মধুপুরে বনবিভাগ কর্তৃক উচ্ছেদ ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ

0

মধুপুর (টাঙ্গাইল) : টাঙ্গাইলের মধুপুরে জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত বনভূমির নামে স্থানীয় আদিবাসীদের নিজভূমি থেকে উচ্ছেদ ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ রবিবার (৩১ জানুয়ারি ২০২১) দুপুরে উপজেলার জলছত্র ফুটবল মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন উপজেলার ৩৪টি সংগঠন স্ব স্ব ব্যানার নিয়ে যোগ দেন।

‘আমার ভূমি আমার মা, কাইরা নিতে দিব না’ শ্লোগানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মধুপুর গড়াঞ্চলের সর্বস্তরের জনগণ অংশগ্রহণ করেন।

বাগাছাস কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি জন জেত্রার সঞ্চালনায় ও জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ আদিবাসী নেতা অজয় এ মৃ, উইলিয়াম দাজেল, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান যষ্ঠিনা নকরেক, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ, বেরীবাইদ ইউপি চেয়ারম্যান জুলহাস উদ্দিন, শোলাকুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেন, ফুলবাগচালা ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বেনু সহ অন্যান্য আদিবাসী নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, সংরক্ষিত বনভূমির নামে আদিবাসীদের উচ্ছেদ ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। মধুপুরের আদিবাসীদের ভূমি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে সমতল আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করতে হবে। বনবিভাগ কর্তৃক পীরেন সহ সকল হত্যার বিচার করতে হবে। আদিবাসীদের উপর শত শত মিথ্যা বন মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

বর্ষীয়ান আদিবাসী নেতা অজয় এ মৃ বলেন, ‘বনবিভাগ হওয়ার আগ থেকেই মধুপুর বনে আদিবাসীরা বসবাস করছেন। সুতরাং আলোচনা ছাড়াই আদিবাসীদের উচ্ছেদ নোটিশ দিয়ে যে নীল নকশা করছে আমরা তার প্রতিবাদ জানাই।’

আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ বলেন, ২০০৪ সালে ইকোপার্কের নামে আদিবাসী উচ্ছেদ ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে পীরেন স্নাল নিহত হয়। এখন পর্যন্ত আমরা পীরেন হত্যার বিচার পাইনি। বরং গড়াঞ্চলের নিরীহ আদিবাসীদের নামে শতশত মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে পীরেন হত্যার বিচার দাবি এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানান।

সভাপতির বক্তব্যে ইউজিন নকরেক বলেন, ‘মধুপুরে শতশত বছর ধরে আদিবাসীরা বসবাস করে আসছে। কিন্তু বনবিভাগ কয়দিন পরপর আদিবাসীদের নিজভূমি থেকে উচ্ছেদ করার নোটিশ প্রদান করে। আমরা মধুপুরের জনগণ বনবিভাগ কর্তৃক তথাকথিত উচ্ছেদ নোটিশ মানি না।’

সমাবেশ শেষে বিক্ষোভকারীরা এক ঘন্টা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। আদিবাসীদের ভূমি সমস্যার সমাধান না হলে আগামী দিনে আরো কঠোর আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দ।

পরে মধুপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান আবু, মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফা জহুরা, সার্কেল মধুপুরের কামরান হোসেন, মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারিক কামালসহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেন।

 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More