মানিকছড়িতে শহীদ মংশে মারমার ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ সভা

0

pcp-manikchari-2মানিকছড়ি: ”শত শহীদের রক্তের বীজ থেকে জন্ম নেবে হাজারো বিপ্লবী নেতা” এই শ্লোগানে মানিকছড়িতে পিসিপি’র তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ মংশে মারমার ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ সভা করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) মানিকছড়ি উপজেলা শাখা।

গতকাল শনিবার (৩ ডিসেম্বর ২০১৬) সকাল ১০টায় মানিকছড়ি সদরে শহীদ মংশে মারমাসহ অধিকার আদায়ের জন্য গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে ১মিনিট নিরবতা পালনের মধ্যে দিয়ে এই স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

স্মরণ সভায় পিসিপি’র মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি উথুই প্রু মারমার সভাপতিত্বে সুইথুই প্রু মারমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ-সাধারন সম্পাদক এলটন চাকমা, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার অর্থ সম্পাদক হ্লাচিমং মারমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম মানিকছড়ি উপজেলা সভাপতি রাপ্রু মারমা প্রমুখ।

স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন, মংশে মারমা পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকার হারা জুম্ম জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য পিসিপি’র সাথে সম্পৃক্ত হয়ে সকল বাধা বিপত্তিকে তোয়াক্কা না করে সাহসের সাথে মানিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি ও রামগড় উপজেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও সেটলার কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের ভূমি বেদখল, নারী নির্যাতনসহ সকল ধরনের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলেন। তার সেই দুর্দান্ত সাহসকে ভয় পেয়ে শাসকগোষ্ঠী নানান ষড়যন্ত্র করতে থাকে এবং ১৯৯৯ সালের ৩ ডিসেম্বর মানিকছড়ি বাটনাতলী ইউনিয়নের কালাপানি এলাকায় পিসিপি’র সাংগঠনিক কাজে গেলে সেনাবাহিনীর চক্রান্তে পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি (জেএসএস)-এর দুর্বৃত্তরা তাকে অপহরণ করে গভীর জঙ্গলে নিয়ে নির্মমভাবে খুন করে।

বক্তারা বলেন, যারা সমাজের দুষ্কৃতিকারী, দূর্বৃত্ত ও প্রতিক্রিয়াশী তারা কখনো স্থায়ী করে থাকতে পারেনা, পরাজয় স্বীকার করে আত্মসমর্পন করতে হয়। শহীদ মংশে মারমার খুনীদেরকেও হার মানতে হয়েছে এবং অনেকে জনগণের কাঠগড়ায় উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে।

বক্তারা আরো বলেন, কোন সমাজ বা জাতির অধিকারের জন্য যদি কোন ব্যক্তি লড়াই বা আন্দোলন সংগ্রাম করে তাকে অবশ্যই ত্যাগ স্বীকার করতে হয় কিংবা নিজের জীবনকে উৎসর্গ করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হয়। আন্দোলনকারীরা মৃত্যুকেও ভয় করে না। এবং তারা যদি শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মারাও যায় তাহলে তাদের মৃত্যু অমর। শহীদ মংশে মারমাও মৃত্যু আগ পর্যন্ত পরাজয়ের কাছে হার না মেনে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে সমাজ জাতির অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছেন। ঘাতকরা তাকে হত্যা করতে পারলেও তার যে চেতনা সে চেতনাকে হত্যা করতে পারেনি। সে চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বর্তমানে শত-সহস্র বিপ্লবী তার উত্তরসূরি হয়ে মানিকছড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় জন্ম নিয়েছে।

বক্তারা, শহীদ মংশে মারমার চেতনাকে লালন করে জুম্ম জনগণের মুক্তির সনদ পূর্ণস্বায়ত্তশানের সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে নতুন প্রজন্ম ও পার্বত্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
——————–

সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More