বালাতি ত্রিপুরাকে হত্যার প্রতিবাদে পানছড়িতে এইচডব্লিউএফ-এর বিক্ষোভ
পানছড়ি : বালাতি ত্রিপুরাকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে পানছড়িতে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে হিল উইন্সে ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ)। আজ শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় পানছড়ি কলেজ গেইট থেকে মিছিল শুরু হয়ে চৌধুরী পাড়া পর্যন্ত ঘুরে এসে আবার একই স্থানে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশ থেকে বালাতি ত্রিপুরার ধর্ষক ও খুনি করিম, নূরু ও মানিককে অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি নারীদের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা এখন সাধারণ নিয়মে পরিণত হয়েছে। এর জন্য বহিরাগত সেটলারই দায়ি এই অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, সেটলাররা মূলত পাহাড়িদের ভূমি দখল এবং উচ্ছেদের হাতিয়ার হিসেবে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম নারীদের জন্য দেশের সবচেয়ে অনিরাপদ ও বিপদসঙ্কুল এলাকায় পরিণত হয়েছে। এখানে ঘরে-বাইরে ও কর্মক্ষেত্রে নারীরা চরম নিরাপত্তহীন অবস্থায় রয়েছে।
বক্তারা পাহাড়ে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যা বন্ধে কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারী সেনা কর্মকর্তা লেঃ ফেরদৌসসহ সকল নারী নির্যাতক, ধর্ষক ও খুনিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সমাবেশে প্রায় ৫ শতাধিক নারী পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে অধিকাংশ ছিল নারী।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মেকি চাকমা। বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জিকো ত্রিপুরা ও পানছড়ি উপজেলা সাবেক সভাপতি রূপায়ন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ) খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি দ্বিতীয়া চাকমা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) পানছড়ি উপজেলা সভাপতি জুয়েল চাকমা ও মরাটিলা এলাকার কার্বারী সাধান ত্রিপুরা প্রমুখ। সভা পরিচলানা করেন মিতালী চাকমা।
উল্লেখ্য, গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সকালে পানছড়ির পাইয়ুং পাড়ার বাসিন্দা বালাতি ত্রিপুরা নিজেদের ধন্যজমিতে কাজ করতে যায়। দিন শেষে বাড়িতে না ফেরায় তাঁর স্বামী চন্দ্র বিশ্ব ত্রিপুরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং তার ছেলেসহ খুঁজতে বের হন। খুঁজতে খুঁজতে জমি সংলগ্ন ছড়ায় বালাটি ত্রিপুরার গলাকাটা লাশ পরে থাকতে দেখেন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও পুলিশের সহযোগিতায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন ১৩ সেপ্টেম্বর তাঁর স্বামী বাদী হয়ে পানছড়ি থানায় পার্শ্ববর্তী এলাকার মোঃ করিম, মোঃ নূরু ও মোঃ মানিক নামে তিন জন সেটলারকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
——————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।