বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় পাহাড়ের ৮গণসংগঠনের নিন্দা, নিরাপত্তা বিধানের দাবি
সিএইচটিনিউজ.কম
দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে আসন্ন শারদীয় দূর্গোৎসব নির্বিঘ্ন করতে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে যত দ্রুত সম্ভব আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনরত ৮গণসংগঠন। সংগঠনগুলো হলো- গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ), বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি), হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটি, সাজেক নারী সমাজ, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি ও প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়ার্ড।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত যুক্ত বিবৃতিতে ৮গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দ হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহৎ উৎসব দূর্গাপূজা উপলক্ষে সরকারি ছুটি তিন দিন করা যৌক্তিক মন্তব্য করে বলেছেন,‘উৎসব উপলক্ষে সরকারি মন্ত্রী-আমলা কর্তৃক নির্দিষ্ট কয়েকটি মন্দির ও পূজামণ্ডপ পরিদর্শন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি দরদী ভাব প্রদর্শন, সরকারের সদিচ্ছা ও সহায়তার আশ্বাস প্রদান, টিভি ও পত্রিকায় ফলাও করে সে সংবাদ প্রচার– অতি পরিচিত দৃশ্য। তাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সামগ্রিকভাবে কোন লাভ হয় না। তাদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত হয় না, অর্পিত সম্পত্তি আইনের সন্তোষজনক সমাধান, জমি-সহায় সম্বল রক্ষা, নারী সম্ভ্রম কোনটিই রক্ষা হয় না, ভূমিদসূদের আক্রমণ তাতে বন্ধ হয় না; কেবল সরকারি দলের সাথে যুক্ত কতিপয় ব্যক্তি বিশেষের তাতে প্রাপ্তি যোগ হয় মাত্র। এ থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে প্রয়োজন সুবিধাবাদীদের প্রত্যাখ্যান করে প্রকৃত আন্দোলনকারীদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা।’
নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে আরও বলেছেন,‘দেশের বিদ্যমান আইন ও সংবিধানই বৈষম্যমূলক। বিশেষ দল, ভাষা, গোষ্ঠী ও ধর্মকে প্রাধান্য দিয়ে অন্য মত ও ভিন্ন ভাষা-ভাষী জাতিসত্তা ও সম্প্রদায়কে প্রান্তিক অবস্থানে ঠেলে দিয়ে বস্তুত তাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে। তাদের এ দুর্বল অবস্থানের কারণে ক্ষমতাধর ব্যক্তি গোষ্ঠী সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও ভিন্ন ভাষা-ভাষী জাতিসত্তাসমূহের জমি-জমা বেদখল করতে ও তাদের নারীদের লাঞ্ছিত করতে পারছে। অবশ্য দেশে যা পরিস্থিতি তাতে সংখ্যাগুরু সাধারণ বাঙালিদেরও গণতান্ত্রিক অধিকার সীমিত হয়ে পড়েছে। দেশটা যেন শুধু ক্ষমতাধর ব্যক্তি গোষ্ঠীর জন্য।’
দেশের বর্তমান এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য গণতন্ত্রমনা ব্যক্তি, সংগঠন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সকল ধরনের সাম্প্রদায়িকতা, স্বেচ্ছাচারিতা, ফ্যাসিবাদী কার্যকলাপ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার আহ্বান জানিয়েছেন ৮গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মাইকেল চাকমা, সাধারণ সম্পাদক অংগ্য মারমা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি থুইক্যচিং মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরূপা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি সোনালী চাকমা, সাজেক নারী সমাজের সভাপতি নিরূপা(২) চাকমা, সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি জ্ঞানেন্দু চাকমা, ঘিলাছড়ি নারী নিযাতন প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক শান্তি প্রভা চাকমা ও প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়াডের সদস্য সচিব আনন্দ প্রকাশ চাকমা।
৮ গণসংগঠনের কনভেনিং কমিটির সদস্য সচিব অংগ্য মারমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
——————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।