বান্দরবানে ইউপিডিএফের ওপর হামলা পূর্বপরিকল্পিত
বান্দরবান প্রতিনিধি
সিএইচটিনিউজ.কম
বান্দরবান শহরের বালাঘাটায় ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৩ আগষ্ট ইউপিডিএফ নেতাকর্মীদের ওপর সন্তু গ্রুপের হামলা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। অনেকের ধারণা সন্তু লারমা নিজেই এ হামলার চূড়ান্ত নির্দেশ দেন। কারণ সেদিন তিনি পরলোকগত মং রাজাকে শেষ সম্মান জানিয়ে রাঙামাটি চলে যাওয়ার কয়েক ঘন্টা পরই ওই হামলা চালানো হয়।
বালাঘাটার স্থানীয় লোকজন জানান, বালাঘাটা থেকে কিছু দূরে সন্তু গ্রুপের একটি সশস্ত্র দল থাকে। তারা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁধা উত্তোলন করে ও বিভিন্ন সময় লোকজনকে ডেকে হুমকী দেয়। বালাঘাটা থেকে ইউপিডিএফকে উচ্ছেদ করার জন্য গত মাস থেকে তারা কার্যক্রম শুরু করে। সন্তু গ্রুপ বালাঘাটার পাহাড়ি-বাঙালি ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ-বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে কুলুখ্যংছড়া, ৩ নং রাবার বাগান ও জামছড়িতে ডেকে নিয়ে আলোচনা করে এবং বালাঘাটায় ইউপিডিএফের ওপর হামলা করা হলে যাতে ইউপিডিএফকে রক্ষা করতে তাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা দেয়া না হয় সেজন্য তাদেরকে অনুরোধ করে। আবার অনেককে হুমকীও দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের কয়েকজনকে গত ১৫ তারিখ কুলুখ্যংছড়ায় ডাকা হয়। সেখানে জেএসএস (সন্তু গ্রুপ) এর এক নেতা আমাদেরকে বলেন তারা বালাঘাটা দখল করতে চান। এজন্য সেখানে ইউপিডিএফ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হবে। তিনি অনুরোধ করেন যখন হামলা করা হবে তখন যেমন আমরা নিরপে থাকি। আমি তাকে বলি, ‘গণতান্ত্রিকভাবে কাজ করার অধিকার সবার আছে। আপনারা সেভাবে কাজ করেন, বালাঘাটায় আসেন। আমরা সহযোগিতা দেবো। কিন্তু অনর্থক মারামারি করতে যাওয়া ঠিক হবে না।‘ এ কথা বলার পর উক্ত জেএসএস নেতা আমাকে চোখ রাঙিয়ে হুমকী দেন।
সেদিন কী ঘটেছিল?
সেদিন ২৩ আগষ্ট বৃহষ্পতিবার সন্তু লারমা বান্দরবানে আসেন পরলোকগত রাজা অংশৈপ্রু চৌধুরীর প্রতি শেষ সম্মান জানানোর জন্য। এ সময় সন্তু লারমার বহু লোকজন বান্দরবান শহরে জড়ো হয়। সন্তু লারমা তাদের সাথে একান্তে আলোচনা করেন। ধারণা করা হয় এ সময় তিনি তাদেরকে বালাঘাটা দখলের চূড়ান্ত নির্দেশ দেন। তিনি রাজাকে দেখে বিকেল ৩টার দিকে রাঙামাটি ফিরে যান। তার চলে যাওয়ার কয়েক ঘন্টা পরই সন্তু গ্রুপের ৩০-৩৫ জন লোক ৫টা – সাড়ে ৫টার দিকে গাড়িতে করে বালাঘাটায় আসে এবং দুটি স্পটে অবস্থান নেয়: ইউপিডিএফের অফিসের কাছে ও তিন রাস্তার মোড়ে। তারা বান্দরবান শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে আসে, কুলুখ্যংছড়ার দিক থেকে নয়। তাদের হাতে ছিল লাঠি, গুলতি (কান্তা) ও দা। গাড়িতে করে তারা ইটপাটকেলও নিয়ে আসে। গাড়ি থেকে নামার পর পরই তারা ইউপিডিএফের নেতাকর্মীদের খুঁজে খুঁজে ধাওয়া করতে থাকে। আধা ঘন্টা থেকে পৌনে এক ঘন্টা পর্যন্ত তারা গুলতি মেরে ও ইটপাটকেল নিপে করে ধাওয়া করতে থাকে। ইউপিডিএফ নেতাকর্মীরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যে যেদিকে পারে পালিয়ে আত্মরার চেষ্টা করে। অনেকে দোকানে ঢুকে পড়ে। এ সময় সেখানে অবস্থানরত ৪ পুলিশ সদস্য নির্বিকার দাঁড়িয়ে থাকে।
ইউপিডিএফের সদস্য বিক্রম তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘আমি পুলিশের পাশে একটি দোকানে ঢুকে পড়ি। সন্তু গ্রুপের লোকরা দোকানে এসে আমাকে বের করে দেয়ার জন্য দোকানদারকে হুমকী দেয়। অথচ তখন পুলিশ হামলা রোধ করতে কিছুই করেনি।‘
ইউপিডিএফ বান্দরবান ইউনিটের প্রধান সংগঠক ছোটন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা বলেন সন্তু গ্রুপ অতর্কিতভাবে ওই হামলা চালায়। ‘হামলা শুরু হওয়ার পর পৌনে এক ঘন্টা পর্যন্ত আমি কিছুই জানতাম না। পরে একজন ফোনে হামলার কথা জানালে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে অর্থাৎ বাজারে যাই। গিয়ে দেখি সব ফাঁকা, দোকানপাট বন্ধ। সন্তু গ্রুপের লোকজন লাঠিসোটা ও দা বল্লম হাতে উত্তেজিত হয়ে শ্লোগান দিচ্ছিল: ‘ইউপিডিএফের মা‘রে ..(অশ্লীল ভাষা) ‘, ‘ছোটন্যার লাশ চাই‘, ‘ছোটন্যার ঘর আক্রমণ কর‘ ইত্যাদি। আমাদের ছেলেরা যে যেদিকে পারে আশ্রয় নিয়েছে। এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং অনেকে কান্নাকাটি করছে।‘
‘আমাকে দেখেই সন্তু গ্রুপের লোকরা এক জায়গায় জড়ো হয়ে আমাকে ল্য করে বৃষ্টির মতো ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। গুলতিও মারে। মাঝখানে ছিল ৪জন পুলিশ। আমি তাদেরকে বলি আক্রমণকারীদের ঠেকাতে, কারণ সন্তুর লোকজন এখানে খুনোখুনি করতে এসেছে। কিন্তু তারা কিছুই করেনি। মনে হয় তারা হামলার দৃশ্য উপভোগ করছিল।
‘এত আক্রমণের মুখেও আমি পালিয়ে যাইনি। আমি অনেকটা একা। দোকানদারা পর্যন্ত দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যায়। তখন সন্ধ্যা হয়ে আসছিল। একটা গুলতির গুলি আমার ঘাড়ে লাগে, এতে যথেষ্ট আঘাত পাই। এছাড়া হাতে ও পায়ে ৪টা ইট আঘাত করে। বাঙালিদের দোকানেও ইটপাটকেল পড়ে।‘
ছোটন ও অন্যরা জানান, হামলাকারী সন্তু বাহিনী ইউপিডিএফের অফিসের তালা ভাঙার চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যর্থ হয়।
জনতার প্রতিরোধ
ছোটন আরো বলেন, ‘হামলাকারীরা প্রায় পুরো বাজার দখলে নেয়। আমি সরে গেলেই সব শেষ, তারা সফল হবে। তাই তারা আমাকে ধরার জন্য এগিয়ে আসছিল। চরম উত্তেজনা। দুই এক সেকেন্ডের মধ্যে ধরে ফেলবে – এই অবস্থায় চিৎকার দিয়ে চারদিক থেকে বাধ ভাঙা জোয়ারের মতো লোকজন বেরিয়ে এসে হামলাকারী সন্তু গ্রুপের লোকদের ধাওয়া করে।‘
এরপর পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যায়। ধাওয়া খেয়ে সন্তু গ্রুপের লোকজন কুলুখ্যংছড়ার দিকে পালিয়ে যায়। জনতা তাদেরকে আধা কিলোমিটার পর্যন্ত তাড়িয়ে দেয় ও একজনকে ধরে ফেলে। তাকে বাজারে নিয়ে এসে আচ্ছা করে গণধোলাই দেয়। ইউপিডিএফের বিক্রম তঞ্চঙ্গ্যা তাকে রা না করলে লোকজন হয়তো তাকে মেরে ফেলতো। পরে জনতা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
কাজল নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা চিৎকার দিয়ে বের না হলে জেএসএসের (সন্তু গ্রুপ) লোকজন ছোটনদাকে মেরে ফেলতো অথবা ধরে নিয়ে যেতো।‘
সেনা-পুলিশ মোতায়েন ও গ্রেফতার
হামলার পর হাজার হাজার মানুষ বালাঘাটা বাজারে জড়ে হয়। পুলিশ, আর্মি ও সাংবাদিকরাও আসেন। রাত ৮টার পর পুলিশ ও আর্মি ধরা পড়া সন্তু গ্রুপের লোককে নিয়ে বালাঘাটার তিন কিলোমিটার পূর্বে কুলুখ্যংছড়ার দিকে রওনা দেয়। সেনাদের আগে একটি গাড়িতে করে সন্তু গ্রুপের অন্য একটি গ্রুপ কুলুখ্যংছড়ায় অবস্থান নেয়। ধারণা করা হয়, পুনরায় হামলার প্রস্তুতির জন্য তারা বান্দরবান সদর থেকে সেখানে গিয়েছিল।
কুলুখ্যংছড়ায় গিয়ে সেনা-পুলিশ সন্তু গ্রুপের ২৭জনকে আটক করে নিয়ে আসে এবং এরপর ৯টার দিকে বালাঘাটায় ইউপিডিএফ কর্মী বিক্রম তঞ্চঙ্গ্যা, সাইচিং মারমা ও প্রতীম চাকমাকে গ্রেফতার করে।
ছোটন কান্তি বলেন, ‘আমরা হামলার শিকার হলাম, আমাদের ওপর আক্রমণ করা হলো, পালিয়ে গিয়ে আমাদের লোকজন কোনমতে জানে রক্ষা পেয়েছে। তারপও কেন আমাদের কর্মীদের ধরা হচ্ছে তা জিজ্ঞেস করলে এক পুলিশ অফিসার বলেন যে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য কৌশল হিসেবে এটা করা হচ্ছে। কেবল এক পক্ষকে ধরলে তারা আরও উত্তেজিত হতে পারে।‘ কিন্তু সেটা অন্যায়। পুলিশের কৌশলের বলী হতো হলো ইউপিডিএফকে। ইউপিডিএফ এটাকে তাদের ওপর ‘ডাবল হামলা‘ বলে অভিহিত করেন।
সন্তু গ্রুপের সোর্স আটক
বুদ্ধ সেন তঞ্চঙ্গ্যা নামে সন্তু গ্রুপের এক সোর্স সেখানে উপস্থিত ছিল। ধাওয়া খাওয়ার পর সন্তু গ্রুপের লোকজন তাকে মোবাইলে এসএমএস পাঠায়: ‘তুলি চলে যাও, আমরা বালাঘাটায় আরও আসবো, ছোটনকে মেরে যাবো। তুমি সরে যাও।‘ জনতা তাকে ওই ম্যাসেজসহ ধরে ফেলে এবং মোবাইলসহ পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে অবশ্য ইউপিডিএফ তাদের কর্মীদেরসহ তাকেও থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে।
কুলুখ্যংপাড়ার কার্বারী যেভাবে আহত হন
হামলার সময় সন্তু গ্রুপের নিক্ষিপ্ত ইটের আঘাতে আহত হন কুলুখ্যংপাড়ার কার্বারী চিকন্যা চাকমা। তিনি ছোটনের পেছনে কিছুটা দূরে ছিলেন। জানা যায় তিনি আসলে হামলা বন্ধের চেষ্টা করতে বালাঘাটায় গিয়েছিলেন। কিন্তু ঘটনা দ্রুত ঘটে যাওয়াতে তিনি কিছুই করতে পারেননি। সন্তু গ্রুপের লোকজন মুহুর্মূহু ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গুলতি মারলে একটি তার মাথায় আঘাত করে। পরে সুফল তঞ্চঙ্গ্যা তাকে স্কুটারে করে হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। সন্তু গ্রুপ তাকে দিয়ে ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে মামলা করানোর চেষ্টা চালায় কিন্তু তিনি কারো বিরুদ্ধে মামলা করেননি।
বন্ধু যখন শত্রু
সন্তু গ্রুপের সাথে হামলায় অংশ নেন ছোটন কান্তি চাকমার স্কুল ও কলেজ জীবনের বন্ধু কুলুখ্যংছড়া গ্রামের দয়া রঞ্জন চাকমা। পুলিশ তাকেও গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। ছোটন চাকমা বলেন, ‘আমি হামলার পরদিন থানায় গিয়ে তাকেও দেখতে পাই। তাকে আমি প্রশ্ন করি, মারামারি করে কী লাভ হলো? সে বলে সে পরিস্থিতির শিকার। আমি বললাম তারা কেন এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে না। সে জানায় যে প্রতিবাদ করলে সন্তু গ্রুপ তাদেরকে মেরে ফেলবে।‘
সকল পরে সাথে আলোচনা করে বোঝা গেছে, যারা হামলা করতে আসে তারা সবাই নিজের ইচ্ছায় আসেনি। অনেকে চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে, আবার অনেকে টাকা ও বিভিন্ন প্রলোভনে পড়ে হামলায় অংশ নেয়।
জেএসএস এর বক্তব্য
হামলা প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সন্তু গ্রুপের এক নেতা বলেন, ঘটনার দিন তাদের কয়েকজন কর্মী বালাঘাটায় বল কিনতে যায়। তাদেরকে ইউপিডিএফ সদস্যরা আটক করে রাখলে তাদেরকে ছাড়িয়ে আনতে অন্যরা হামলা করতে যায়।
কেন পুলিশ নিয়ে আটককৃতদের উদ্ধার করতে যাওয়া হয়নি প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন উত্তর দেননি। ইউপিডিএফের সাথে মারামারি করে কী লাভ হলো প্রশ্ন করা হলে তার উত্তর দেয়া থেকেও তিনি বিরত থাকেন এবং বলেন, ‘কী করবো, সব কিছু স্যারের (সন্তু) উপর নির্ভর করে।‘
হামলার আগে সন্তু গ্রুপের কাউকে বালাঘাটা বাজারে আটক করা হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় সেদিন বা অন্য কোন সময় সে ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। ইউপিডিএফ নেতা ছোটন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা জেএসএস-এর ওই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য বলে উড়িয়ে দেন। বাজারের ব্যবসায়ীরাও জানান কাউকে সেদিন আটক করা হয়নি। পুলিশ জানায় তাদের কাছেও সে ধরনের কোন তথ্য নেই।
বালাঘাটা দখলের চেষ্টা
বালাঘাটায় প্রাইমারী স্কুলের এক শিক বলেন, জেএসএস (সন্তু গ্রুপ) এর লোকজন বালাঘাটা দখল করার জন্য মরিয়া হয়ে বার বার চেষ্টা করছে। মূলতঃ এই উদ্দেশ্যেই ২৩ তারিখের (আগষ্ট) হামলা হয়েছে।
জানা যায়, এর আগেও সন্তু গ্রুপ অনেক বার হামলা করে ইউপিডিএফকে উচ্ছেদ করে বালাঘাটা দখলে নেয়ার চেষ্টা চালায়। গত ২০১০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্তু গ্রুপের সদস্যরা প্রকাশ্য দিবালোকে বালাঘাটায় ইউপিডিএফ নেতা ছোটনকে হত্যার চেষ্টা চালায়। বন্দুক থেকে গুলি বের না হওয়ায় তিনি সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। অস্ত্রসহ হামলাকারীদের একজন চোখকালা চাকমা ওরফে অটলকে জনতা আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। কয়েক মাস আগে বিচারে তার সাজা হলেও বর্তমানে সে পলাতক রয়েছে।
এরপর গত ১০ মে ২০১২ সন্তু গ্রুপের সদস্যরা পোস্টার লাগানোর নামে বালাঘাটায় গিয়ে ইউপিডিএফের অফিসে হামলা করে ও শুদ্ধমনি তঞ্চঙ্গ্যাকে অপহরণের চেষ্টা চালায়। স্থানীয় জনগণের সহায়তায় তাদের সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। জনতার প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। অনেকে গণধোলাইয়ের শিকার হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়। কিন্তু তারপরও তাদের শিক্ষা হয়নি।
গত ১৫ জুন ২০১২ সন্তু গ্রুপের সদস্যরা ইউপিডিএফ-এর সহযোগী সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের তিন সদস্যকে মারধর করে। এরা হলেন বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ এর দশম শ্রেণীর ছাত্র উমংহা মারমা এবং পাইমং মারমা ১৯, ও উটিং মারমা, ২০।
তবুও সন্তু গ্রুপের শিক্ষা হয়নি
ঘটনার পরও সন্তু গ্রুপের কোন শিক্ষা হয়নি। হামলার পর সন্তু গ্রুপ বালাঘাটার ব্যবসায়ীদেরকে হুমকী দেয়া শুরু করেছে। কেন তারা ইউপিডিএফকে রার জন্য হামলাকারীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে সে জন্য সন্তু গ্রুপ ব্যবসায়ীসহ বালাঘাটাবাসীর উপর ক্ষুদ্ধ। তবে অনেকে মনে করেন যারা অন্যের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়, যারা অন্যায়ভাবে অন্যের ওপর হামলা চালায় তাদের এভাবে উচিত শিক্ষা হওয়া উচিত।
বালাঘাটার এক বাঙালি ব্যবসায় বলেন, ‘যার ওপরই হামলা করা হোক এত অন্যায়ের মুখে আমরা কিভাবে চুপ থাকতে পারি? তারা হামলা করবে, আবার তারা আমাদের ওপর ক্ষুদ্ধ হবে — সেটাতো বেশী বাড়াবাড়ি।ক্ষুদ্ধ হওয়া উচিত তো আমরাই।‘ তিনি মনে করেন জেএসএসের উচিত গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে রাজনীতি করা, বান্দরবানে যেভাবে ইউপিডিএফ ও অন্যান্য দলগুলো করছে।‘ [সমাপ্ত]