বিজিবি ব্যাটালিয়ন প্রত্যাহারের দাবিতে দীঘিনালায় ভূমি রক্ষা কমিটির মানববন্ধন
সিএইচটিনিউজ.কম
দীঘিনালা প্রতিনিধি: দীঘিনালার যত্ন কুমার ও শশী মোহন কার্বারী পাড়া হতে বিজিবি ৫১ ব্যাটালিয়ন প্রত্যাহারের দাবিতে আজ ২৮ অক্টোবর ২০১৪ মঙ্গলবার দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
“নিজ বাস্তুভিটা ও অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে এক হোন, আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ুন” এই শ্লোগানে সকাল ১১ টায় দীঘিনালা উপজেলা কমপ্লেক্স থেকে রাস্তায় পশ্চিম পাশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনকারীরা অবস্থান নেয়। এতে শত শত নারী পুরুষ বৃষ্টি উপেক্ষা করে কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করে। এ সময় মানবন্ধনকারীরা ‘জীবন দেব তবু পিতৃভূমি ছাড়ব না’, ‘বিজিবি দায়ের কৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার কর’, ‘হামলা- মামলা করে আমাদের কন্ঠ রোধ করা যাবে না’, ‘হামলা- মামলা করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’, ‘হামলাকারী বিজিবি, পুলিশ, সেটেলার বাঙালিদের শাস্তি চাই’, ‘উচ্ছেদ হওয়া পরিবারদের বাস্তভিটা ফেরত দাও’ ইত্যাদি দাবি সম্বলিত প্লেকার্ড গলায় ঝুলিয়ে প্রদর্শন করে।
দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্য নতুন চন্দ্র কার্বারীর সভাপতিত্বে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য অপ্সরি চাকমার সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন, ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্য ৪নং দীঘিনালা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য উষাবরণ চাকমা ও নতুন চন্দ্র চাকমা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গত ২ সেপ্টেম্বর মহামান্য হাইকোর্ট বিজিবি ৫১ ব্যাটালিয়ন হেডকোয়াটার স্থাপনের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে। কিন্তু বিজিবি হাইকের্টের আদেশ তোয়াক্ক না করে আগের মতই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দিন রাত ২৪ ঘন্টা স্থাপনা নির্মান করেই চলেছে। এ অবস্থা দেখে মনে হয় দেশে বিজিবির জন্য কোন আইন নেই। তারা অবিলম্বে বিজিবি ব্যাটালিয়ন প্রত্যাহার করে নিজ নিজ বসতভিটা ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান।
একঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচী শেষে আগামী ২ নভেম্বর ২০১৪ অবস্থান ধর্মঘটের ঘোষনা দেয় ভূমি রক্ষা কমিটি। এর পরও যদি বিজিবি ৫১ ব্যাটালিয়নকে প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে বলে ভূমি রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
উল্লেখ্য যে, গত ১৪ মে গভীর রাতে বিজিবি ৫১ ব্যাটালিয়ন দীঘিনালা উপজেলার ৫১নং দীঘিনালা মৌজার যত্ন কুমার ও শশী মোহন কার্বারী পাড়ায় পাহাড়িদের জায়গা জবরদখল করে অবস্থান নেয়। এরপর ১০ জুন জায়গার মালিকরা এর প্রতিবাদ জানালে বিজিবি-পুলিশ- সেটেলার বাঙালিরা গৃহনির্মান কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও বন্দুকের বাট দিয়ে গ্রামবাসীদের উপর আক্রমন করে এবং ২১ পাহাড়ি পরিবারকে নিজ বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করে।
বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ হয়ে উক্ত ২১ পরিবার আশ্রয় নেয় বাবুছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দু’টি কক্ষে। দীর্ঘ চার মাসের অধিক মানবেতর জীবন কাটিয়ে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার কারণে স্কুল ঘরের জীবন ত্যাগ করে বর্তমানে তাঁরা বাবুছড়ায় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পরিত্যাক্ত অফিস ভবনে আশ্রয় গ্রহন করে গাদাগাদি করে মানবেতন জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।
————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।