রাঙ্গামাটিতে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’ : কিছু কথা

0

ittadi-rangamati। মন্তব্য প্রতিবেদন ।।
৩০ সেপ্টেম্বর রাত আটটার সংবাদের পর বিটিভিতে প্রচারিত জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’ রাঙ্গামাটিতে ধারণ করার কারণে দেশ-বিদেশের অন্যান্য অঞ্চলের দর্শকদের চেয়ে এর প্রতি কৌতুহল ও আকর্ষণ পার্বত্যবাসীর বেশী ছিল, তা বলাই বাহুল্য। নিজের জন্মভূমি, স্মৃতি বিজড়িত স্থানের প্রতি টান মানুষের সহজাত। এককালে অবিভক্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজধানী রাঙ্গামাটিতে ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠান ধারণ ও প্রচার স্বাভাবিকভাবে এ অঞ্চলের অধিবাসীদের আগ্রহী করে তুলেছিল।

ইত্যাদিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র প্রদর্শন এবং পরিচয় করিয়ে দেয়ার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। সত্যি বলতে কী, এসব বাদ্যযন্ত্রের নাম বর্তমান প্রজন্মের তরুণরা কেন মধ্য বয়সীরাও অনেকে জানে না। গানের মাধ্যমে প্রতিযোগী বাছাই পর্বে বাঙালি তরুণীটিকে অসহায় মনে হয়েছিল। চাকমা গানের তোড়ে তিনি তেমন সুবিধে করতে পারবেন না সেটা বলাই বাহুল্য, এতে দু’একটি বাংলা গান থাকলে মন্দ হতো না। রাঙ্গামাটির ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে চাকমা গানের সুর ধরা বাঙালি তরুণীর জন্য কঠিন, ঠিক তেমনি পাহাড়িরা বাঙালিদের অনেক বিষয় আয়ত্ত করতে সক্ষম হয় না। বিশেষ করে প্রাথমিক স্তরে ছোট্ট শিশুরা যখন স্কুলে নিজ মাতৃভাষার পরিবর্তে বাংলায় পড়তে বাধ্য হয়, তখন তাদেরও বিপাকে পড়তে হয়।

ভিডিও ধারণকৃত দৃশ্যে ‘রাঙ্গামাটি-কাপ্তাই সংযোগ সড়ক’ আর বিলাইছড়ি ব্রিজে দাঁড়িয়ে হানিফ সংকেত ইউরোপের সুইজারল্যান্ডের কথা স্মরণ করেছেন, নিশ্চয়ই তার কাপ্তাইয়ের সুইডিশ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের কথা মনে পড়ে থাকবে। তাকে বেশ স্মৃতিতাড়িতও মনে হয়েছিল, সেটাই স্বাভাবিক। রাঙ্গামাটির নৈসর্গিক সৌন্দর্য, পাহাড়ি জনগণের সারল্য তিনি ছাত্র জীবনে নিশ্চয়ই প্রত্যক্ষ করে থাকবেন। বন্দুকভাঙায় এক গ্রামের বাড়িতে রান্নার আয়োজন, পাহাড়িদের রকমারি খাবার-দাবার গুরুত্বের সাথে দেখিয়েছেন, যার সাথে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড তথা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার জনগণের খাদ্যাভাসের মিল রয়েছে।

বহুমুখী প্রতিভাবান হানিফ সংকেত সংবেদনশীল, মানব দরদী এবং রঙ্গ রস কৌতুকে তিনি সমাজের নানা অসঙ্গতির প্রতি তীব্র কষাঘাত করে থাকেন, সাধারণ মানুষের পক্ষে দাঁড়ান–যা মানুষকে আনন্দ দেয়ার পাশাপাশি সজাগ ও সচেতন করে। সে কারণে তিনি জনপ্রিয় এবং এত বছর পরও ‘ইত্যাদি’কে ধরে রেখেছেন।

কিন্তু গত ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে তিনি রাঙ্গামাটি অর্থাৎ পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে সক্ষম হন নি, বলা বাহুল্য বিটিভি’র মতো একটি সরকারি প্রচার মাধ্যমে তা আশা করা যায় না। গত বছর ৩০ জানুয়ারি খাগড়াছড়িতে প্রচারিত ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানেও তা পরিলক্ষিত হয়েছে। সে অনুষ্ঠানেও তিনি সাজেকের অপার সৌন্দর্যের দৃশ্য তুলে আনেন। বস্তুতপক্ষে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি তার এ দু’টি অনুষ্ঠানই পর্যটন কর্পোরেশনের বিজ্ঞাপনের মতো মনে হয়েছে। মনে হয়েছে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরতে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। পর্যটন শিল্পের সম্প্রসারণের কারণে বহু মানুষ সাজেক-আলুটিলা-ঝর্ণাটিলা-নীলগিরির বংশপরম্পরার বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ হচ্ছে, কত মানুষের অশ্রু ঝরছে, সহায় সম্বলহীন হয়ে পথে বসছে। পুঞ্জিভূত হচ্ছে অসন্তোষ-ক্ষোভ, স্বাভাবিকভাবে পর্যটনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী সংগঠিত হয়ে রাজপথে নেমেছে। সংখ্যালঘু দরিদ্র প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দুঃখ-দুর্দশা-অশ্রুর বিনিময়ে একশ্রেণীর মানুষের চিত্ত বিনোদনের জন্য প্ররোচনা দেয়া কতখানি মানবিক বিবেচনাপ্রসূত, তা হানিফ সংকেতের মতো সংবেদনশীল ব্যক্তিকে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে। ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠান একশ্রেণীর দর্শকের চিত্ত বিনোদনের উৎস হলেও অন্যদিকে তা পর্যটনের কারণে উদ্বাস্তু, উচ্ছেদ আতঙ্কে থাকা মানুষ আর মানবিক চেতনাসম্পন্ন ব্যক্তিদের ভাবিয়ে তুলেছে। এমন সময়ে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে পর্যটনকে আরও আকর্ষণীয় করার উদ্যোগ পার্বত্য চট্টগ্রামের সচেতন ব্যক্তিগণ সহজভাবে গ্রহণ করতে পারবেন না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘পর্যটনে’ পুঁজি বিনিয়োগকারী সংস্থা হিসেবে সেনাবাহিনীও অন্যতম। পর্যটন সেনাবাহিনীসহ পুঁজি বিনিয়োগকারীদের নিকট যতটা লোভনীয়-আকর্ষণীয়, পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর নিকট তা ততটাই আতঙ্কের কারণ।

রাঙ্গামাটি বিজিবি সেক্টর হেড কোয়ার্টারের পাহাড়ে ধারণকৃত অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শকদের তুমুল করতালিতে ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠান ছিল মুখর, অনেকে বেশ উপভোগ করেছেন মজা পেয়েছেন এমন মনে হয়। সিরাজগঞ্জের মামুন বিশ^াসের মানব সেবার দৃষ্টান্ত তুলে ধরা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। যে ফেইসবুকের কারণে যুবসমাজের অধঃপতন হচ্ছে, সে একই মাধ্যম ব্যবহার করে মানব সেবায় আত্মনিয়োগ করা যায়, তা তিনি দেখিয়েছেন। প্রতিবারের মতো ইত্যাদিতে মামা-ভাগ্নে, নানি-নাতি চিঠিপত্র, সমসাময়িক ঘটনাবলীর নাট্যাংশ ছিল। নানি-নাতির কৌতুক গতানুগতিক ছিল, তবে দর্শকবৃন্দ তুমুল করতালি দিয়ে তাদের উৎসাহিত করেছে। বক্রাঘাতধর্মী নাট্যাংশের একটি কৌতুক মজার, সরকারের লেজুড় প্রতিক্রিয়াশীলদের প্রতি তীক্ষ্ম কষাঘাতের মতোই, নিগুঢ় অর্থবহ। ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানের মজার শিক্ষণীয় ব্যাঙ্গাত্বক নাট্যাংশটি এই, বেকুব মার্কা কর্মচারিকে বস ‘ছাগল’ বলে প্রায়ই গালাগাল করত, একদিন ‘গরু’ বলে গালি দেয়াতে বেকুব কর্মচারি আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছিল। অফিসের অন্য সহকর্মীদের জিজ্ঞাসাতে সে তাও গর্বের সাথে প্রচার করে। হানিফ সংকেত তীব্র কষাঘাত দিয়ে কখনও কখনও এমন কৌতুক করেন, যা অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়ে থাকে। এ কৌতুকও তাই। রাঙ্গামাটি বিজিবি সেক্টর হেড কোয়ার্টার্সে ধারণকৃত ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে যারা হেসে খুন, তুমুল হাততালি দিয়ে অনুষ্ঠান মুখর করেছিলেন, তাদের অধিকাংশের বেলায় এটি চরমভাবে সত্য। একশ্রেণীর লোক আছে যারা নিজেদের ভীষণ চালাক চতুর মনে করে, বাস্তবে তারা যে কত কা-জ্ঞানহীন তা হানিফ সংকেত কৌতুকের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন, এজন্য হানিফ সংকেত অবশ্যই ধন্যবাদের দাবিদার। পাহাড়িদের মধ্যে অনেকে আছেন যাদের নিজ জাতিসত্তাবোধে সচেতনতা নেই। সরকার যে সংবিধানে “বাঙালি জাতীয়তা” চাপিয়ে দিয়েছে, সে মর্মপীড়াদায়ক ব্যাপারটিও তারা ভুলে যায়। সে-ই অসচেতন অংশটি “বাঙালি জাতীয়তা”কে প্রমোশন ভেবে উৎফুল্ল হয়ে উঠছে কিনা, কৌতুকটি দেখে মনে প্রশ্ন জাগে। সুবিধাবাদী একশ্রেণীর লোকও ‘পর্যটন’ তথা সরকারের প্রচারিত ‘উন্নয়ন’কে নিজেদের কল্যাণ আশীর্বাদ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে।

কাপ্তাই হ্রদ দিয়ে মনকাড়া সুভলঙের ঝর্ণায় যাবার সময় কাপ্তাই হ্রদ সৃষ্টির কাহিনী সংক্ষেপে বর্ণনা দিলে বিষয়টি পূর্ণতা পেত, তাতে সন্দেহ নেই। যদিও সরকার নিয়ন্ত্রিত বিটিভি’র অনুষ্ঠানে কাপ্তাই হ্রদে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়িদের কান্না উঠে আসবে, তা আশা করা যায় না। কিন্তু যেহেতু হানিফ সংকেত সমাজে অনিয়ম অসঙ্গতি তুলে ধরেন, তিনি কাপ্তাই হ্রদে পরিবেশ বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরে গণসচেতনা সৃষ্টি করতে পারতেন। কী কারণে তিনি পর্যটক আকৃষ্ট করতে রাঙ্গামাটির সৌন্দর্যের দিকটি বেশী তুলে ধরে পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকটি সচেতনভাবে এড়িয়ে গেছেন তা বোঝা মুস্কিল।

অথচ ক’দিন আগেও দৈনিক কালেরকণ্ঠে (২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬) রাঙ্গামাটির সংবাদদাতা ফজলে এলাহী ‘বিবর্ণ কাপ্তাই হ্রদ’ শিরোনামে পরিবেশ বিপর্যয়ের সচিত্র প্রতিবেদন দেন। পরিবেশ বিপর্যয় বিষয়টি ‘ইত্যাদি’তে যদি উঠে আসত, তাহলে তা ফজলে এলাহীর প্রতিবেদনের চাইতে বেশী গণসচেতনতা সৃষ্টি করত, তাতে সন্দেহ নেই।

‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে প্রাচীন বাদ্যযন্ত্রের সাথে পরিচিতি ও সঙ্গীতের মাধ্যমে প্রতিযোগী নির্বাচন বেশ উপভোগ্য হলেও পরের পর্ব নিয়ে অনুসন্ধিৎসু দর্শক শ্রোতার মনে কিছুটা অসন্তোষ থাকাটা স্বাভাবিক। ‘রাঙ্গামাটির রঙে’ গানটি গাইতে রবি চৌধুরীর সাথে রাঙ্গামাটির প্রতিনিধিত্বকারী শিল্পী হিসেবে চমচমি দেওয়ানকে নির্বাচন সঠিক হয় নি। কারণ যে ‘নারী’ স্বজাতি-সমাজ-সংস্কৃতির মায়ার বন্ধন ছেড়ে-ছুঁড়ে বৃহত্তর জাতির আগ্রাসনের নিকট নিজেকে বিকিয়ে দেয়, তাকে স্বাজাত্যবোধ সম্পন্ন তরুণ-যুবসমাজ ‘সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি’ হিসেবে কীভাবে মানবে? চমচমি ছাড়াও রাঙ্গামাটিতে নবীন প্রবীণ অনেক যোগ্য শিল্পী রয়েছেন। তাদের মধ্যে থেকে যে কাউকে নির্বাচন করা যেত। এটা সংকীর্ণতা বা সঙ্গীত প্রতিভার অবমূল্যায়ন নয়, সংখ্যাগুরুর আগ্রাসনের শিকার সংখ্যালঘুদের নিজ অস্তিত্ব ও স্বতন্ত্র সত্তা রক্ষার জন্য এটি অপরিহার্য। তা না হলে তারা টিকে থাকতে পারবে না। অস্তিত্ব হারানোর ভয় না থাকা সত্ত্বেও অনেক জাতি তাদের নারীদের সংখ্যাগুরু জাতির নিকট বিয়ে দিতে রাজী হয় না। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি সমাজে এখনও যারা বহিরাঞ্চলের বিজাতীয় সমাজের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করে, তাদের সহজভাবে মেনে নেয়া হয় না। চমচমি দেওয়ান রাঙ্গামাটির প্রতিনিধিত্ব করার ব্যাপারে আপত্তির কারণটা এই জায়গায়। যেখানে পাহাড়ি সমাজে ব্যক্তি চমচমি’র গ্রহণযোগ্যতা নেই, সেখানে কীভাবে তাকে প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন করা হয়? সর্বোপরি পাহাড়িরা বর্তমানে সংখ্যাগুরু আগ্রাসি জাতির হাত থেকে নিজেদের স্বকীয় জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার জন্য একটি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মধ্যে রয়েছে। আর এই আন্দোলন দমনের জন্য বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র চক্রান্ত জারি রেখেছে। এ উদ্দেশ্যে সহিংস পন্থার পাশাপাশি সফট কিন্তু ইফেক্টিভ বা কার্যকর পন্থা যেমন পাহাড়িদের বিশেষত তাদের শিশুদের ধর্মান্তরকরণ, পাহাড়ি নারীদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন– ইত্যাদি প্রয়োগ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি গোপন সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাঙালিদের পাহাড়ি নারী বিয়ে করতে উৎসাহিত করা হয় বলে জানা যায়। এর উদ্দেশ্য হলো দু’টি: একদিকে পাহাড়ি নারীদেরকে নানাভাবে প্রলুদ্ধ করে আন্দোলন থেকে দূরে রাখা, অপরদিকে স্লো পয়জনিং-এর মাধ্যমে পাহাড়ি জাতিগুলোকে সংখ্যাগুরু বাঙালি জাতির মধ্যে বিলীন করে দেয়া। এটি প্রকৃত প্রস্তাবে এথনোসাইড-এর একটি বিকল্প ‘নন-ভায়োলেন্ট’ পদ্ধতি ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই চমচমিকে ইত্যাদি অনুষ্ঠানে উচ্চ মর্যাদায় আসীন করে অল্প বয়সী তরুণীদের প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরার পেছনে সেনা গোয়েন্দাচক্রের গোপন কোন উদ্দেশ্য আছে কিনা সে প্রশ্ন থেকে যায়।

আবারও পর্যটন বিষয়ে ফিরে দেখা যাক। বর্তমান সরকারের বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন অনেক ঘটন অঘটন পটিয়সী। নামে তিনি ‘ওয়ার্কার্স পার্টি’র সভাপতি, শ্রমজীবীদের পক্ষে। কিন্তু বাস্তবে তার কার্যকলাপ শ্রমজীবীদের স্বার্থ পরিপন্থী। তিনি এক সময় পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীদের বন্ধু হিসেবে পরিচিত ছিলেন, কিন্তু বর্তমানে তার অবস্থান বিপরীত।

২০১৪ সালের ১৮ অক্টোবর ‘পার্বত্য লোকজ মেলা’ উদ্বোধন করতে মেনন বান্দরবান গিয়েছিলেন। নীলগিরি পর্যটন স্পটে আয়োজিত অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে মেননকে উপস্থাপিকা ফারজানা ব্রাউনিয়া মজা করে দুই মুরুং যুবকের মল্ল যুদ্ধের বাঁশটি উপহার দেন (এই বাঁশ সে-ই বাঁশ নয় বলে সান্ত¡নাও দেন), যা গ্রহণ করতে মেনন ইতস্তত করছিলেন। দৃশ্যটি ছিল বেশ উপভোগ্য। ফারজানা ব্রাউনিয়া মজা করতে গিয়ে মেননকে বান্দরবানবাসীর পক্ষ থেকে আসলে “সেই বাঁশ”ই দিয়েছিলেন, যা বান্দরবানবাসী তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ মেননকে দিতে চেয়েছিল। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে যেভাবে পর্যটন বিকাশে সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, সেজন্য পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে পাহাড়ের জনগণ মেননকে আগামিতে আরও “বাঁশ” দিতে বাধ্য হবে।#

[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়]

————————–

সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More