মাউরুম কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে সেনা সৃষ্ট সন্ত্রাসীদের হুমকি
নান্যাচর : রাঙামাটি জেলার কুদুকছড়ি এলাকায় নতুন স্থাপিত মাউরুম কলেজ পরিচালনা কমিটিকে মিটিঙ না করতে কমিটির সভাপতি ও ঘিলাছড়ি ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান অমর জীবন চাকমাকে মোবাইলে হুমকি দিয়েছে সেনাবাহিনীর সৃষ্ট সন্ত্রাসী বাহিনী`জারজ পার্টি’র চেলা তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মা।
আজ শুক্রবার (১৭ নভেম্বর ২০১৭) রামহরি পাড়ায় ছোট মাউরুম উচ্চ বিদ্যালয়ে মাউরুম কলেজ পরিচালনা কমিটি এক মিটিঙের আয়োজন করে। সকালে নান্যাচর জোন কমাণ্ডার লে. কর্নেল বাহালুল আলম বুড়িঘাট ইউপি চেয়ারম্যান প্রমোদ বিকাশ খীসাকে ফোন করে কলেজ পরিচালনা কমিটির মিটিঙ আছে কিনা জানতে চান। প্রমোদ খীসা মিটিঙ আছে বলে জানালে এক পযায়ে জোন কমাণ্ডার কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ঘিলাছড়ি ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান অমর জীবন চাকমার মোবাইল নাম্বার তাঁর কাছ থেকে খুঁজে নেন। অবশ্য তিনি অমর জীবন চাকমাকে ফোন করেননি।
এর কিছুক্ষণ পর অতি সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে সৃষ্ট সন্ত্রাসী বাহিনী ‘জারজ পার্টি’র চেলা তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মা জোন কমাণ্ডারের নেয়া মোবাইল নাম্বারে অমর জীবন চাকমাকে ফোন করে কলেজ পরিচালনা কমিটির মিটিঙ সম্পর্কে জানতে চায়। অমর জীবন মিটিঙ আছে বলে জানালে বর্মা তাঁকে ‘মিটিঙ করতে পারবে না’ বলে বার বার ফোন করে হুমকি দেয়।
অবশ্য হুমকি সত্ত্বেও কলেজ পরিচালনা কমিটি মিটিঙ সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে সেনাবাহিনী বিশেষ করে নান্যাচর জোন কমাণ্ডার মাউরুম কলেজ স্থাপনের ক্ষেত্রে নানাভাবে বাধা প্রদানের চেষ্টা করে আসছে। কিন্তু এলাকার জনগণ সকল বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে কলেজের কার্যক্রম শুরু করেছে। কোনভাবেই কলেজ স্থাপনের কাজ থামিয়ে রাখতে না পেলে জোন কমাণ্ডার বাহালুল সাহেব বর্তমানে তাদের সৃষ্ট সন্ত্রাসী চেলা বর্মাকে ব্যবহার করে কলেজ পরিচালনার কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিকে, গতকাল সন্ধ্যায় নান্যাচর সেনা জোনের এক মাইল উপরে ফিরিঙ্গি পাড়া এলাকায় সন্ত্রাসী দলটির সাথে সেনাবাহিনীর একটি টিমের সাক্ষাত হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। সেনাবাহিনীর টিমটি একটি ইঞ্জিনচালিত বোটযোগে সেখানে গিয়ে আগে থেকে অপেক্ষারত সন্ত্রাসী দলটির সাথে অনেক্ষণ ধরে কথাবার্তা বলেন। তবে কি কথাবার্তা হয়েছে তা জানা যায়নি। এলাকার লোকজন ধারণা করছেন সেখানে কিভাবে কাজ করবে সে বিষয়ে সন্ত্রাসী দলটিকে ব্রিফিং করেছে সেনারা।
উল্লেখ্য, গত বুধবার খাগড়াছড়ি শহরের খাগড়াপুুর কমিউনিটি সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন করিয়ে দাগী সন্ত্রাসী, অস্ত্র-মাদক চোরাকারবারী, সমাজ ও দলচ্যুত তপন জ্যোতি ও জলেয়্যা চাকমাদের দিয়ে সেনাবাহিনী একটি সন্ত্রাসী দল ঘোষণা দেয়। যাকে জনগণ এখন ‘জারজ পার্টি’ নাম দিয়েছে। ঘোষণার পরই সন্ধ্যায় এই সন্ত্রাসী দলটিকে সেনাবাহিনী গাড়িতে করে রাঙামাটি জেলার নান্যাচরে নিয়ে যায়। বর্তমানে সেনাদের পাহারায় সেখানে সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র অবস্থায় ঘোরাফেরা করছে এবং লোকজনকে হুমকি-ধামকি ও জোরপূর্বক চাঁদা দাবি করছে।
————–
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।