লংগদুতে পাহাড়ি ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষককে জেল হাজতে প্রেরণ
রাঙামাটি প্রতিনিধি ।। রাঙামাটির লংগদু উপজেলার আটরকছড়া ইউনিয়নে কলেজ পড়ুয়া (একাদশ শ্রেণী) পাহাড়ি ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত করল্যাছড়ি আর এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) বিকালে রাঙামাটি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বেলাল হোসেনের আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
লংগদু থানায় মামলা হওয়ার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও ৫ অক্টোবর লংগদু থানায় মামলা হয়। ভিকটিম ছাত্রীর মা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে এই মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে ছাত্রীর মা অভিযোগ করেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর নিজেদের পালিত ছাগল খুঁজতে বিদ্যালয়ের দিকে যায় তার মেয়ে। ঠিক সে সময় বিদ্যালয়ে ছিলেন প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রহিম। এ সময় মেয়েকে দেখতে পেয়ে আব্দুর রহিম লেবু নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বিদ্যালয়ের ভেতর ডাকেন। মেয়েটি সেখানে গেলে তাৎক্ষণিক সময়ে দরজা বন্ধ করে প্রধান শিক্ষক মেয়েটির শরীরে হাত দেয় এবং ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং ঘটনাটি কাউকে বললে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। পরে মেয়েটি বাড়ি ফিরলে বাসায় কারোর সাথে কথা না বলে চুপ করে করে বসে থাকে। এক পর্যায়ে মেয়েটি ঘটনার বিস্তারিত খুলে বলে।
তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠূ বিচার ও ধর্ষক আব্দুর রহিমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
মামলার পর ৬ অক্টোবর পুলিশ ভূক্তভোগী ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা করায় এবং ওই ছাত্রী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন।
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছুফিউল্লাহ (প্রশাসন) জনান, অভিযুক্ত শিক্ষক নিজে এসে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
উল্লেখ্য যে, ঘটনার কয়েকদিন পর ১ অক্টোবর ভিকটিমের পরিবার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও আটারক ছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঙ্গল কান্তি চাকমার কাছে ঘটনাটির সুষ্ঠু বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে কোন প্রতিকার না পেয়েই ভিকটিমের মা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এদিকে ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ার পরও পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি মামলা হওয়ার পরও তাকে গ্রেফতারে পুলিশের কোন পদক্ষেপ দেখা যায়নি। পুলিশের এই নিরব ভূমিকা নিয়ে এলাকার জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।