু দূরে থাকা সেনা সদস্যরা সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়ে লোকজনের ওপর বেপরোয়া হামলা চালায়। তারা বন্দুকের বাট দিয়ে নারী পুরুষ যাকে পেয়েছে তাকে আঘাত করে আহত করে।
সকাল থেকে সেনা সদস্যরা অনুক্ক চাকমা ও বিলাস চাকমা নামে উক্ত দুই সন্ত্রাসীকে নিয়ে অনুষ্ঠান স্থলে অবস্থান নিয়েছিল।
সেনারা খাগড়াছড়ি থেকে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা আট জনের একটি সাংস্কৃতিক দলকে লক্ষ্মীছড়ি বাজারে আটকানো হয়৷ তাদেরকে লক্ষ্মীছড়ি থানায় আটক রাখা হয়েছে৷ শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়নি৷ সাংস্কৃতিক দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন তাপস ত্রিপুরা।
অপরদিকে, অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণেচ্ছু ৬০ ব্যক্তিকে বহনকারী দুইটি জিপ সেনা সদস্যরা শুকনাছড়িতে আটকায়৷ তারা সুমন্ত পাড়া ও যতীন্দ্র কার্বারী পাড়া থেকে আসছিলেন।
সেনা হামলায় আহতদের বেশ কয়েক জনের নাম পাওয়া গেলেও নিরাপত্তার স্বার্থে তা প্রচার করা হবে না বলে অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানিয়েছেন।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অংগ্য মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সহসভাপতি নিরূপা চাকমা ও ইউপিডিএফ লক্ষ্মীছড়ি ইউনিটের সংগঠক শুক্ল চাকমা এক বিবৃতিতে উক্ত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তারা বলেন, আজ পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল প্রকার নাগরিক অধিকার সেনাবাহিনীর বুটের তলায় পিষ্ট। পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটা সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান পর্যন্ত আয়োজন করা যায় না৷ লংগুদু হামলার মতো সাধারণ লোকজনের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধেও কোন প্রতিবাদ করা যায় না৷ উগ্র বল প্রয়োগ করে কিংবা নানা ষড়যন্ত্র করে এসব গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীগুলো ভন্ডুল করে দেয়া হয়।
তারা আরো বলেন, এটা আজ স্পস্ট সেনাবাহিনী ও সেটলারদের উগ্র সামপ্রদায়িক অংশটি পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনীতিকে অস্থিতিশীলতা ও সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে৷ তাদের এই চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে।