বৈসাবি’র আনন্দ নেই বাবুছড়ায় উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারের
সিএইচটিনিউজ.কম
দীঘিনালা প্রতিনিধি : আগামী ১২ এপ্রিল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসব বৈসাবি (বৈসু-সাংগ্রাই-বিঝু) শুরু হলেও উৎসবের কোন আনন্দ নেই দীঘিনালা উপজেলার শশীমোহন ও যত্ন কুমার কার্বারী পাড়া হতে গত বছর ১০ জুন বিজিবি কর্তৃক উচ্ছেদ হওয়া ২১ পাহাড়ি পরিবারের। জায়গা-জমি, ভিটেবাড়ি হারিয়ে চরম এক অনিশ্চয়তার মধ্যে তারা রযেছেন। বর্তমানে তারা বাবুছড়া ইউনিয়নের কৃষি বিভাগের পরিত্যক্ত অফিস ঘরে গাদাগাদি করে কষ্টকর অবস্থায় মানবেতর দিন যাপন করছেন। একদিকে প্রশাসনের হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের ভয়, অন্যদিকে অভাব অনটন, এ অবস্থায় তারা বিঝু উৎসব পালন করবেন না বলে জানিয়েছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা য়ায়, একটা বেড়ার ঘর ও তার পাশে কৃষি বিভাগের বাবুছড়া ইউনিয়নের পরিত্যক্ত অফিস কক্ষে উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারের ৮৬ জন মানুষ গাদাগাদি করে অস্বস্তিকর পরিবেশে দিন কাটাচ্ছে। তাদের মনে নেই বৈসাবি’র আনন্দ।
এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপককালে উচ্ছেদের শিকার দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী অপ্সরী চাকমা তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে অভিমান ভরা কণ্ঠে চোখ মুছতে মুছতে বলেন, সবাই আনন্দ উৎসব করবে; নাচ-গান করবে, অথচ আমরা বিঝু পালন করতে পারব না, এর চেয়ে দুঃখ আর কি হতে পারে!
দেবতরু চাকমা বলেন, দেখুন না সর্বোচ্চ হারিয়ে আমরা কিভাবে আছি। এ অবস্থার কিভাবে আনন্দ উৎসব করা যায়?
কুসুমিকা চাকমা (বিপ্লবীর মা) তার দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে বলেন, অন্তঃসত্তা অবস্থায় ভিটেমাটি, বাড়িঘর ছেড়ে এক কাপড়ে কোন রকম প্রাণ নিয়ে পালিয়ে এসে এখানে আশ্রয় নিয়েছি। বিপ্লবীকে দেখিয়ে তিনি বলেন, ও এখন হাসে, গুন গুন করে। নিজ বসতবাড়িতে থাকতে পারলে বিঝুতে কতই না আনন্দ উৎসব হতো, কিন্তু এখনতো থাকার ঘর নাই, বিঝু পালন করি কিভাবে?
নতুন চন্দ্র চাকমা (কার্বারী) বলেন, কিভাবে যে প্রাণে বেঁচে আছি একমাত্র ভগবানই জানে। যেখানে জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই, সেখানে কিভাবে বিঝু পালন করবো?
——————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।