বিতর্কিত ‘পঞ্চদশ সংশোধনী আইন’র প্রতি ঢাকায় তিন পাহাড়ি সংগঠনের লাল কার্ড প্রদর্শন

0

সিএইচটিনিউজ.কম
Dhaka,1ঢাকা: সংবিধানের বিতর্কিত ‘পঞ্চদশ সংশোধনী আইন’ ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের জারিকৃত দমনমূলক ১১ নির্দেশনার’ প্রতি লাল কার্ড প্রদর্শন করেছে পাহাড়ি সংগঠনগুলো।

পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনরত তিন গণতান্ত্রিক সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন-এর উদ্যোগে সংবিধানের বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাসের ৪বছর পূর্তির দিনে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মুখে আজ ৩০ জুন মঙ্গলবার সকাল ১০:৩০- ১১:৩০টা পর্যন্ত ঘণ্টা ব্যাপী এই ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ঘণ্টাব্যাপী দাঁড়িয়ে থেকে তিন সংগঠনের নেতা-কর্মীগণ সরকারের অন্যায় আইন ও দমন-পীড়নের প্রতিবাদে লাল কার্ড প্রদর্শন করেন এবং মাইকে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের সংখ্যালঘু জাতির ওপর যে নিপীড়ন নির্যাতন চলছে তা তুলে ধরেন।

এ সময় বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি মাইকেল চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি থুইক্যচিং মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভানেত্রী নিরূপা চাকমা ও পিসিপি’র কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক বিপুল চাকমা। সভায় উপস্থাপনা করেন পিসিপি’র কর্মী রিয়েল ত্রিপুরা।

লাল কার্ড প্রদর্শন কর্মসূচিতে বক্তারা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা ও নিন্দা জানিয়ে বলেন,‘মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষশক্তি, ধর্ম নিরপেক্ষ, সংখ্যালঘু জাতির প্রতি সহানুভূতিশীল, গণতান্ত্রিক দল–ইত্যাদি দাবি করলেও বাস্তবতঃ এ সরকার কর্তৃক সংখ্যালঘু জাতি নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণ নিজ বাসভূমি থেকে বিতাড়িত হয়ে অস্তিত্ব সংকটের মুখে পতিত হয়েছে। ’৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি সম্পাদন করে সরকার রাজনৈতিক কৃতিত্ব নিলেও প্রকৃতপক্ষে এতে একটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠীই লাভবান হয়েছে, যারা এখন সরকারের লেজুড় হয়ে সরকারি নীল নক্সা বাস্তবায়ন করে চলেছে। সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন তো করে নি। উল্টো ১১ নির্দেশনা জারি করে প্রকৃতপক্ষে সেনাশাসনকে বৈধতা দিয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দিয়েছে, যা কোন গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজ মেনে নিতে পারে না।’

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৩০ জুন আওয়ামী লীগ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশে বসবাসরত সংখ্যালঘু জাতিসমূহের দাবি-দাওয়া সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দিয়ে সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পাস করে। যা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বসবাসরত ভিন্ন ভাষাভাষী সংখ্যালঘু জাতিসমূহ মেনে নেয় নি। দেশের গণতান্ত্রিক দল ও বরেণ্য ব্যক্তিগণ উক্ত আইন পাসের কারণে সরকারের সমালোচনা করেন এবং তা বাতিলের দাবি জানান। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ সত্ত্বেও সরকার বির্তকিত আইনটি বাতিল করেনি। দৃশ্যতঃ সরকার দিন দিনই ফ্যাসীবাদী রূপ ধারণ করে নাগরিকগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করতে উদ্যত হয়েছে। দমন-পীড়ন জারি রাখতে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় কর্তৃক অগণতান্ত্রিক দমনমূলক “১১ নির্দেশনা” জারি করেছে। এর অর্থ হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা শাসনকে বৈধতা দান, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিপীড়ন-নির্যাতনে লিপ্ত হতে প্ররোচনা দেয়ার সামিল।
——————-

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More