বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে ভূমি বেদখলের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে তিন সংগঠনের সমাবেশ

0

চট্টগ্রাম ।। বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচতারকা হোটেলসহ পর্যটন স্থাপনা নির্মাণের নামে ম্রোদের জমি জবরদখল ও তাদেরকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগীরতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ।

আজ মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর ২০২০) বিকেল ৪টায় মিছিল পরবর্তী নগরীর চেরাগী মোড়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নারী সংঘের নগর সভাপতি রেশমি মারমা’র সভাপতিত্বে ও পিসিপি চবি শাখার নেতা সোহেল চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পিসিপি চবি শাখার সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক রোনাল চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নগর শাখার নেতা শ্যামল চাকমা। এছাড়া সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গবেষক রোজিনা বেগম।

বক্তারা বলেন, চিম্বুক পাহাড় ম্রো জাতিসত্তাদের আদি আবাসভূমি। যুগ যুগ ধরে তারা সেখানে বসবাস করে আসছে। কিন্তু সেই পাহাড়ে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করে ম্রোদের জায়গা-বসতভিটা কেড়ে নিয়ে তাদেরকে সেখান উচ্ছেদ করা হচ্ছে।

বক্তারা আরো বলেন, সেনাবাহিনী ও সিকদার গ্রুপ মিলে নতুন করে আবারো সেখানে পাঁচতারকা হোটেলসহ বিলাসবহুল পর্যটন স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যার ফলে ম্রো জাতিসত্তার জনগণ এখন চরম উচ্ছেদ আতঙ্কে রয়েছেন। এই কারণে চিম্বুক পাহাড়ের জমি বেদখলের প্রতিবাদ জানিয়ে ম্রো জাতিসত্তার জনগণ গত ৭ অক্টোবর বান্দরবান জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। স্মারকলিপিতে তারা অভিযোগ করেছেন, ‘সম্প্রতি সেনাবাহিনীর সদস্যরা জরিপ করে বিভিন্ন স্থানে সাইনবোর্ড ও খুটি বসিয়ে দেয়, এতে করে পাড়াবাসীর শত শত বছরের সংরক্ষিত পাড়া বন, শশ্মানভূমি, জুম চাষের জমি, ফলজ-বনজ বাগানের সবকিছু দখলে চলে গিয়েছে। এই অবস্থায় কাপ্রু পাড়া, দোলাপাড়া ও এরাপাড়া উচ্ছেদ হবে। একইভাবে মার্কিনপাড়া, লংবাইতং পাড়া, মেনসিং পাড়া, রিয়ামানাইপাড়া ও মেনরিং পাড়া উচ্ছেদের মুখে পড়েছে। স্থানীয় সেনাক্যাম্প থেকে পাড়ার কার্বারী ও পাড়াবাসীদের ডেকে দখলকৃত জায়গা জমি নিয়ে কোনো কথা না বলার জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছে’।

বক্তারা বলেন, পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য সরকারের নিপীড়নমূলক অন্যতম পদক্ষেপ হচ্ছে পর্যটন, ইকো পার্ক, সেনাক্যাম্প স্থাপনসহ বিভিন্ন উন্নয়নের নামে জমি দখল করে পাহাড়ি জনগণকে নিজ জায়গা-জমি, বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করা। বান্দরবানসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে তাই করা হচ্ছে। আর এ কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে সেনাবাহিনীকে। ফলে পাহাড়িরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছে। প্রতিবাদ করতে গেলেই ধরপাকড়, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি, খুন, গুম করা হচ্ছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।

সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচতারকা হোটেলসহ সকল পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করে ম্রোদের জমি-বসতভিটা ফিরিয়ে দেয়া, বান্দরবানসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বেদখল ও পাহাড়ি উচ্ছেদ বন্ধ করা এবং পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি আইনের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানান।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More