রামগড়ের শনখোলা পাড়ায় পাহাড়িদের উপর সেটলার হামলার ৬ বছর

0

Ramgarh-settler-hamla-picture-1-294x300খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।। আজ ১৭ এপ্রিল রামগড় উপজেলার শনখোলা পাড়া (বর্তমানে গুইমারা উপজেলার আ্ওতাভুক্ত) ও মানিকছড়ি উপজেলার মহামুনি পাড়ায় সেটলার বাঙালি কর্তৃক পাহাড়িদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলার ৬ষ্ঠ বার্ষিকী। ২০১১ সালের এদিন ভূমি বেদখলকে কেন্দ্র করে সেটলাররা রামগড়ের শনখোলা ও মানিকছড়িতে ৬টি পাহাড়ি গ্রামে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৯৪টি বাড়ি ও একটি বৌদ্ধ বিহার পুড়ে ছাই করে দেয়, ব্যাপক লুটপাট চালায় এবং জালিয়া পাড়ায় যাত্রীবাহী বাসে হামলা চালিয়ে পাহাড়ি যাত্রীদের মারধর করে রক্তাক্ত করে। এ হামলায় আশীষ চাকমা নামে এক ছাত্র নিঁখোজ হয়ে যায়।

সেদিন সকালে সেটলাররা সংঘবদ্ধভাবে শনখোলা পাড়ায় পাহাড়িদের জমিতে ঘর তুলতে যায়। তারা কয়েকটি ঘরও নির্মাণ করে ফেলে। পাহাড়িরাও সংঘবদ্ধভাবে এর প্রতিবাদ করলে সেটলাররা তাদের ওপর হামলা চালাতে উদ্যত হয়। এ সময় পাহাড়িরা তাদের প্রতিরোধ করলে তা সংঘর্ষের রূপ নেয়। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। আহতদের মধ্যে পরে তিনজন সেটলার মারা যায়।

এ ঘটনার পর সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহায়তায় সেটলাররা দুপুর ১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত উত্তর শনখোলা পাড়া , সলুডং পাড়া, রেম্রং পাড়া, তৈকর্মা পাড়া, পদাছড়া ও মানিকছড়ির মহামুনি পাড়ায় হামলা চালিয়ে ৯৪টি বাড়ি ও দাইমা সুখা বৌদ্ধ বিহার পুড়ে ছাই করে দেয়।

হামলাকারী সেটলাররা জালিয়া পাড়ায় যাত্রীবাহী বাস আটকিয়ে পাহাড়ি যাত্রীদের ব্যাপক মারধর করে। এ সময় সেখানে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকলেও তারা যাত্রীদের রক্ষায় এগিয়ে আসেনি।

সেটলারদের হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয় ১৩ বছরের শিশু মিপ্রু মারমা, গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জ্যোতি রঞ্জন চাকমা সহ আরো অনেকে। পরে মিপ্রু মারমার রক্তাক্ত ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনার ভয়াবহতা প্রকাশ পায়।

সন্ধ্যার দিকে সেটলাররা লাশ নিয়ে মিছিল শেষে মানিকছড়ি উপজেলা সদরের মহামুনি পাড়ায় পাহাড়িদের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং আরো কয়েকটি স্থানে দোকানপাট ও ঘরবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।

এ হামলায় চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি ফেরার পথে জালিয়া পাড়া থেকে নিঁখোজ হয়ে যায় আশীষ চাকমা। সেটলাররা তাকে গুম করে ফেলে। আজ পর্যন্ত তার কোন খোঁজ মিলেনি। সে চট্টগ্রামের শ্যামলী আইডিয়াল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র ছিল।

হামলার ৬ বছর অতিক্রান্ত হলেও হামলাকারী সেটলারদের বিরুদ্ধে তেমন কোন দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। উপরন্তু এখনো সেটলাররা পাহাড়িদের উপর নানা হুমকিমূলক আচরণ করে চলেছে। তারা নানাভাবে পাহাড়িদের জায়গা-জমি বেদখলের চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে বলে এলাকার পাহাড়িরা অভিযোগ করেছেন।
———————–
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More