রামগড়ে ভোররাতে ঘরে ঘরে সেনা তল্লাশি!
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের গুজাপাড়ায় আজ ৯ মে শুক্রবার ভোররাতে ঘরে ঘরে সেনা তল্লাশির খবর পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, মানিকছড়ি উপজেলার বাটনাতলী ক্যাম্প হতে জনৈক সুবেদারের নেতৃত্বে ১১ জনের একদল সেনা শুক্রবার ভোররাত আনুমানিক ৪টার সময় গুজাপাড়ায় হানা দেয়। এ সময় সেনারা প্রথমে মিংক্রই ত্রিপুরা (৬০) পিতা মৃত মহিষচন্দ্র ত্রিপুরার বাড়িতে গিয়ে বাড়ি ঘেরাও করে এবং তাকে ঘুম থেকে তুলে বাড়ির বাইরে নিয়ে এসে তাদের সাথে যেতে বাধ্য করে। সেনারা তাকে সন্ত্রাসী ধরার জন্য তাদের যেতে হবে বললে তিনি ‘ আমি বৃদ্ধ মানুষ, তাই যেতে পারবো না’ বলে সেনাদের জানিয়ে দেন। পরে সেনারা তাকে বন্দুক তাক করে তাদের সাথে যেতে বাধ্য করে। বাড়ি থেকে আনুমানিক ৫০০ গজ দূরে যাওয়ার পর তিনি সেনাদের ফাকিঁ দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন।
এরপর সেনারা জ্ঞানেন্দ্র ত্রিপুরা(৫০) পিতা থুঅংগ্য ত্রিপুরা’র বাড়ি ঘেরাও করে একইভাবে তাকেও বন্দুক তাক করে রেইনকোট পরিয়ে দিয়ে তাদের সাথে যেতে বাধ্য করে। বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ গজ যাওয়ার পর তিনি ‘যেতে পারবো না’ বলে সেনাদের অনুরোধ করলে সেনারা পা দিয়ে লাথি মেরে সেখান থেকে তাকে ছেড়ে দেয়। পরে সেনারা দক্ষিণ গুজাপাড়ার বাসিন্দা বীর কুমার চাকমা (৭৫) পিতা মৃত রমনী মোহন চাকমা, তার ছেলে গুজা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক চন্দ্র কেতু চাকমা ও মালা চাকমা নামে এক বিধবা নারীর বাড়িতে ব্যাপক তল্লাশি চালায় ও জিনিসপত্র তছনছ করে দেয়। সেনারা প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে সেখানে অবস্থান করে তল্লাশি ও লোকজনকে হয়রানি করেছে বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন। ব্যাপক তল্লাশির পরও কোন সন্ত্রাসীকে ধরতে না পেরে এবং অবৈধ কোন কিছু না পেয়ে সকাল ৭টার দিকে সেনারা ক্যাম্পে ফিরে যায়।
এলাকাবাসী অভিযোগ, প্রায় সময়ই সেনা সদস্যরা সন্ত্রাসী খোঁজার নামে রাতে-বিরাতে নিরীহ লোকজনের বাড়িঘরে তল্লাশি ও হয়রানি করে থাকে। অনেক সময় অস্ত্র গুজে দিয়ে সন্ত্রাসী সাজিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। যার ফলে এলাকার লোকজনকে ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে দিনযাপন করতে হয়। তাই, অহেতুক এ ধরনের নিপীড়ন ও হয়রানি বন্ধ করার জন্য এলাকাবাসী সরকার ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
——————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।