মন্টি ও দয়াসোনা চাকমাকে উদ্ধারের দাবিতে রাঙামাটির কাউখালীতে গণসমাবেশ

0

কাউখালী (রাঙামাটি) : কাউখালী কলমপতি গণহত্যার ৩৮তম বার্ষিকীতে কুদুকছড়ি থেকে নব্য মুখোশ বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্তৃক অপহৃত হিল উইমেন্স ফেডাশেনের নেত্রী মন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমাকে উদ্ধারের দাবিতে আজ রবিবার (২৫ মার্চ ২০১৮) রাঙামাটির কাউখালীতে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও কাউখালী এলাকাবাসীর ব্যানারে এই গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধি, হেডম্যান, কার্বারীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

আজ সকালে ১০টার কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া এলাকায় অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে ইউপিডিএফ সংগঠক ডিএস চাকমার সভাপতিত্বে ও অংচিং মারমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কাউখালী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়্যারম্যান ডুমং মারমা মংশিউ, ৩নং ঘাগড়া ইউপি চেয়্যারম্যান জগদীশ চাকমা, বিশিষ্ট মুরুব্বি ও প্রাক্তন শিক্ষক নলিন্দ বিকাশ চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কাউখালী থানা শাখার সভাপতি রুপসী চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক রুপন মারমা। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কাউখালী থানা শাখা সহ-সভাপতি নয়ন জ্যোতি চাকমা সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

গণসমাবেশের বক্তারা কাউখালী গণহত্যার কথা তুলে ধরে বলেন, ১৯৮০সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন সরকার পাহাড়িদের জায়গা-জমি বেদখল ও তাদের নিজ বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে কলমপতি ইউনিয়নে পাহাড়িদের উপর বর্বর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও সেটলার বাঙালি কর্তৃক সংঘটিত এই ঘটনায় তিন শতাধিক মানুষকে হত্যা, ঘরবাড়ি-বৌদ্ধ বিহার অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক লুটপাট করা হয়েছে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।

বক্তারা কলমপতি গণহত্যাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবত সংঘটিত সকল গণহত্যার বিচার ও শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার জন্য শাসকগোষ্ঠী নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় নব্য মুখোশবাহিনী সৃষ্টি করে বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। এই মুখোশ বাহিনীর সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে আন্দোলনরত ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের খুন, অপহরণ করা হচ্ছে। তাদের সন্ত্রাসী থাবা থেকে নারীরাও বাদ যাচ্ছে না। গত ১৮ মার্চ রাঙামাটির কুদুকছড়ি থেকে মুখোশ বাহিনীর সন্ত্রাসীরা দুই নারী নেত্রী মন্টি চাকমা ও দয়া সোনা চাকমাকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে। আজ পর্যন্ত তাদের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।

বক্তারা দুই নারী নেত্রীকে অপহরণের ঘটনা কাপুরুষোচিত ও ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে বলেন, বিলাইছড়িতে দুই পাহাড়ি তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনাকে ভিন্নদিকে মোড় ঘোরাতে একটি বিশেষ মহলের পরিকল্পনায় তাদের অপহরণ করা হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের অপহরণ, খুনের ঘটনা পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন সুফল বয়ে আনবে না বলে তারা মন্তব্য করেন।

বক্তারা শাসকগোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এলাকায় এলাকায় সংগঠিত হয়ে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে অপহৃত দুই নেত্রীকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার এবং অপহরণের সাথে জড়িত নব্য মুখোশ বাহিনীর সর্দার  খুনী তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মা ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারপূর্বক তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবি জানান।
——————
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More