রিপন চাকমা ও সুনীল ত্রিপুরাকে অন্যায়ভাবে আটকের প্রতিবাদে ঢাকায় পিসিপি’র বিক্ষোভ
ঢাকা : রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম(ডিওয়াইএফ)-এর কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রিপন চাকমা ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক সুনীল ত্রিপুরাকে অন্যায়ভাবে আটকের প্রতিবাদে ও তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পিসিপি ঢাকা শাখা।
“ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় পরিকল্পিত ধরপাকড় বন্ধ কর” এই শ্লোগানে আজ রবিবার (৩ জুন ২০১৮) বিকাল ৪:২০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পিসিপি ঢাকা শাখার সভাপতি রিয়েল ত্রিপুরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, ইউপিডিএফ’র সংগঠক প্রতীম চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা ও প্রবাসী শ্রমজীবী ফ্রন্টের আদমজী শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তি বাবু চাকমা। পিসিপি ঢাকা শাখার নেতা শুভাশীষ চাকমা সমাবেশে সঞ্চালনা করেন।
সমাবেশে ফয়জুল হাকিম বলেন, সাভারের আশুলিয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের জেএসএস সংস্কারপন্থী গ্রুপের লোকজন তাদেরকে রাঙামাটির নান্যাচরে দুর্বৃত্তদের হামলায় শক্তিমান চাকমা নিহত হওয়ার মামলায় মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জড়িয়ে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিয়েছে। তিনি দুই নেতাকে আটকের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা রকম ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে যা ঘটছে সেটাও আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই ঘটছে। তিনি বলেন, ইউপিডিএফ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন এবং গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম– এ ধরনের বিভিন্ন সংগঠন যারা গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে জাতিসত্তার জনগণের সংগ্রামের সাথে যেমন রয়েছে, তেমনি সারা দেশের জনগণের সংগ্রামের সাথে, গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সাথে তারা যুক্ত রয়েছে। তিনি অবিলম্বে রিপন চাকমা, সুনীল ত্রিপুরাসহ আরো যাদের আটক করা হয়েছে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
তিনি পার্বত্যাঞ্চলের জনগণের জীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে বলেন, সরকার যদি এতে ব্যর্থ হয় তাহলে বুঝতে হবে সেখানে অশান্তি সৃষ্টির জন্য সরকারের মদদ রয়েছে। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অঘোষিত সেনা শাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত ১১ নির্দেশনা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সমাবেশ থেকে অন্যান্য বক্তারা ইউপিডিএফ’র উপর রাজনৈতিক দমন-পীড়ন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার যদি মনে করে নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে আটক করে আন্দোলন দমন করা যাবে তাহলে ভুল করবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ, ছাত্র সমাজ সরকারের এই অন্যায় দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে প্রস্তুত রয়েছে।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। নব্য মুখোশ বাহিনী ও সংস্কারপন্থী জেএসএস’র সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে মিঠুন চাকমাসহ এ যাবত ডজনের অধিক নেতা-কর্মীকে হত্যা করলেও এসব ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। উল্টো ইউপিডএফ’র নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে অন্যায়ভাবে আটক করে হয়রানি করা হচ্ছে।
বক্তারা অবিলম্বে রিপন চাকমা, সুনীল ত্রিপুরাসহ আটক সকল নেতা-কর্মীকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বের হয়ে পল্টন মোড় এলাকা প্রদক্ষিণ করে শেষ হয়।
উল্লেখ্য, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের একটি যৌথ সাংগঠনিক টিম গতকাল শনিবার সাভারের আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকায় সাংগঠনিক কাজে গেলে সংস্কারপন্থী জেএসএস’র ভাড়াটে দুর্বৃত্তরা শক্তিমান চাকমা হত্যা মামলার আসামি হিসেবে ফাঁসিয়ে রিপন চাকমা ও সুনীল ত্রিপুরাকে পুলিশ দিয়ে আটক করায়। আটকের পর আজ রবিবার সকালে তাদেরকে রাঙামাটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
—————-
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।