বাঘাইছড়িতে নানা কর্মসূচিতে ইউপিডিএফের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

0

বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি ।। রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ইউপিডিএফের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়েছে।

ইউপিডিএফ’র বাঘাইছড়ি ইউনিট প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই কর্মসূচি পালন করে।

কর্মসূচির মধ্যে ছিল, দলীয় পতাকা উত্তোলন, অস্থায়ী শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, লেখা প্রদর্শন, দালাল-প্রতিক্রিয়াশীলদের ধিক্কার জানানো, প্রীতিভোজ, আলোচনা সভা ইত্যাদি।

শনিবার (২৬ ডিসেম্বর ২০২০) সকাল ৬টায় দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর পতাকায় স্যালুট প্রদর্শন করা হয়। এ সময় অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অবিচল থাকার দৃঢ় প্রত্যয়ে প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করেন উপস্থিত পার্টির নেতা-কর্মীরা। প্রতিজ্ঞাপত্র পাঠ করান ইউপিডিএফের বাঘাইছড়ি-সাজেক ইউনিটের সমন্বয়ক অক্ষয় চাকমা।

এরপর শহীদদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব চাকমার নেতৃত্বে পার্টির নেতৃবৃন্দ। পরে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটি, সাজেক ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দ ও শহীদ পরিবার্গ অস্থায়ী শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদনের  পর শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

এরপর “ No Full Autonomy No Rest, Long Live UPDF” লেখাটি প্রদর্শন করা হয়।

পরে কুশপুত্তলিকায় তীর নিক্ষেপের মাধ্যমে দালাল, প্রতিক্রিয়াশীল, ভুমিদস্যু, নারী ধর্ষকদের ঘৃণা, ধিক্কার জানানো হয়।

এরপর দুপুরে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত লোকজনকে নিয়ে প্রীতিভোজ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় এক্সন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব চাকমা, বাঘাইছড়ি ও সাজেক ইউনিটের সমন্বয়ক অক্ষয় চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাজেক শাখার সাধারণ সম্পাদক কালো বরণ চাকমা ও পিসিপি’র রাঙামাটি জেলা শাখার তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুমন চাকমা, কলাবনিয়া গ্রামের কার্বারি অরুন জয় চাকমা ও ভাইবোন ছড়া গ্রামের কার্বারী রাখেন প্রবিন চাকমা প্রমুখ।

ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় নেতা সচিব চাকমা বলেন, গঠনলগ্ন থেকে পার্টির ওপর অবর্ণীয় নিপীড়ন-নির্যাতন, তিন শতাধিক নেতা-কর্মী-সমর্থককে খুন, গুমের পরও পার্টি লড়াই-সংগ্রামে অবিচল রয়েছে। জনগণই এ পার্টির মূল শক্তি। জনগণকে সাথে নিয়েই পার্টি পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লড়াই চালিয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, গোটা পার্বত্য চট্টগ্রামকে কারাগারে পরিণক করেছে শাসকগোষ্ঠী। এখানে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন-নির্যাতন থেকে কেউই আর মুক্ত নয়। সমানতালে চলছে কথিত উন্নয়ন ও পর্যটনের নামে জোরপূর্বক ভূমি বেদখল-উচ্ছেদ, নারী নির্যাতন। পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতীয় মুক্তির আন্দোলন দমনে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে মদদ দিয়ে চালানো হচ্ছে খুন-খারাবি, অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এসব অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।

সচিব চাকমা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্তমানে যে নিপীড়নমূলক পরিস্থিতি বিরাজ করছে এর থেকে মুক্তির জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এককভাবে কারোর পক্ষে এই পরিস্থিতি উত্তরণ সম্ভব নয়। সকলে ঐক্যবদ্ধ হলেই তবে নিপীড়িত জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে সফল পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

সভায় ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় কমিটির বার্তা পড়ে শোনান অক্ষয় চাকমা।

এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি বানচাল করতে সেনাবাহিনী ব্যাপক তৎপরতা চালায়। ২৬ ডিসেম্বর সকালে বঙ্গলতলী এলাকায় গিয়ে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এলাকায় এলাকায় টহল জোরদার করা হয় এবং বিভিন্ন স্থান থেকে ইউপিডিএফের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে টাঙানো ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে দেয়া ও খুলে নেয়ার খবর পাওয়া গেছে।
অপরদিকে সাজেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে আটক করা হয়েছে চার গ্রামবাসীকে।

 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত/প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More