রামগড়সহ ৪ উপজেলায় কম্বিং অপারেশনের নামে হয়রানি-নির্যাতন বন্ধের দাবি
সিএইচটি নিউজ ডটকম
পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনরত চার গণতান্ত্রিক সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে অবিলম্বে খাগড়াছড়ির রামগড়সহ চার উপজেলায় চলমান কম্বিং অপারেশনের নামে গণহয়রানি, নির্যাতন ও ঘেরাও-তল্লাশী বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে উক্ত চার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘গত ৩০ আগস্ট রাত থেকে রামগড়, মাটিরঙ্গা, মানিকছড়ি ও লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বিস্তীর্ণ পাহাড়ি এলাকায় একযোগে অপারেশন চালানো হচ্ছে। উক্ত এলাকায় সম্প্রতি ভূমি বেদখলের বিরুদ্ধে সাধারণ পাহাড়িরা সংগঠিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার পর ভীতি-সন্ত্রাস সৃষ্টি ও তাদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধকে দুর্বল করে দেয়ার লক্ষ্যে এই অপারেশনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।’
বিবৃতিতে দৃষ্টান্ত হিসেবে হয়রানি ও নির্যাতনের কিছু ঘটনা উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘গত সোমবার রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়নের কালাপানি গ্রামে মৃত নীল মোহন চাকমার ছেলে শান্তি চাকমা (বয়স ৭০), মৃত কামিনী মোহন চাকমার ছেলে গোপাল চন্দ্র চাকমা (৭৫) ও মৃত মঙ্গল ধন চাকমার বিধবা স্ত্রী গুলচোঘী চাকমা (৫০)-এর বাড়ি ঘেরাও করে তল্লাশী চালানো হয়েছে ও বাড়ির লোকজনকে হয়রানি করা হয়েছে।
‘এরপর গত মঙ্গলবার রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়নের হাচুক পাড়া ও কুমারী পাড়ায় ৭টি বাড়িতে তল্লাশী, গ্রামবাসীদের হয়রানি ও শান্তা ত্রিপুরা (৪২) ও নাকাপা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র অজিত ত্রিপুরাকে (১৬) মারধর করা হয়েছে।
‘গতকাল (মঙ্গলবার) ভোর রাতে গুইমারার নুয়্যপাড়ায় ইউপিডিএফের কর্মী নাফা মারমাসহ পাঁচ পাহাড়ির বাড়ি ঘেরাও করে তল্লাশী ও বাড়ির লোকজনকে হয়রানি করা হয়েছে।
‘অপর এক ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে মাটিরাঙ্গার হরিধন মগপাড়ায় বৌদ্ধ মন্দিরে ভিক্ষুর সেবায় নিয়োজিত দুই ব্যক্তি চাঅং মারমা (১৫) ও ম্রালাঅং মারমাকে (১৬) জিজ্ঞাসাবাদের নামে হয়রানি করা হয়।’
অপারেশনের নামে নিরীহ লোকজনকে হয়রানি-নির্যাতন ও বাড়িঘরে তল্লাশীকে দেশের সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী আখ্যায়িত করে চার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ভূমি বেদখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা কোন অপরাধ হতে পারে না। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িরা তাদের জমি নিয়ে সুখে শান্তিতে বাস করতে চায়। সরকারের দায়িত্ব ভূমি বেদখল প্রতিরোধ করা ও ভূমি বেদখলকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কিন্তু সরকার বার বার সেটা করতে ব্যর্থ হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বেদখলের ঘটনা বেড়ে চলেছে।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি থুইক্যচিং মারমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি মাইকেল চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি সোনালী চাকমা।
———————-
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।